Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০৭ মঙ্গলবার, মে ২০২৪ | ২৪ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

ভারতে ঢুকে পড়েছে চীনা সেনাবাহিনী, সীমান্তে জড়ো হয়েছে পাকিস্তানের ২ হাজার সেনা!

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১০:০৯ PM
আপডেট: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১০:০৯ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত


ভারতীয় ভূখণ্ডের ৬০-৭০ কিলোমিটার ভেতরে ঢুকে পড়েছে চীনের সেনাবাহিনী। তৈরি করে ফেলেছে একটি ঝুলন্ত ব্রিজও। অরুণাচল প্রদেশের বিজেপি বিধায়কের এ দাবি ঘিরে ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে ভারত-চীন সীমান্তের চাগলাগাম এলাকায়।

এদিকে ভারতীয় সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ওই এলাকায় ভারতীয় ভূখণ্ডে চীনা সেনা বা নাগরিকের উপস্থিতির কোনো প্রমাণ মেলেনি। তবু ওই এলাকায় টহলদারি জোরদার করা হয়েছে।

সম্প্রতি রাজ্যের বিজেপি সভাপতি অরুণাচল পূর্ব কেন্দ্রের সংসদ সদস্য টাপির গাও বিভিন্ন সাংবাদ মাধ্যমে দাবি করেছিলেন, চাগলাগামের ডিমারু নালার ওপর একটি ‘সাসপেনশন ব্রিজ’ নজরে এসেছে আদিবাসীদের। ঘন জঙ্গলে ঘেরা ওই এলাকার গাছ কেটে কাঠ দিয়ে ওই ব্রিজটি তৈরি করেছে চীনা সেনাবাহিনী।

দিল্লিতে সংশ্লিষ্ট সব দফতরে তিনি বিষয়টি জানিয়েছেন বলেও দাবি করেন টাপির গাও।

যেখানে ব্রিজ তৈরির কথা বলেছেন টাপির গাও, সেই ডিমারু নালা অন্জ জেলার অন্তর্ভুক্ত। জনবসতি খুব কম। রয়েছে প্রচুর পাহাড়ি ঝর্ণা ও নালা। অসংখ্য ‘ফিশ টেল’ প্রজাতির লম্বা গাছ এবং নিচে ঘন জঙ্গলে ঘেরা বলে কার্যত দুর্গম ওই এলাকা।

শিকার এবং ভেষজ উদ্ভিদ সংগ্রহ করতে জনজাতি শ্রেণির কিছু মানুষের আনাগোনা রয়েছে। তবে সেনা জওয়ানরাও রুটিন টহলদারি চালায় এসব এলাকায়।

চীন-অরুণাচল সীমান্ত ম্যাকমোহন লাইন নামে পরিচিত। লাইন অব অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোল বা ম্যাকমোহন লাইন থেকে চাগলাগামের দূরত্ব প্রায় ১০০ কিলোমিটার। চাগলাগাম থেকে আবার ডোইমুর নালার দূরত্ব ২৫-৩০ কিলোমিটার।

ফলে টাপির গাওয়ের দাবি সত্যি হলে ভারতীয় ভূখণ্ডের ৬০-৭০ কিলোমিটার অভ্যন্তরে ঢুকে পড়েছে চীনা বাহিনী। দিল্লিতে বিষয়টি জানানোর পরই এ নিয়ে কার্যত তোলপাড় পড়ে যায়। ভারতীয় সেনাসহ কেন্দ্রের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে শুরু হয় দৌড়ঝাঁপ।

এমন ঘটনায় বুধবার ভারতীয় সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে বিবৃতি দেয়া হয়। এতে বলা হয়, টাপির গাওয়ের দাবি ঠিক না। এ ধরনের কোনো অনুপ্রবেশের ঘটনা ঘটেনি।

বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে যেখানকার কথা বলা হয়েছে, সেটা ‘ফিশ টেল’ এলাকা। অন্যান্য কয়েকটি এলাকার মতো ওই এলাকাতেও সীমান্ত নিয়ে চীনের সঙ্গে মতপার্থক্য রয়েছে। ডিমারু নালার ওপরে যে জায়গার কথা বলা হয়েছে, সেখানে এই ধরনের কোনো ব্রিজ সেনাবাহিনীর নজরে আসেনি।

সেনাবাহিনীর বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ওই এলাকা ঘন জঙ্গলে ঢাকা। নালা-ঝোরা ও পাহাড়ি চড়াই-উৎরাইয়ে ভরা। ওই এলাকায় হেঁটে ছাড়া অন্য কোনো যানবাহনে চলাফেরা করা সম্ভব নয়।

যেহেতু সীমান্ত নিয়ে বিতর্ক রয়েছে, তাই ভারত এবং চীন দুদেশের সেনা জওয়ানরাই বর্ষাকালে টহলদারির জন্য নালাগুলির ওপর অস্থায়ী ব্রিজ তৈরি করে। তবে এটা নিশ্চিত যে চীনের সেনা বা কোনো নাগরিকের স্থায়ী উপস্থিতি ওই এলাকায় পাওয়া যায়নি। তবু কড়া নজরদারি রয়েছে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে।

এদিকে কাশ্মীর সঙ্কট ঘিরে ভারতের সঙ্গে তীব্র উত্তেজনার মাঝে পাক অধিকৃত কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণ রেখার একেবারে কাছে অন্তত এক ব্রিগেড সেনা সদস্য জমায়েত করেছে পাকিস্তান সেনাবাহিনী।

পাক অধিকৃত কাশ্মীর সীমান্তের বাঘ এবং কোটলি সেক্টর ঘেঁষে প্রায় ২ হাজার পাক সেনা সদস্যের উপস্থিতিকে গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে ভারতীয় সেনাবাহিনী।

ভারতীয় সেনাবাহিনী বলছে, একটি শান্তিপূর্ণ অবস্থান থেকে ওই সেনাদের সীমান্তে নিয়ে এসেছে পাকিস্তান সেনাবাহিনী। এই মুহূর্তে তারা নিয়ন্ত্রণ রেখার ৩০ কিলোমিটার এলাকায় অবস্থান করছে।

দেশটির বার্তাসংস্থা এএনআইকে ভারতীয় সেনাবাহিনীর সূত্রগুলো বলছে, বর্তমানে এ সেনাদের আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে মোতায়েন করেনি পাক সেনাবাহিনী। তবে ভারতীয় সেনাবাহিনী পাক সেনাদের গতিবিধি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে।

ওই সূত্র বলছে, সীমান্তের পাকিস্তান সেনাবাহিনী সেনা সদস্যদের এমন এক সময় জড়া করেছে; যখন পাকিস্তানে লস্কর-ই-তৈয়বা এবং জয়েশ-ই-মোহাম্মদের মতো জঙ্গিগোষ্ঠীগুলোতে স্থানীয় এবং আফগান তরুণদের দলে টানার কাজ চলছে।

সীমান্তে পাকিস্তান সেনাবাহিনী যে সেনা সদস্যদের নিয়ে এসেছে তাদের পরিমাণ প্রায় এক ব্রিগেডের মতো। এ সদস্যদের সংখ্যা ২ হাজারের বেশি হতে পারে।

টাইমস অব ইন্ডিয়া বলছে, গত ৫ আগস্ট ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল হওয়ার পর কাশ্মীর সীমান্তে শতাধিক এসএসজি কমান্ডো মোতায়েন করেছে। ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর গোলাবর্ষণে অন্তত ১০ পাকিস্তানি এসএসজি কমান্ডো নিহত হয়েছেন। ভারতীয় সেনাবাহিনীরও বেশ কয়েকজন সদস্য পাকিস্তানের গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন।

Bootstrap Image Preview