লাভের টাকা তেহরানকে না দেয়ার ব্যাপারে একটি ব্রিটিশ আদালত যে রায় দিয়েছে তার বিরোধিতা করেছে ইরান। লন্ডনে নিযুক্ত ইরানের রাষ্ট্রদূত হামিদ বায়িদিনেজাদ ওই বিরোধিতা করে বলেছেন, এ রায়ের বিরুদ্ধে আদালতে লড়বে তার দেশ। তিনি শুক্রবার রাতে এক টুইটার বার্তায় বলেন, ব্রিটেনকে ইরানের পাওনা কয়েক লাখ পাউন্ড ও তার লাভের টাকা তেহরানকে কড়ায়-গণ্ডায় বুঝিয়ে দিতে হবে।
১৯৭১ সালে ইরানের তৎকালীন শাহ সরকার ব্রিটেনের কাছ থেকে ১,৫০০টি জিফটেন ট্যাংক কেনার চুক্তি করেছিল। ১৯৭৬ সালে ইরান ব্রিটিশ ট্যাংক নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানকে ১০০ কোটি ডলার পরিশোধ করে। এরপর চুক্তি অনুযায়ী ব্রিটেন ইরানকে ১৫০টি ট্যাংক সরবরাহও করে। কিন্তু ১৯৭৯ সালে ইরানে ইসলামি বিপ্লবের পর চুক্তি লঙ্ঘন করে বাকি ট্যাংক সরবরাহ বন্ধ করে দেয় লন্ডন।
এ ব্যাপারে ইরান হেগের আন্তর্জাতিক আদালতের শরণাপন্ন হলে ওই আদালত ব্রিটেনকে এই মর্মে নির্দেশ দেয় যে, ইরানের বাকি অর্থের পাশাপাশি তেহরানকে এর ক্ষতিপূরণও দিতে হবে। আন্তর্জাতিক আদালত ইরানকে দেয়ার জন্য ৪৫ কোটি পাউন্ড ক্ষতিপূরণ নির্ধারণ করে দেয়।
কিন্তু ব্রিটিশ হাইকোর্টের একজন বিচারপতি গতকাল এক রুল জারি করে জানান, চার দশকেরও বেশি সময় আগে ইরানের পক্ষ থেকে পরিশোধকৃত ওই অর্থের ক্ষতিপূরণের পুরো টাকা তেহরানকে পরিশোধ করতে হবে না। বিচারপতি তার রায়ে বলেন, ব্রিটিশ কোম্পানিটি এখন নতুন করে ক্ষতিপূরণের অর্থ হিসাব করতে পারবে যা হবে মূল ক্ষতিপূরণের চেয়ে অনেক কম।
ইরানে ইসলামি বিপ্লবের পর ব্রিটিশ সরকার তেহরানের ওপর আরোপিত অস্ত্র নিষেধাজ্ঞার অজুহাতে অবশিষ্ট ট্যাংক হস্তান্তর করতে অস্বীকার করে সেগুলো ইরাকের তৎকালীন সাদ্দাম সরকারের হাতে তুলে দেয় যা সে সময় ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ব্যবহার করে বাথ সরকার।
সম্প্রতি ইরানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনী বা আইআরজিসি’র প্রধান কমান্ডার মেজর জেনারেল হোসেইন সালামি বলেছেন, ব্রিটিশ সরকার গত কয়েকশ’ বছরে পদে পদে ইরানের উন্নতির পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে এবং এখনো করে যাচ্ছে। ব্রিটিশ তেল ট্যাংকার আটকের ঘটনায় ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের দর্পচূর্ণ হয়েছে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।