Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৬ বৃহস্পতিবার, মে ২০২৪ | ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

যে গ্রাম থেকে হারিয়ে যাচ্ছে অল্পবয়সি মেয়েরা

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০৬:০৭ PM
আপডেট: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০৬:০৭ PM

bdmorning Image Preview
প্রতীকী ছবি


অল্পবয়সি মেয়েরা একের পর এক আচমকা হারিয়ে যাচ্ছে গ্রাম থেকে। যেন স্রেফ উবে যাচ্ছে কর্পূরের মতো। পরবর্তীতে কারও কারও খোঁজ মিললেও অনেকের ক্ষেত্রেই মিলছে না। চাঞ্চল্যকর এ ঘটনাটি ঘটছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসন্তী ব্লকের রামচন্দ্রখালি গ্রামে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম জি নিউজে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, সম্প্রতি ওই গ্রামের একটি স্কুলে পড়ানোর সময় শিক্ষক তার ছাত্রদের বলেছেন, ‘চোখ-কান খোলা রাখতে হবে। বিয়ে, চাকরি, নতুন মোবাইল বা গহনার লোভ দেখিয়ে কেউ কোথাও নিয়ে যেতে চাইলে ভুলেও রাজি হবে না।’

স্যারের এ কথা শুনেই ক্লাসে উঠে দাঁড়ায় এক মেয়ে। ‘স্যার, আমার দিদিও তো এভাবেই…!’ কথা শেষ করতে পারে না সে। জানা যায়, তার বোন সপ্তাহ তিনেক ধরে নিখোঁজ। উঠে দাঁড়ায় আরেকজন, বলে- তার পাশের বাড়ির এক বোনেরও যে হদিস মিলছে না!

এভাবেই ক্রমশ কিশোরী-শূণ্য হয়ে পড়ছে রামচন্দ্রখালি নামে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ওই গ্রামটি। অভিযোগ, পুলিশের কাছে জানিয়েও কাজের কাজ কিছু হচ্ছে না। উল্টো অনেক ক্ষেত্রেই পাচারের সঙ্গে যুক্ত এসব লোকজন বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে ভুক্তভোগী পরিবারের লোকজনের সামনেই।

নারী ও শিশু পাচার যে কত বড় সমস্যা, তা বারুইপুর পুলিশ জেলার ওয়েবসাইট খুললেই বোঝা যায়। পাচারবিরোধী প্রচারের পাশাপাশি সেখানে রয়েছে সচেতনতামূলক নানা তথ্য। প্রশ্ন উঠেছে, এত কিছুর পরও পুলিশের বিরুদ্ধে এত অভিযোগ কেন?

এ বিষয়ে বারুইপুর পুলিশ সুপার রশিদ মুনির খান বলেন, ‘বাসন্তী থানা এলাকা থেকে পাচার হওয়া বেশ কিছু মেয়েকে আমরা দিল্লি, তামিলনাড়ু, পাঞ্জাব, রাজস্থান থেকে উদ্ধার করেছি। সেখানকার যৌনপল্লীতে পাচার করে দেওয়া হয়েছিল তাদের। সুতরাং পুলিশ কিছু করছে না, সেই অভিযোগ ঠিক নয়।’

এদিকে রামচন্দ্রখালি গ্রামের স্কুল শিক্ষক জাফর ইকবাল ও তার সহকর্মীদের চেষ্টায় পাঁচ বছর আগে বাড়ি ফিরতে পেরেছিল পাচার হয়ে যাওয়া ওই গ্রামেরই আবিদা লস্কর (নাম পরিবর্তিত)। তবে তার মাস কয়েকের মধ্যেই হেপাটাইটিস-বি রোগে ভুগে মারা যায় যৌনপল্লীতে পাচার হওয়া আবিদা। তাকে বাঁচাতে না পারার কষ্ট এখনও বয়ে বেড়াচ্ছেন জাফর।

এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘বার বার হেরে যাচ্ছি আমরা। নতুন নতুন ছক করছে পাচারকারীরা। স্কুলের সামনে ফুচকাওয়ালা, আচারওয়ালাদেরও চর হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে বিভিন্ন জায়গায়। বাইরে থেকে আসা মোটরসাইকেল চড়া ছেলেরা তাদের থেকে তথ্য সংগ্রহ করছে।’

জাফর জানান, শুরুর দিকে পাচারকারীরা বেশ কিছু টাকাও খরচ করছে। হয়তো দামি মোবাইল বা একটা গহনা উপহার দিলো মেয়েটিকে। মেয়েটি ভাবলো, ভাল না বাসলে এমন উপহার দেবে কেন? ওই ভাবনাই কাল হয় তার। ১০ হাজার টাকার মোবাইল পেয়ে দুই লাখে বিক্রি হয় সে। যার কিছুই বুঝতে পারে না সে।

Bootstrap Image Preview