Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১২ রবিবার, মে ২০২৪ | ২৯ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

পাক-ভারত যুদ্ধে জড়ালে বিশ্বকে ভুগতে হবে, ইমরানের হুঁশিয়ারি

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১০:০৬ AM
আপডেট: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১০:০৬ AM

bdmorning Image Preview


ভারতীয় সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে ভূস্বর্গ খ্যাত জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিলের ফলে অঞ্চলটিতে ইতোমধ্যে এক থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। যা নিয়ে সৃষ্ট উত্তেজনাকর পরিস্থিতির মধ্যে এবার দেশটির সঙ্গে আসন্ন যুদ্ধের জন্য বিশ্ব নেতাদের প্রতি হুঁশিয়ারি দিয়েছেন প্রতিবেশী পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান।

তিনি বলেন, 'আমি সম্পূর্ণ বিরুদ্ধে। তবে শেষ পর্যন্ত পরমাণু শক্তিধর এই দেশ দুটি পরস্পরের বিরুদ্ধে যুদ্ধে জড়ালে গোটা বিশ্বকেই এর ফল ভোগ করতে হবে।' শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৪তম অধিবেশনে দেওয়া বক্তব্যে পাক প্রধানমন্ত্রী এমন মন্তব্য করেন। 

সূত্রের বরাতে পাক গণমাধ্যম 'দ্য ডন' জানায়, জাতিসংঘ অধিবেশনে দীর্ঘ ১৫ মিনিটের বেশি সময় যাবত ভাষণ দেন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। যেখানে অধিকাংশ সময়ই তিনি ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু ও কাশ্মীরের স্বায়ত্তশাসন বাতিলসহ অঞ্চলটিতে ভারতীয় নীতির তীব্র সমালোচনা করেন।

ইমরান তার বক্তব্যে বলেন, 'পরমাণু ক্ষমতাধর দেশগুলোর মধ্যে যদি প্রচলিত যুদ্ধ শুরু হয় তাহলে এর চেয়ে প্রায় সাতগুণ ছোট একটি দেশের সামনেও দুইটি বিকল্প থাকে। হয় দ্রুত আত্মসমর্পণ; নয়ত শেষ অবধি লড়াই করে যাওয়া। যখন কোনো পারমাণবিক শক্তিধর দেশ শেষ পর্যন্ত যুদ্ধ অব্যাহত রাখে তখন এর পরিণাম দ্রুতই মানচিত্রের সীমানা অতিক্রম করে।'

তিনি বলেন, 'পরমাণু শক্তিধর সেই দুই দেশের লড়াই স্বভাবতই গোটা দুনিয়ার ওপর প্রভাব বিস্তার করে। তখন সমগ্র বিশ্বকে এর ফল ভোগ করতে হয়।'

পাক প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, 'বর্তমানে এটি জাতিসংঘের জন্য একটি বিরাট পরীক্ষা। কেননা এক সময় এই সংস্থাই কাশ্মীরি জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকারের গ্যারান্টি দিয়েছিল। তাই এখন আর কোনো আত্মতুষ্টিতে না ভুগে বরং যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের সময় এসেছে।' 

ইমরানের ভাষায়, 'এর জন্য সর্বপ্রথম ভারতকে তাদের দখলকৃত কাশ্মীরের ওপর আরোপিত কারফিউ তুলে নিতে হবে। এমনকি দ্রুত সব বন্দিদের মুক্তি দিতে হবে। তাছাড়া আন্তর্জাতিক মহলকে পর্যন্ত অবশ্যই উপত্যকাটির আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার প্রধান করতে হবে।'

এ দিকে চলমান কাশ্মীর সংকট নিরসন ইস্যুতে ওয়াশিংটনের দাবি, যুক্তরাষ্ট্র দ্রুত কাশ্মীরের ওপর আরোপিত বিধিনিষেধ প্রত্যাহার চায়। মূলত পাকিস্তান ও ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীদের সঙ্গে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বেশ কয়েক দফায় বিশেষ বৈঠকের পর একজন মার্কিন শীর্ষ কর্মকর্তা ওয়াশিংটনের এই মনোভাবের কথা জানিয়েছেন।

গত বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক কর্মকর্তা অ্যালিস ওয়েলস সাংবাদিকদের বলেছেন, 'আমরা দ্রুত এর বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে চাই। একই সঙ্গে পূর্বে আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেওয়া ও আটককৃতদের মুক্তিও আমাদের অন্যতম উদ্দেশ্য।'

অপর দিকে গত ৫ আগস্ট ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিলের মাধ্যমে জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করেছিল ক্ষমতাসীন মোদী সরকার। যার প্রেক্ষিতে পরবর্তীতে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হিসেবে বিতর্কিত লাদাখ ও জম্মু ও কাশ্মীর সৃষ্টির প্রস্তাবেও সমর্থন জানানো হয়।এসবের মধ্যেই চলমান কাশ্মীর ইস্যুতে পাক-ভারত মধ্যকার সম্পর্কে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। এরই মধ্যে একে একে ভারত সরকারের সঙ্গে বাণিজ্য, যোগাযোগসহ সব ধরনের সম্পর্ক ছিন্নের ঘোষণা দিয়েছে প্রতিবেশী পাকিস্তান। যদিও এমন সংকটময়

পরিস্থিতিতে ভারত পাশে পেয়েছে রাশিয়াকে এবং পাক সরকারের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের তেলসমৃদ্ধ দেশ ইরান।

ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারসহ রাজ্যের স্থানীয় প্রশাসন সেখানকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক বলে জানানো হলেও; কাশ্মীর জুড়ে এখনো সংঘর্ষ ও গ্রেফতারের ঘটনা ঘটছে বলে দাবি পাকিস্তানের।

Bootstrap Image Preview