Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০৪ শনিবার, মে ২০২৪ | ২১ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

হলি আর্টিজান মামলার রায় ঘিরে নিরাপত্তাবলয়ে আদালতপাড়া

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৭ নভেম্বর ২০১৯, ০৯:২৭ AM
আপডেট: ২৭ নভেম্বর ২০১৯, ০৯:৩৩ AM

bdmorning Image Preview


রাজধানীর গুলশানে হলি আর্টিজান মামলার রায় ঘিরে নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দেয়া হয়েছে আদালতপাড়া। এ উপলক্ষে কোর্ট হাজতের আশপাশের স্পর্শকাতর স্থান ও ভবনগুলোয় নেয়া হয়েছে নিশ্ছিদ্র নিএরাপত্তা ব্যবস্থা। পুরো আদালতপাড়ার সব সিসিটিভি সচল করা।এছাড়া আদালতপাড়া নজরদারি ও তদারকি করার জন্য ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার কৃষ্ণপদ রায়কে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি আদালতের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সকল আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সতর্ক করে বার্তা দেয়া হয়েছে।

বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মজিবুর রহমান এই রায় ঘোষণা করবেন।

২০১৬ সালের ১ জুলাই গুলশানের ওই রেস্তোরাঁয় ১৭ বিদেশিসহ ২০ জনকে গলাকেটে ও গুলি করে হত্যা করে নব্য জেএমবি জঙ্গিরা। হামলা ঠেকাতে গিয়ে নিহত হন দুই পুলিশ কর্মকর্তা। পরে কমান্ডো অভিযানে হামলাকারী হিসেবে চিহ্নিত ৫ তরুণের সবাই মারা পড়েন। ওই ঘটনায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে গুলশান থানায় একটি মামলা করে পুলিশ।

হলি আর্টিজান হামলার মামলায় গ্রেফতার ৮ জঙ্গি হলো- জাহাঙ্গীর আলম ওরফে রাজিব গান্ধী, রাশেদ ওরফে র‌্যাশ, রাকিবুল ইসলাম রিগ্যান, মিজান ওরফে বড় মিজান, হাদিসুর রহমান সাগর, সোহেল মাহফুজ ওরফে হাতকাটা মাহফুজ, শরিফুল ইসলাম খালেদ ও মামুনুর রশীদ।

এ মামলায় আসামিদের মধ্যে বিভিন্ন জঙ্গি আস্তানায় অভিযানে নিহত হয় ৮ জন। তারা হলো- তামিম আহমেদ চৌধুরী, নুরুল ইসলাম মারজান, তানভীর কাদেরী, মেজর (অব.) জাহিদুল ইসলাম ওরফে মুরাদ, রায়হান কবির তারেক, সারোয়ান জাহান মানিক, বাশারুজ্জামান ওরফে চকলেট ও মিজানুর রহমান ওরফে ছোট মিজান।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) যুগ্ম কমিশনার ও সিটিটিসির প্রধান মনিরুল ইসলাম বলেছেন, হলি আর্টিজানে হত্যাযজ্ঞ মামলার রায় ঘিরে আদালতপাড়াসহ গোটা রাজধানীকে নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দেয়া হয়েছে। র‌্যাব, গোয়েন্দাসহ সব সরকারি সংস্থার সকল কর্মকর্তা ও মাঠপর্যায়ের সকল অফিসারদের আদালতপাড়া এবং পুরনো ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ ভবন ও সড়কের মোড়ে মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া রাজধানীর প্রতিটি সড়কের মোড়ে এবং সরকারি ভবনের সামনে রাখা হয়েছে দাঙ্গা পুলিশের পাশাপাশি স্ট্রাইকিং ফোর্স। সঙ্গে সতর্ক পাহারায় থাকছে এপিসি, রায়ট কার, জলকামান, অ্যাম্বুলেন্স ও দমকল বাহিনীর একাধিক ইউনিট।

আদালতপাড়ার নিরাপত্তার বিষয়ে পরিদর্শনে গিয়ে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার কৃষ্ণপদ রায় সাংবাদিকদের বলেন, তিন বছর আগে ঢাকার গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে ভয়াবহ জঙ্গি হামলা মামলার রায় ঘোষণা হচ্ছে বুধবার। আলোচিত মামলাটির রায় ঘিরে বাড়তি নিরাপত্তা নিয়েছে আইন শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনী। মঙ্গলবার বিকাল থেকে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালত চত্বরে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। কোনো ধরনের নাশকতা ও  অপ্রীতিকর অবস্থা এড়াতে র‌্যাব-পুলিশের পাশাপাশি বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় নজরদারি করছে।

মঙ্গলবার দুপুরে আদালতপাড়া পরিদর্শন করেন ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মীর রেজাউল আলম ও কৃষ্ণ পদ রায়। আদালতপাড়ার বিশেষ নিরাপত্তায় লালবাগ ডিভিশন ও আদালতের ডিসি প্রসিকিউশনকে বিভিন্ন দিক নির্দেশনা দেন।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (ডিসি) মাসুদুর রহমান বলেন, এ রায়কে কেন্দ্র করে নিরাপত্তা বাড়ানোর কিছু নেই। তবে আমরা এলার্ট আছি। সাধারণত সব সময় আদালত এলাকায় আমাদের সদস্যরা থাকে। সেই তুলনায় আগের চেয়ে সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে এবং গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা মাঠে আছে।

র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার প্রধান লে. কর্নেল সারওয়ার-বিন-কাশেম বলেন, এই রায়কে ঘিরে যেকোনো ধনের অপ্রীতিকর অবস্থা এড়াতে আমাদের সদস্যরা মাঠে আছে। বিশেষ করে আদালত চত্বর ছাড়াও নিয়মিত ডিউটি হিসেবে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে আমাদের সদস্যরা কাজ করছে।

ঢাকা মহানগর আদালতের হাজতখানার ওসি মঈনুল ইসলাম বলেন, আসামিদের হাজাতখানা থেকে এজলাসে আনা নেয়ার ক্ষেত্রে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করার পরিকল্পনা রয়েছে।

পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (মিডিয়া) মীর সোহেল রানা বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। পর্যাপ্ত নিরাপত্তা আয়োজন রয়েছে। তারপরও সংশ্লিষ্ট পুলিশ সদস্যদেরকে দায়িত্ব পালনে যথাযথ সতর্কতা অবলম্বন করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

র‌্যাব মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতিতে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। হামলার ঘটনার পর এখন পর্যন্ত প্রায় ৮০৯ জঙ্গিকে আটক করা হয়েছে। এর মধ্যে ২৫ জন আমাদের সঙ্গে গোলাগুলিতে নিহত হয়েছেন।

তিনি বলেন, হলি আর্টিজানে হামলার পর আমরা সকল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থা প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিত জিরো টলারেন্স নীতিতে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। শুধু অভিযান নয়, জঙ্গি নিয়ে প্রতিনিয়ত আমাদের বিভিন্ন কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

র‌্যাব প্রধান বলেন, রায়ের কথা মাথায় রেখে আমরা সর্তক অবস্থানে রয়েছি। রায়ের দিন আমাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। আমরা যতদিন প্রয়োজন মনে করব ততদিন এই নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। জঙ্গিরা যেন কোনো ধরনের ধ্বংসাত্মক কাজ না করতে পারে সেজন্য সবসময় নজরদারি রয়েছে। আমরা অনেক কাজ করি কিন্তু কখনো জঙ্গিবাদ থেকে আমাদের দৃষ্টি অন্য দিকে যায় না। 

Bootstrap Image Preview