Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৯ রবিবার, মে ২০২৪ | ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

বৃদ্ধা মাকে তাড়াতে প্রতিনিয়ত চলে ছেলে-বউের শারীরিক নির্যাতন

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১১ জুলাই ২০১৯, ১২:২০ PM
আপডেট: ১১ জুলাই ২০১৯, ১২:২২ PM

bdmorning Image Preview


মা মানেই পৃথিবীর সবশেষ আশ্রয়স্থল,মা মানেই সকল বিশ্বাস,ভালবাসা আর আস্থার প্রতীক। কিন্তু সেই মা-ই যখন সন্তানের কাছে সকল কষ্ট আর প্রতিবন্ধকার কারণ হয়ে দাঁড়ায়, তখন সেই দুঃখ আর কাকে বলবেন হতভাগিনী মা। মায়ের মৃত্যু কামনা করেন ছেলে আর ছেলের বউ,করেন অমানবিক নির্যাতনও। যাতে মায়ের মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে তার থাকার ঘরটি ভাড়া দিয়ে টাকা উপার্জন করতে পারেন।

আশ্চর্য হলেও ভারতের পশ্চিমবঙ্গে হাওড়ার নেতাজি সুভাষ রোডের পাশে ময়রাপাড়ায় মর্মস্পর্শী এ ঘটনা ঘটে চলেছে। সাবেক সরকারি চাকরিজীবী ছেলে ও পুত্রবধূর নির্মম নির্যাতনে কার্যত নজরবন্দি হয়ে পড়েছেন বৃদ্ধা মিনতি রানী (৮৫)। বাড়ি থেকে তাকে তাড়াতে প্রতিনিয়ত ছেলে-বউ মিলে করছেন শারীরিক নির্যাতন।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। বৃদ্ধা মিনতি রানীর অভিযোগ,বাড়ির একতলার ঘরে গত ১০ বছর ধরে অত্যাচার চালানো হচ্ছে তার ওপর। তাকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে সেই ঘর ভাড়া দিতেই এই নির্যাতন। পুলিশে অভিযোগ জানিয়েও সুরাহা হয়নি।

অবশ্য অভিযুক্ত ছেলে-বউমা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। স্বামীহারা ওই বৃদ্ধার অভিযোগ, ছেলে কমলেশের বিয়ের পর থেকেই বউমা বেবি শ্বশুর-শাশুড়ির সঙ্গে দুর্ব্যবহার শুরু করেন। পরে তা মানসিক নির্যাতনে পৌঁছায়। বছর ছয়েক আগে তার স্বামীর মৃত্যুর পরে ওই নির্যাতন ভয়াবহ পর্যায়ে পৌঁছায়।

তিনি জানান, বহুদিন আগেই তাকে আলাদা করে দিয়েছেন ছেলে-বউমা। একার সংসারে বাজার করা, রান্নাবান্না সবই নিজের হাতে করেন। বাড়িতে টিউবওয়েল থাকলেও তাকে পানি আনতে হয় রাস্তার কল থেকে। বিবাহিত তিন মেয়ে এলে দেখা করতে দেওয়া হয় না।

বৃদ্ধার অভিযোগ, ‘খাবার নিয়ে যখন খেতে বসি, তখন তার ওপর থেকে পোষা কুকুরের মল মিশিয়ে দেওয়া হয়। শৌচাগারে গেলে পানি বন্ধ করে দেয়। বারান্দায় দাঁড়িয়ে থাকলে দোতলা থেকে চোখে বালি ছুড়ে দেয়।’

মিনতি রানা বলেন, ‘ওরা চায় মরে যাই বা কোথাও চলে যাই। তাহলে এই ঘর ভাড়া দিতে পারবে। কিন্তু আমি যাব কোথায়?’

তিনি আরও বলেন,‘স্থানীয় ব্যাঁটরা থানায় ২০১৬ সাল থেকে দফায় দফায় অভিযোগ করলেও আজ পর্যন্ত পুলিশ সেভাবে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।

বৃদ্ধার ছোট মেয়ে মিতা সরকার বলেন, ‘আমরা মাকে দেখতে গেলে বৌদি অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করেন। কিছু বলতে গেলে মারতে আসেন। ভাবেন সম্পত্তির দখল নিতে এসেছি।’

তবে সব অভিযোগই অস্বীকার করছেন একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের সাবেক কর্মী কমলেশ এবং বিএসএনএলের অবসরপ্রাপ্ত কর্মী বেবি। বাড়ির দরজায় দাঁড়িয়ে বেবি বলেন, ‘ওর মেয়েরা সম্পত্তির জন্য আমাকে মারতে আসে। শুনুন, আমাকে কেউ কিছু করতে পারবে না। মিডিয়া কত লিখবে লিখুক না।’

হাওড়া সিটি পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘বৃদ্ধাকে নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়ার পরেও স্থানীয় থানা কেন ব্যবস্থা নেয়নি, তা তদন্ত করে দেখছি। নির্যাতনের প্রমাণ পেলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Bootstrap Image Preview