Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০৯ বৃহস্পতিবার, মে ২০২৪ | ২৬ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

নিজের জীবন দিয়ে ছোট বোনকে বাঁচালো ৫ বছরের শিশু

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৭ জুলাই ২০১৯, ০৩:০০ PM
আপডেট: ২৭ জুলাই ২০১৯, ০৩:০০ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত ছবি


মাত্র পাঁচ বছরের একটা বাচ্চা। হাতে কিবা এমন শক্তি তার! তা যেমনই হোক, রিহাম কিন্তু এক মুহূর্তের জন্যও নিজের মুঠি আলগা করেনি। এমনকি জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত ধরে রেখেছিলো বোনকে। একটু একটু করে ধসে পড়ছে বাড়িটা। খানিক পরেই ধুলোয় মিশবে। ছোট বোনকে বাঁচানোর জন্য রিহাম তবুও বেপরোয়া। একটু উপরের দিকে কংক্রিটের ভাঙা স্ল্যাবের উপর দাঁড়িয়ে আর্তনাদ করছেন অসহায় বাবা। নিজেরই অর্ধেকটা ধ্বংসস্তূপের তলায়,বড় বোন তবু প্রাণপণ খামছে ধরে রেখেছে ছোট বোনটার টিশার্ট। যদি তলিয়ে যায়!

সিরিয়ার ইদলিবে বিমান হামলার ঠিক পরে বুধবারের এই ভিডিও-ছবি ইতিমধ্যেই ভাইরাল সোশ্যাল মিডিয়ায়। শুক্রবার জানা গেল, রিহামের বোন, সাত মাসের ওই খুদে এখনও আইসিইউ-এ ভর্তি। রিহামও ছিল সেখানে। আজ নেই। কোত্থাও নেই! বিমান হামলায় বড় মেয়ের সঙ্গে স্ত্রীকেও হারিয়েছেন আরিহা শহরের দীর্ঘদিনের বাসিন্দা আমজাদ আল-আবদুল্লা। সারা শরীরে ক্ষতচিহ্ন নিয়ে তিনিও এখন আঁকড়ে ধরতে চাইছেন ছোট মেয়েটাকে। যদি বেঁচে ফেরে!

সিরিয়ায় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘হোয়াইট হেলমেটস’-এর সদস্যেরাই সে দিন ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধার করেছিলেন রিহামদের। এখনও পোক্ত প্রমাণ না-মিললেও, তাঁদের দাবি— এই হামলা সিরিয়ার সরকার-পন্থী রুশ বাহিনীর। ওই এলাকায় কর্মরত ব্রিটেনের এক মানবাধিকার সংগঠনের দাবি, শুধু ওই দিনেই ইদলিবের তিনটি এলাকায় রুশ বিমান হানায় ৫ শিশু-সহ প্রাণ গিয়েছে ২০ জনের। যার মধ্যে খান-শেইকুনে একই পরিবারে নিহতের সংখ্যা ১০। সব শেষ!

স্থানীয়রা বলছেন, এপ্রিলের শেষ থেকে এমনটাই ঘটে চলেছে উত্তর-পশ্চিম সিরিয়ায়। সম্প্রতি পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে দাঁড়িয়েছে। গত দু’সপ্তাহে নিহতের সংখ্যা শতাধিক। ইদলিবের মতো হামা এবং পশ্চিম আলেপ্পোতেও চলছে ধ্বংসলীলা। বলা হচ্ছে, এগুলিই বিদ্রোহীদের শেষ শক্ত ঘাঁটি। তাই ‘বন্ধু’ রাশিয়াকে সঙ্গে নিয়ে লাগাতার হামলা চালাচ্ছে প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের সরকার।

এই পরিস্থিতিতে কেউ পালিয়ে বাঁচতে চাইছেন। তো কেউ মার্কিন হস্তক্ষেপের আর্জি জানিয়ে ভিডিও পোস্ট করছেন ফেসবুকে। এলাকা দখলের লড়াইয়ে যে ভাবে রোজ লাফিয়ে লাফিয়ে শিশুমৃত্যুর ঘটনা ঘটছে তাতে রাষ্ট্রপুঞ্জের পাশাপাশি বহু সংগঠন সুর চড়াচ্ছে। কিন্তু সিরিয়া এখনও সিরিয়াতেই!

সেভ দ্য চিলড্রেন সংগঠনের দাবি, ২০১৮-য় সিরিয়ায় ৩১টি শিশুমৃত্যুর খবর মিলেছিল। তাদের হিসেব, এপ্রিলের শেষ থেকে এখনও পর্যন্ত ৯০ শিশু-সহ সিরিয়ায় নিহতের সংখ্যা চারশো ছুঁইছুঁই। এ দিনই মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোট মেনে নিয়েছে, ইরাক এবং সিরিয়া মিলিয়ে হামলায় ১৩২১ জন সাধারণ নাগরিককে অনিচ্ছাকৃত মৃত্যুর শিকার হতে হয়েছে।

Bootstrap Image Preview