ব্যাংককের বিলাসবহুল স্পা থেকে শুরু করে ফুকেত-এর ফুটপাথ পর্যন্ত থাইল্যান্ডের প্রায় সর্বত্র দারুণ জনপ্রিয় ২ হাজার বছরের পুরনো এই ঐতিহ্য
ইউনেস্কো'র বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় স্থান করে নিয়েছে থাইল্যান্ডের জনপ্রিয় "থাই মাসাজ"। বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) কলম্বিয়ার রাজধানী বোগোতায় এক বৈঠকে বিশ্ব ঐতিহ্য হিসেবে "থাই মাসাজ"-এর নাম ঘোষণা করে জাতিসংঘের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সুরক্ষা বিষয়ক কমিটি (ইউনেস্কো)।
বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় থাই মাসাজ-এর স্থান করে নেওয়া প্রসঙ্গে বৈঠকে উপস্থিত থাইল্যান্ডের প্রতিনিধি এই ঘটনাটিকে ঐতিহাসিক বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, "এর ফলে নুয়াড থাই নামে পরিচিত এই মাসাজের প্রচলন সারা বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়বে। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে থাই মাসাজের চর্চা আরও বৃদ্ধি পাবে।"
ভারতে উৎপত্তি হলেও থাইল্যান্ডে শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে ঐতিহ্যবাহী এই থাই মাসাজ-এর চর্চা হয়ে এসেছে। বিংশ শতাব্দীর '৬০-এর দশকে এটি বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয়তা পেতে শুরু করে। এই সময়ে সারা বিশ্বের মাসাজ থেরাপিস্টদের থাই মাসাজ-এর প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য রিক্লাইনিং বুদ্ধা স্কুল খোলা হয়। ওয়াট ফো মন্দিরের ভিতরে অবস্থিত রিক্লাইনিং বুদ্ধা স্কুল এখনও পর্যন্ত প্রায় ২ লাখ শিক্ষার্থীকে এই মাসাজ এর উপর প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।
ব্যাংককের বিলাসবহুল স্পা থেকে শুরু করে ফুকেত-এর ফুটপাথ পর্যন্ত থাইল্যান্ডের প্রায় সর্বত্র দারুণ জনপ্রিয় ২ হাজার বছরের পুরনো এই ঐতিহ্য। হাজার হাজার ডলার থেকে শুরু করে ৫ ডলার পর্যন্ত খরচে মিলতে পারে এই সেবা।
তবে, সবচেয়ে আকর্ষণীয় হলো এই পেশায় নিয়োজিতদের নিষ্ঠা। জানা যায়, থাইল্যান্ডে এমন অনেককে পাওয়া যাবে যারা বংশ পরম্পরায় থাই মাসাজের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন। তাদের কাছে এটি বংশ পরম্পরায় চলে আসা এক প্রাচীন জ্ঞানের চর্চা।
তবে, থাইল্যান্ডের গণ্ডি পেরিয়ে এই মাসাজ এখন বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। বর্তমানে বিশ্বের ১৪৫টি দেশে থাই মাসাজের প্রচলন রয়েছে। এই বিশেষ ধরনের মাসাজে আঙুল, কনুই, হাঁটু ও পায়ের সাহায্যে ডিপ স্ট্রেচিং ও বডি ট্যুইস্টিং করা হয়। এর মাধ্যমে শরীরের বিভিন্ন আকুপাংচার পয়েন্টে চাপ পড়ে যাতে শরীরের রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পায়। মাংসপেশির যন্ত্রণা সারাতে এই মাসাজ খুবই উপকারি।