Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০৩ শুক্রবার, মে ২০২৪ | ১৯ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

হোটেল বয় থেকে ধনকুবের যুবলীগ নেতা

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৭ ডিসেম্বর ২০১৯, ০৭:১৮ PM
আপডেট: ১৭ ডিসেম্বর ২০১৯, ০৭:১৮ PM

bdmorning Image Preview


গৃহিনী আয়েশা আক্তার সুমা ওরফে সোমার নামে রাজধানীর পল্টনের ২৯৩ শতাংশ জমির উপর সাত তলা বাড়ি, এছাড়া তার আয়কর নথি পর্যালোচনায় আরো তিন কোটি ৯৫ লাখ টাকার স্থাবর সম্পদের তথ্য পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তবে বাস্তবে এসব সম্পদের মূল্য বহুগুণ বেশি। তিনি ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সাবেক নির্বাহী কমিটির সদস্য জাকির হোসেনের স্ত্রী।

মঙ্গলবার দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বাদী হয়ে সোমার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রনব কুমার ভট্টাচার্য্য বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এজাহার সূত্রে আরো জানা যায়, আয়েশা আক্তার সুমা ওরফে সোমা একজন গৃহিণী হয়েও বিভিন্ন অবৈধ পন্থায় নামে-বেনামে বিপুল পরিমাণ সম্পদ অর্জন করেছেন। বস্তুতঃ এসব সম্পদের অর্থের উৎস তার স্বামী।

অনুসন্ধানে প্রাপ্ত তথ্যাদি পর্যালোচনায় সুমার নামে তিন কোটি ৯৫ লাখ ৬২ হাজার ৭৮৮ টাকার স্থাবর এবং ৬৫ লাখ টাকার অস্থাবর সম্পদের হিসাব পাওয়া গেছে। অর্থাৎ মোট চার কোটি ৬৩ লাখ ১৩ হাজার ৩০০ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদের অভিযোগে দুদক আইন ২০০৪ এর ৭(১) ধারায় মামলাটি দায়ের করা হয়।

ওই এজাহারে বলা হয়েছে, অনুসন্ধানের সময় বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) থেকে পাওয়া তথ্যমতে, দেশের বিভিন্ন ব্যাংকে চলতি, সঞ্চয়ী ও এফডিআর হিসাবে চার কোটি ৬৪ লাখ আট হাজার টাকা জমা আছে।

এর আগে জাকির হোসেনের নামে সাড়ে পাঁচ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদের হিসাব পাওয়ায় ১৩ নভেম্বর দুদক মামলা করে।

২০১৮-১৯ কর বর্ষে তিনি তার আয়কর নথিতে ৮৪ লাখ ৯৫ হাজার টাকার সম্পদের তথ্য দিয়েছেন। কিন্তু দুদকের অনুসন্ধানে তার সর্বমোট পাঁচ কোটি ৪৯ লাখ তিন হাজার টাকা অর্জনের সুনির্দিষ্ট কোনো উৎস পাওয়া যায়নি।

তার সম্পদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- রাজধানীর পুরানা পল্টন ও বিজয়নগরে তিনটি বাড়ি, শান্তিনগর, সেগুনবাগিচা, বিজয়নগর ও সিদ্ধেশ্বরী এলাকায় ২৮টি ফ্ল্যাট ও গাজীপুরের কোনাবাড়ীতে আছে ১০০ কাঠা জমি। কাকরাইলের ভূঁইয়া ট্রেড সেন্টারের যে ভবনটিকে যুবলীগ নেতা ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট তার কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার করতেন ওই ভবনের চতুর্থ তলাও জাকিরের কেনা। সেখানেই প্রথম সম্রাট তার অফিস করতেন। পরে ওই ভবনের অন্য তলাগুলোও দখলে নেওয়া হয়।

জাকির হোসেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের নির্বাহী কমিটির সদস্য।

জানা যায়, ১৯৭৪ সালে বাস্তুহারা জাকিরের পরিবার বরিশাল ছেড়ে ঢাকায় চলে আসে। ঢাকায় তাদের ঠিকানা হয় ডেমরার চনপাড়া বস্তি। ওই বস্তিতে বেড়ে ওঠেন জাকির।

১৯৯১ সালের দিকে জাকির কাকরাইল এলাকায় পায়েল নামে একটি রেস্টুরেন্টে দৈনিক ৩০ টাকা বেতনে গ্লাস বয়ের কাজ নেন। এক বছর পর গ্লাস বয়ের কাজ ছেড়ে মাসে দুই হাজার টাকা বেতনে চাকরি নেন কাকরাইলের ফরিদপুর ম্যানসনের তৃতীয় তলায় ‘টনি ফিল্ম’ প্রতিষ্ঠানের পিয়ন হিসেবে। ওই সময় আওয়ামী লীগ ঘরানার নেতাকর্মীদের নিয়মিত আড্ডা ছিল কাকরাইলের ফরিদপুর ম্যানসনের নিচে ‘হোটেল ম্যারাডোনা’কে কেন্দ্র করে। সেখানেই ইসমাইল হোসেন সম্রাটের সঙ্গে পরিচয় হয় জাকিরের। এরপর তারা ধীরে ধীরে ঘনিষ্ঠ বন্ধু হয়ে ওঠেন। সম্রাট যাদের দিয়ে ক্যাসিনো ব্যবসা চালাতেন তাদের মধ্যে জাকির অন্যতম।

Bootstrap Image Preview