পশ্চিমবঙ্গের এক উদীয়মান কিশোরী সাঁতারু। জাতীয় পর্যায়ে অংশ নিয়ে স্বর্ণপদকও জিতেছে সে। আর এই কিশোরীই কিনা দীর্ঘ ছয় মাস ধরে তার কোচের কাছে যৌন হেনস্থার শিকার হচ্ছিলেন। অবশেষে কোচের যৌন হেনস্থার বিষয়টি ভিডিও ধারণ করে তা সামনে আনলেন এ সাঁতারু। অভিযুক্ত কোচ ও যৌন হেনস্থার শিকার সাঁতারু পশ্চিমবঙ্গের হলেও ঘটনাটি ঘটেছে গোয়ায়।
অভিযোগকারী কিশোরী গোপনে ধারণ করা ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করে সহায়তা চান। সঙ্গে সঙ্গে ভিডিওটি ভাইরাল হয়ে যায়।
দীর্ঘ ছয় মাস ধরে যৌন হেনস্থার শিকার কিশোরী তার সঙ্গে হওয়া নির্যাতনের চিত্র তুলে ধরতে গোপনে ভিডিও করেন। ভিডিওটিতে দেখা যাচ্ছে, ঘরের একটি জায়গায় ওই কিশোরী আগে থেকেই মোবাইলে ভিডিও রেকর্ডার অন করে রেখে দিচ্ছেন। এরপর ঘরের দরজার দিকে এগিয়ে যান তিনি। খোলা দরজা দিয়ে এরপর ওই কোচকে ঢুকতে দেখা যায়। কিশোরীর ডান পায়ে ক্রেপ ব্যান্ডেজ বাঁধা। কোচ এসে প্রথমে সেই ব্যান্ডেজ বাঁধা জায়গাটা দেখলেন। তারপর কিশোরীর নানা স্পর্শকাতর স্থানে স্পর্শ করলেন। এর কিছুক্ষণ পর কোচ ঘরটি থেকে বেরিয়ে যান।
অন্য একটি ভিডিওতে ওই কিশোরী বলেন, ‘গোয়ায় আসার পর থেকেই স্যার আমার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করছিলেন। আমি প্রতিবাদ জানালে কাউকে বলতে নিষেধ করতেন। আমার ক্যারিয়ারের ভবিষ্যৎ নিয়ে ভয় দেখাতেন। আমি ভয়ে কাউকে কিছু বলতাম না। কিন্তু এই নোংরামি আমার পক্ষে আর সহ্য করা সম্ভব হচ্ছিল না। তাই সব কিছু ফাঁস করার সিদ্ধান্ত নিই। এখন আমি সাহায্য চাইছি।’
ভুক্তভোগী কিশোরীর বাবা জানিয়েছেন, তার মেয়ে বর্তমানে চূড়ান্ত হতাশায় রয়েছে। সে কারো সঙ্গে কথা বলছেন না। কোচের যৌন হেনস্থায় চরম অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েছে সে।
এদিকে, কিশোরীর বাবা পশ্চিমবঙ্গের রিষড়া থানায় অভিযোগ জানাতে গেলে তার অভিযোগ আমলে না নিয়ে তাকে গোয়ায় গিয়ে অভিযোগ জানানোর কথা বলা হয়।
এ ব্যাপারে পশ্চিমবঙ্গের চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটের ডেপুটি কমিশনার বলেন, ‘রিষড়া থানাকে আমি গোটা ঘটনার কথা জানিয়েছি। ওই কিশোরী যদি অভিযোগ জানাতে চান, তা হলে তিনি যেন রিষড়া থানায় যান। তার অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা রুজু করা হবে। কেন থানা প্রথমে অভিযোগ নেয়নি, সেটা খতিয়ে দেখছি আমরা।’