Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০৪ শনিবার, মে ২০২৪ | ২১ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

মোশাররফের মৃত্যুদণ্ডে পক্ষে সরকার, বিভক্ত পাকিস্তান

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৮ ডিসেম্বর ২০১৯, ০৫:৩৬ PM
আপডেট: ১৮ ডিসেম্বর ২০১৯, ০৫:৩৬ PM

bdmorning Image Preview


রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলায় সাবেক সামরিক শাসক পারভেজ মোশাররফের মৃত্যুদণ্ডের রায়ে বিভক্ত হয়ে পড়েছে পাকিস্তান। বিশেষ আদালতের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সেনাবাহিনী। রায়কে অবৈধ এবং অসাংবিধানিক আখ্যা দিয়েছেন দেশটির অ্যাটর্নি জেনারেল। এরমধ্যেই, মোশাররফের মৃত্যুদণ্ডকে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ বলছেন বিশ্লেষকরা।

তবে পারভেজ মোশাররফের পক্ষে আইনি লড়াইয়ের ঘোষণা দিয়েছে ইমরান খানের সরকার। ওই রায়ের বিরুদ্ধে পারভেজ মোশাররফর আপিল করলে সরকার তার পক্ষ নেবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন দেশটির অ্যাটর্নি জেনারেল আনোয়ার মনসুর।

গতকাল মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) পাকিস্তানের তিন বিচারপতির সমন্বয়ে গঠিত বিশেষ আদালতের একটি বেঞ্চ সাবেক প্রেসিডেন্ট পারভেজ মোশাররফের মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণা করেন। এর পরপরই জরুরি বৈঠক ডেকে বিবৃতি দেয় পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী।

সামরিক বাহিনী জানায়, বিশেষ আদালতের রায়ে সংবিধান এবং আত্মরক্ষার মৌলিক অধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে। সামরিক বাহিনী, পাকিস্তানের সংবিধান অনুযায়ী ন্যায়বিচার প্রত্যাশা করে বলেও এক বিবৃতিতে জানানো হয়।

পাকিস্তান আইএসপিআর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আসিফ গফুর বলেন, 'সেনা প্রধান, জয়েন্ট চিফ অব স্টাফ কমিটির চেয়ারম্যান, প্রেসিডেন্টের দায়িত্বসহ বহু গুরুত্বপূর্ণ পদে ৪০ বছর দেশের সেবা করেছেন পারভেজ মোশাররফ। দেশ রক্ষায় সংগ্রামী একজন মানুষ, নিশ্চিতভাবে কখনোই বিশ্বাসঘাতক হতে পারেন না। আদালতের রায়ে পাকিস্তান সামরিক বাহিনী ব্যথিত এবং উদ্বিগ্ন।'

সামরিক বাহিনীর পর আজ বুধবার মোশাররফরে পাশে থাকার ঘোষণা দিলো দেশটির সরকার।

গতকাল রায় হওয়ার পর মধ্যরাতে পাকিস্তানের অ্যাটর্নি জেনারেল আনোয়ার মনসুর ও প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিশেষ তথ্য সহকারী ডা. ফিরদৌস আশিক আওয়ান এক যৌথ সংবাদ সম্মেলন ডাকেন। সেখানে অ্যাটর্নি জেনারেল আনোয়ার মনসুর বলেন, আমি এ মামলায় আইনের পক্ষে লড়াই করবো, কোনো ব্যক্তির জন্য নয়।

তিনি আরও বলেন, বিশেষ আদালতের এই মামলায় সাবেক প্রেসিডেন্ট মোশাররফকে সুষ্ঠু বিচার পাওয়ার অধিকার দেয়া হয়নি। তারপর তার অনুপস্থিতিতে অভিযুক্তের কোনো বক্তব্য বা বিবৃতি না নিয়েই রায় ঘোষণা করা হয়েছে। মোশাররফ যখন দেশের বাইরে আইসিইউতে ভর্তি তখন তাড়াহুড়ো করে রায়ের বিষয়টি নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।

ইমরান খান সরকারের প্রধান এই কৌঁসুলি বলেন, রাষ্ট্রদ্রোহের অপরাধে কাউকে শাস্তি প্রদান নিয়ে কোনো প্রশ্ন ওঠার সুযোগ নেই। কিন্তু এ মামলায় সংবিধানের অধীনে সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করা হয়নি। একটি বিচার প্রক্রিয়া শুধু সুষ্ঠু হওয়াই উচিত নয় একই সঙ্গে তা যে সুষ্ঠু হচ্ছে এটা দৃশ্যমান হওয়াও উচিত।

তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় মোশাররফের মৃত্যুদণ্ডের রায় গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।

রাজনীতি বিশ্লেষক মুখতার আহমেদ বলেন, ‘রাষ্ট্রদ্রোহিতা, বেনজির ভুট্টো হত্যা মামলা, নওয়াজ শরিফের করা আরো কয়েকটি মামলার আসামী পারভেজ মোশাররফ। আদালত মোশাররফকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন- আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় এটি নিশ্চিতভাবে গুরুত্বপূর্ণ পদেক্ষপ। কিন্তু কথা হচ্ছে- মোশাররফকে কে ফিরিয়ে আনবে। কে তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করবে।’

১৯৯৯ সালে নওয়াজ শরিফকে হটিয়ে ক্ষমতা নেন জেনারেল পারভেজ মোশাররফ। ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করার জন্য ২০০৭ সালে সংবিধান স্থগিত করে জরুরি অবস্থা জারি করেন। তীব্র বিক্ষোভের মুখে, অভিশংসনের ভয়ে ২০০৮ সালে পদত্যাগ করলেও, সংবিধান স্থগিতের অভিযোগে করা রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলায় মঙ্গলবার মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত হন পারভেজ মোশাররফ।

Bootstrap Image Preview