ভারতের রাজনীতিতে গরু নামের নিরীহ প্রাণীটির যে অবদান, তা নিঃসন্দেহে সে দেশের শীর্ষ নেতাদের পেছনে ফেলে দিতে পারতো। ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের পর থেকে জাতীয় রাজনীতির ক্ষেত্রে অন্যতম বড় উপকরণ হয়ে দাড়িয়েছে এই গরু। সপ্তদশ লোকসভা নির্বাচনেও বিজেপির সৌজন্যে আলোচনায় ফিরে এসেছে ‘গোমাতা’।
গত সোমবার (০২ সেপ্টেম্বর) বিজেপির বিতর্কিত নেতা সাধ্বী প্রজ্ঞা দাবি করেছেন, গোমূত্রের মাধ্যমে তার ক্যান্সার রোগ সেরে গেছে।
ব্রেস্ট ক্যান্সারের মতো মারাত্মক রোগের উপশম হয়ে গিয়েছে গোমূত্র ব্যবহার করে। ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে’কে দেয়া এই সাক্ষাৎকারে তিনি এই মন্তব্য করেন। সেসময় তাঁর এই মন্তব্যকে ঘিরে হাসির রোল উঠেছিল। আরএসএস ও বিজেপির সঙ্গে গোমূত্রের যোগসূত্র চিরন্তন বলেও কটাক্ষ করেছিলেন কেউ কেউ।
কিন্তু, দলীয় সাংসদের সেই দাবিকেই আরেকটু উস্কে দিলেন দেশটির স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের রাষ্ট্রমন্ত্রী অশ্বিনী কুমার চৌবে। জানালেন, ক্যানসারের ওষুধ তৈরিতে গোমূত্র ব্যবহারের বিষয় নিয়ে আয়ুষ মন্ত্রণালয়গুরুত্ব সহকারে কাজ করছে।
শনিবার তামিলনাড়ুর কোয়েম্বাটোরে সাংবাদিকের মুখোমুখি হয়ে কেন্দ্রীয়মন্ত্রী বলেন, ‘বেশ কয়েকটি ধরনের ওষুধ তৈরিতে গোমূত্র ব্যবহৃত হয়।
এটি ক্যানসারে মতো ভয়ঙ্কর রোগের চিকিৎসার জন্যও ব্যবহৃত হয়। তবে দেশীয় গরুর প্রস্রাব এই কাজে ব্যবহৃত হয়। আয়ুষ্মান ভারত যোজনার অধীনে এর উপর গুরুত্ব সহকারে কাজ হচ্ছে। কেন্দ্রীয় সরকার গরু সংরক্ষণ ও তাদের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য কাজ করছে।
ডায়াবেটিস এবং ক্যানসারের মতো অসংক্রামক রোগগুলি পুরো পৃথিবীর কাছেই একটা চ্যালেঞ্জ। আমরা এখনও এই রোগগুলি সম্পূর্ণরূপে নির্মূল করার দাবি করতে পারি না। তবে এখন আমরা এগুলিকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারি। আরও গবেষণা চলছে। খুব তাড়াতাড়ি এই বিষয়ে আমরা সফল হব বলেই আশা করছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ক্যানসারের চিকিৎসার জন্য আয়ুষ্মান ভারতকে প্রধানমন্ত্রী জন স্বাস্থ্য যোজনা (জেএআই)-এর অধীনে অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব বিবেচনা করছে। আয়ুর্বেদ, যোগব্যায়াম ও প্রাকৃতিক চিকিৎসা, ইউনানি, সিদ্ধা ও হোমিওপ্যাথির বিকল্প ওষুধের ক্ষেত্রে উন্নয়ন, শিক্ষা এবং গবেষণা করার উপরেও জোর দেওয়া হয়েছে।
তবে শুধু ভোপালের সাংসদ বা কেন্দ্রীয়মন্ত্রীই নন, গত মাসে গরু নিয়ে চাঞ্চল্যকর দাবি করেছিলেন উত্তরাখণ্ডের মুখমন্ত্রী ত্রিবেন্দ্র সিং রাওয়াতও। দেরাদুনের একটি অনুষ্ঠানে তিনি বলেছিলেন, গরুই একমাত্র পশু যে অক্সিজেন ছাড়ে। গরুর কাছাকাছি বসবাস করলে যক্ষ্মারোগের নিরাময় হয়।