Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৩ সোমবার, মে ২০২৪ | ৩০ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

ভালুকের লিঙ্গ খেকো ভারতীয় যুবক গ্রেফতার

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৫ অক্টোবর ২০১৯, ০৫:৪৫ PM
আপডেট: ২৫ অক্টোবর ২০১৯, ০৫:৪৫ PM

bdmorning Image Preview


ভারতের পুলিশ এক কুখ্যাত সন্দেহভাজন পশু চোরকে গ্রেফতার করতে সফল হয়েছে বলে জানিয়েছে। গ্রেফতার ব্যক্তি বিপন্ন ভারতীয় শ্লথ প্রজাতির ভালুক অবৈধভাবে শিকার করতো এবং তার যৌনাঙ্গ খেত। তার বক্তব্য ছিল এই ভালুক খুবই মহার্ঘ শিকার।

বেশ কয়েক বছর ধরে ইয়ারলিন নামের ওই ব্যক্তি পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন। ভালুক চোরা-শিকারের এই ঘটনা সম্পর্কে কর্তৃপক্ষ প্রথম সজাগ হয় যখন ভারতের এক জাতীয় পার্কে একটি মৃত ভালুকের লিঙ্গবিহীন দেহ পাওয়া যায়।

মধ্যপ্রদেশের বনবিভাগের কর্মকর্তা রীতেশ সিরোথিয়া বলেন, ইয়ারলিন পার্ধি-বেহেলিয়া নামে এক যাযাবর উপজাতি গোষ্ঠী; যারা বিশ্বাস করেন প্রাণীর লিঙ্গ খেলে যৌনশক্তি বৃদ্ধি পায়।

তবে তিনি বলেছেন, ইয়ারলিনকে ১৯ অক্টোবর গ্রেফতার করা হয়েছে পশ্চিম ভারতের গুজরাট রাজ্য থেকে। তিনি আরো বলেন, গ্রেফতারকৃত ব্যক্তি মধ্য ভারতে অবৈধ বাঘ শিকারি চক্রের অন্যতম হোতা।

মধ্য ও পশ্চিম ভারতে বাঘসহ বিপন্ন প্রজাতির বন্য প্রাণী চোরা-শিকার এবং এসব প্রাণীর দেহাংশ নিয়ে ব্যবসার বেশ কয়েকটি মামলার সঙ্গে ইয়ারলিন জড়িত বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। পুলিশের চোখ এড়াতে ওই ব্যক্তি ভিন্ন ভিন্ন পরিচয় ব্যবহার করতো।

ইয়ারলিনের বিরুদ্ধে এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। তিনি অথবা তার কোন আইনজীবী এখন পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সম্পর্কে মন্তব্য করেননি। বুধবার তাকে আদালতে হাজির করা হয় এবং পরে তাকে পুলিশি হেফাজতে নেয়া হয়েছে।

বনবিভাগের বিশেষ টাস্ক ফোর্সের প্রধান সিরোথিয়া বলেন, ‘আমরা তাকে খুঁজে বের করার এবং ধরার জন্য একটা বিশেষ সেল গঠন করেছিলাম। ছয় বছর ধরে তোকে আমরা ধরার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’ 
মধ্য প্রদেশের দক্ষিণাঞ্চলের জঙ্গলে মূলত এই পার্ধি-বেহেলিয়া উপজাতির মানুষের বসবাস। তারা মূলত শিকার করে জীবনধারণ করে। বন্যপ্রাণী শিকার ভারতে অবৈধ, এমনকী আদিবাসী বা উপজাতি গোষ্ঠীর মানুষদের জন্যও। যদিও প্রথাগত জীবনধারণের তাগিদে বা তাদের বন্য আচার পালনের জন্য গোপনে শিকার অব্যাহত রয়েছে।

ভারত সরকার বলছে, তারা বনজ সম্পদের ওপর নির্ভরশীল আদিবাসী গোষ্ঠীগুলোর জন্য বিকল্প জীবিকার ব্যবস্থা করছে। কিন্তু এসব সম্প্রদায়ের মানুষ এখনও সমাজের প্রান্তিক পর্যায়েই রয়ে গেছে এবং তাদের জীবনযাপনের ধারা বদলায়নি।

ইয়ারলিনকে প্রথম গ্রেফতার করা হয় ২০১৩ সালে। পুলিশ ওই সময় কান্হা জাতীয় পার্কে দুটি শ্লথ বা কালো ভালুকের লিঙ্গবিহীন মৃতদেহ খুঁজে পাওয়ার পর তাকে আটক করে। ভালুক দুটির দেহ থেকে যৌনাঙ্গ ছাড়া পিত্তথলিও সরিয়ে নেয়া হয়েছিল।

এক বছর কারাগারে রাখার পর তাকে জামিনে মুক্তি দেয়া হয় এবং এরপর থেকে তিনি পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন বলে পুলিশ জানিয়েছে।

ভালুকের শরীরের পিত্ত যা যকৃৎ থেকে তৈরি হয় তা সঞ্চিত থাকে তার পিত্তথলিতে। শত শত বছর ধরে ভালুকের পিত্ত চীনের প্রথাগত ওষুধে ব্যবহৃত হয়ে আসছে এবং অবৈধ আন্তর্জাতিক বাজারে ভালুকের পিত্তথলি বা পিত্তাশয় চড়া দামে বিক্রি হয়।

সিরোথিয়া বলেছেন, মহারাষ্ট্র এবং মধ্য প্রদেশ রাজ্যে ইয়ারলিনের বিরুদ্ধে ছয়টি মামলা রয়েছে। বিপন্ন প্রজাতির বন্যপ্রাণী ও বনজ সম্পদ নিয়ে আন্তর্জাতিক আইনের আওতায় তার বিরুদ্ধে এই মামলাগুলো দায়ের করা হয়েছিল। এর মধ্যে তিনটি মামলায় তার বিরুদ্ধে বাঘ চোরা শিকারের অভিযোগ রয়েছে। বিবিসি বাংলা।

Bootstrap Image Preview