সামর্থবান পুরুষ ও নারীর জন্য হজ জীবনে একবার ফরজ। আল্লাহ তায়ালা বলেন, এতে রয়েছে মকামে ইব্রাহীমের মত সুস্পষ্ট নিদর্শন। আর যে, লোক এর ভেতরে প্রবেশ করেছে, সে নিরাপত্তা লাভ করেছে। আর ওই সমস্ত ব্যক্তিদের জন্য বাইতুল্লাহর হজ আবশ্যক যারা সেখানে পৌছার সামর্থ্য রাখে। আর যে লোক তা মানে না। আল্লাহ সারা বিশ্বের কোন কিছুরই পরোয়া করেন না। (৯৭-সূরা আল ইমরান)
সামর্থবানদের জন্য সর্বোত্তম আমলও হজ। আর এ কারণেই হজে মাবরুর বা কবুল হজের বিনিময়ও অনেক বড় এবং ফজিলতপূর্ণ।
বর্ণনাকারী আবু হুরায়রা (রা.) হজের ফজিলত সম্পর্কে বলেন : আমি রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি : যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য হজ করল এবং এ সময়ের মধ্যে স্ত্রী সম্ভোগ ও কোনোরূপ গর্হিত কাজ করল না, সে এমন নিষ্পাপ হয়ে গেল যেন আজই তার মা তাকে ভ‚মিষ্ঠ করেছেন’। সহীহুল বুখারী।
সহীহ বুখারী ও মুসলিমে বর্ণিত হয়েছে, বর্ণনাকারী আবু হুরায়রা রা. বলেছেন, আল্লাহর নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘কবুল হজের প্রতিদান জান্নাত ছাড়া আর কিছুই নয়’।
হজ শব্দের আভিধানিক অর্থ কোনো বিষয়ের বা কাজের ইচ্ছা বা দৃঢ় সংকল্প গ্রহণ করা এবং কোনো মহৎ বিরাট কাজের বারবার সংকল্প ও ইচ্ছা গ্রহণ করা। আল্লামা আজহারী বলেছেন, ‘হজ অর্থ কোনো স্থানে একবারের পর দ্বিতীয়বার আসা। এ কারণেই মক্কা গমনকে আল্লাহর ঘরের হজ বলা হয়। কেননা, জনগণ প্রত্যেক বছর আল্লাহর ঘর জিয়ারতের জন্য আসে’।
পরিভাষিক অর্থে হজ বলা হয়, আল্লাহর ঘরের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের উদ্দেশ্যে কতকগুলো বিশেষ ও নির্দিষ্ট কাজ সহকারে মর্যাদাপূর্ণ ঘরের জিয়ারতের সংকল্প করা। এ প্রসঙ্গে আল্লামা বদরুদ্দীন আইনী (রহ.) বলেন, সম্মান ও মহত্ব প্রকাশের উদ্দেশে কাবা ঘরের জিয়ারতের সংকল্প করাই হলো হজ। আল্লামা কিরমানী বলেছেন, কাবাঘরের অনুষ্ঠানাদি পালন ও আরাফাতের ময়দানে অবস্থানের উদ্দেশ্যে সেখানে যাওয়াই হলো হজ।
কুরআন মাজীদে আল্লাহ তা’আলা ঘোষণা করেছেন, ‘হজ আদায়কালে স্ত্রী সম্ভোগ, ফাসেকি ও গোনাহের কাজ এবং ঝগড়া বিবাদের কোনোই অবকাশ নেই। -সূরা বাক্বারাহ : আয়াত ১৯৭। সব নিষেধাজ্ঞা থেকে বেঁচে যারা হজ সম্পন্ন করতে পারবে, তারা সদ্যজাত শিশুর ন্যায় নিষ্পাপ হয়ে যাবে ইনশা আল্লাহ।