আজ ১৬ ডিসেম্বর। বাংলাদেশের বিজয়ের দিন। মুসলিম জীবনে বিজয়ের আনন্দ কীভাবে উদযাপিত হবে সে শিক্ষা রয়েছে মহানবী (সা.)-এর জীবনে। বিজয়ের শুকরিয়া ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে নফল নামাজ পড়া। মক্কা বিজয়ের দিন শুকরিয়া হিসেবে প্রিয়নবী (সা.) আট রাকাত নামাজ আদায় করেছিলেন। (যাদুল মায়াদ, ইবনুল কাইয়িম জাওযি রহ.)।
বিজয়ের আনন্দে বেশি বেশি আল্লাহর গুণকীর্তন করা। সুরা নাসরে সেই শিক্ষাই দেওয়া হয়েছে। আল্লাহ বলেন, ‘যখন আসবে আল্লাহর সাহায্য ও বিজয়, তখন আপনি মানুষকে দলে দলে আল্লাহর দ্বীনে প্রবেশ করতে দেখবেন।
তখন আপনি আপনার প্রভুর পবিত্রতা বর্ণনা করুন এবং তার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করুন। নিশ্চয় তিনি ক্ষমাকারী।’ (সুরা নাসর : ১-৩)
বিজয় অর্জিত হয়ে গেলে বিজিতের প্রতি মহানুভবতা প্রদর্শন নবী জীবনের অন্যতম শিক্ষা। যে জন্মশহর থেকে নবীজিকে বের করে দেওয়া হয়েছিল সে শহর যখন তিনি বিজয়ীর বেশে পদানবত করেন তখন শাস্তিপ্রাপ্ত অপরাধী ছাড়া সবাইকে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করে দিয়েছিলেন।
নবম হিজরিতে নবীজি (সা.) দশ হাজার যোদ্ধার বিশাল বাহিনী নিয়ে মক্কায় প্রবেশ করেন।
‘হাজুন’ নামক স্থানে পৌঁছে বিজয়ের পতাকা ওড়ানোর নির্দেশ দেন। তারপর সরাসরি চলে যান কাবাঘরে। পবিত্র কাবার দরজার দুই পাশের কপাটে হাত রেখে সবার উদ্দেশে এক নাতিদীর্ঘ হৃদয়গ্রাহী ভাষণ দেন।
নবীজি বলেন, ‘তোমাদের প্রতি আজ কোনো অভিযোগ নেই। যাও! তোমরা সবাই মুক্ত।’ শুধু তা-ই নয়, কাফের নেতা আবু সুফিয়ানের ঘরে যে ব্যক্তি আশ্রয় নেবে, তাকেও তিনি ক্ষমা করেন। নবীজি আরও ঘোষণা করেন, ‘যে ব্যক্তি আবু সুফিয়ানের বাড়িতে আশ্রয় নেবে, সে নিরাপদ থাকবে।’ (আর-রাহিকুল মাখতুম : ৪০৫-৪০১)।
আল্লাহ তায়ালা আমাদের বিজয়ের মাহাত্ম্য ও গুরুত্ব বোঝার তাওফিক দান করুন। আমাদের দেশ ও দেশের মানুষকে নিরাপদে রাখুন এবং ইসলামের নির্দেশ মোতাবেক জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপ ও কর্ম সম্পাদনের তাওফিক দান করুন। আমিন।