Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৮ রবিবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১৫ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

মসজিদের ইমামকে ফাঁসাতে ভাগনিকে ধর্ষণ, সহায়তা করেছেন মামি!

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ৩০ জুলাই ২০১৯, ০৯:১৬ PM
আপডেট: ৩০ জুলাই ২০১৯, ০৯:১৬ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত ছবি


কক্সবাজারে পেকুয়া উপজেলায় জমির বিরোধ নিয়ে প্রতিপক্ষ এক মসজিদের ইমামকে ফাঁসাতে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ুয়া আপন ভাগনিকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে মামার বিরুদ্ধে। ধর্ষণের পর ওই শিশুর মামিকে মা সাজিয়ে ইমামের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলাও করা হয়। 

তবে পুলিশের তদন্তে মূল ঘটনা বেড়িয়ে আসায় মামা-মামিসহ এক ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ঘটনায় গত ২২ এপ্রিল ও ২৯ এপ্রিল তাদের রিমান্ড আবেদন করা হলেও এখনো শুনানি হয়নি।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার ভোজপুর হাজিরখিল হাজী আব্দুল ওয়াহাব জামে মসজিদে ইমাম হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন মাওলানা মো. ফরিদুল আলম।

তিনি পেকুয়ার মগনামার ইউনিয়নের মহরিপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। তার সঙ্গে একই গ্রামের বাসিন্দা নুরুন্নবীর জমি সংক্রান্ত বিষয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। এ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে একাধিক মামলাও রয়েছে। তবে নুরন্নবী পেকুয়া উপজেলার বাসিন্দা হলেও কক্সবাজারের সদরে বসবাস করছিলেন।

ইমাম ফরিদুল আলম  অভিযোগ করেন, মগনামার ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আলমগীরকে সঙ্গে নিয়ে নুরুন্নবী তাকে ফাঁসানোর পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী নুরুন্নবী নিজের বোনের মেয়ে শিশুকে ধর্ষণ (৩ জুলাই রাত ২টা থেকে ৩টার মধ্যে) করে।

পরে তার বিরুদ্ধে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় ৩ জুলাই একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন। ধর্ষণের শিকার শিশুর মায়ের নাম ব্যবহার করে মামলার বাদী করা হয় নুরুন্নবীর স্ত্রী আমিনা বেগমকে।

এই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কক্সবাজার সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবুল কালাম জানান, তদন্ত করতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার শিশুটির সঙ্গে কথা বলে নানা প্রকার সন্দেহের সৃষ্টি হয়। বিষয়টি তিনি সঙ্গে সঙ্গে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফরিদ উদ্দিন খন্দকারকে জানান।

আবুল কালাম বলেন, ‘স্যারের (ওসি) নির্দেশে গুরুত্ব সহকারে আমি তদন্ত শুরু করি। প্রথমে যে ঘটনাস্থল দেখানো হয়েছে, তার আশপাশে খবর নিয়ে দেখি কেউ এই ঘটনা সম্পর্কে জানে না। এর মধ্যে জানতে পারলাম, মামলার বাদী আসলে ধর্ষণের শিকার শিশুর মামি। অথচ তিনি মা হিসেবে মামলা দায়ের করেন।

ওই পুলিশ কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘গত ১৬ জুলাই রাতে ওই শিশু, তার মা, ভাই-বোন, মামা-মামিসহ কয়েকজন প্রতিবেশীকে থানায় নিয়ে এসে জিজ্ঞাসাবাদ করি। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে পরদিন সকালে ধর্ষণের শিকার মেয়ে শিশু ও তার মাকে আদালতে জবানবন্দির জন্য পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

এরপর ধর্ষণের শিকার শিশুটি আদালতে জবানবন্দিতে মামা নুরুন্নবীর দ্বারা ধর্ষণের ঘটনা বর্ণনা করে। পুলিশের কাছে ধর্ষণকারী হিসেবে ইমাম ফরিদের নাম বলার জন্যও শিখিয়ে দেওয়া হয় ওই শিশুকে।

পরে তাকে হাসপাতালে রেখে মামি আমিনা বেগম থানায় এসে নিজেকে তার মা লতিফা বেগম দাবি করে টিপ স্বাক্ষর দিয়ে মামলা দায়ের করেন। টিপসই এর নিচে ইউপি সদস্য আলমগীরের মোবাইল নম্বর দেওয়া হয়েছে।

এরই পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৯ জুলাই ধর্ষণের শিকার শিশুর মা বাদী হয়ে কক্সবাজার সদর থানায় নিজের ভাই নুরুন্নবী, ভাইয়ের স্ত্রী আমেনা বেগম ও তাদের নিজের এলাকার ইউপি সদস্য আলমগীরকে আসামি করে একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন। পরদিন মামা-মামিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। কয়েকদিন পর ওই ইউপি সদস্যকেও গ্রেপ্তার করা হয়।

কক্সবাজার সদর মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. খাইরুজ্জামান জানান, পুলিশ মামলাটি নথিভুক্ত করার পর এসআই  আবুল কালামকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়।

পরে পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে গত ২২ এপ্রিল ওই মামা-মামিকে আদালতে হাজির করে রিমান্ডের আবেদন করে। এরপর গত ২৯ এপ্রিল ওই ইউপি সদস্যকেও আদালতে হাজির করার পর তার রিমান্ড আবেদন করা হয়। তবে এখনো ওই রিমান্ড আবেদনের শুনানি হয়নি। গ্রেপ্তার তিনজনই এখন কারাগারে আছেন।

Bootstrap Image Preview