স্কুলের আঙ্গিনায় প্রেম রুখতে একসঙ্গে ক্লাস করা যাবে না ছাত্রছাত্রীদের। আর তাই ছেলে ও মেয়েদের জন্য আলাদা করে তিনটি পৃথক দিন ধার্য করা হয়েছে পাঠদানের জন্য। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিমবঙ্গের মালদাহ জেলার হবিবপুরের এক স্কুলে।
কলকাতাভিত্তিক এক সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, গিরিজা সুন্দরী বিদ্যামন্দির স্কুলের প্রধান শিক্ষক সম্প্রতি এমনই এক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। প্রধান শিক্ষকের এই নতুন সিদ্ধান্তের কারণে সপ্তাহে তিন দিন ক্লাস হয় ছেলেদের এবং বাকি তিন দিন হয় ছাত্রীদের।
তবে পুরো স্কুলের ক্ষেত্রে এই নিয়ম কার্যকর নয়। কেবলমাত্র একাদশ এবং দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের ক্ষেত্রে এই নিয়ম প্রযোজ্য। কিন্তু কেন এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো?
এ বিষয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষক জগদীশ সরকার জানান, স্কুলে মেয়েদের উত্ত্যক্ত করছিল ছেলেরা। যার প্রভাব পড়েছিল নিচের ক্লাসগুলোতেও। এমনকি বিদ্যালয় চত্বর প্রেমিকযুগলের আখড়া হয়ে গিয়েছিল। সেই কারণেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতেও এই সিদ্ধান্ত কার্যকর থাকবে বলে জানান তিনি।
সিদ্ধান্ত অনুসারে, সপ্তাহের সোম, বুধ ও শুক্রবার করে পাঠদান করা হবে কেবলমাত্র ছাত্রীদের। বাকি মঙ্গল, বৃহস্পতি ও শনিবার ক্লাস নেওয়া হবে ছাত্রদের।
স্কুলের অনেক ছাত্রী ছাত্রদের ইভটিজিং-এর শিকার হচ্ছিল। নতুন নিয়ম কার্যকর করার ক্ষেত্রে এই বিষয়টিও একটি অন্যতম কারণ বলে জানিয়েছেন প্রধান শিক্ষক জগদীশ সরকার। অনেক ছাত্রী প্রধান শিক্ষকের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন।
কিন্তু সঠিক সময়ে সিলেবাস শেষ হওয়া নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। কারণ আলাদা আলাদা ক্লাস হলে পঠনপাঠনের সময় কমে যাবে। এই জটিলতা অচিরেই দূর করা যাবে বলে দাবি করেছেন প্রধান শিক্ষক জগদীশবাবু।
এদিকে পড়ুয়াদের শিক্ষা দেওয়ার জন্য প্রধান শিক্ষকের বিশেষ নির্দেশিকা জারি নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক। স্কুলের অনেক অভিভাবক এই বিষয়টির বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন।
তবে স্কুলের প্রধান শিক্ষকের এমন পদক্ষেপে বিরোধ প্রকাশ করেছে রাজ্য সরকার। রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এ বিষয়ে বলেছেন, 'এই ধরনের সিদ্ধান্ত কখনই সমর্থন করা যায় না। এই বিষয়ে আধিকারিকদের তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দ্রুত এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে।'
ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক এত বড় সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে শিক্ষা দপ্তরের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করেননি বলে দাবি করেছেন রাজ্যের উচ্চশিক্ষা সংসদের সভাপতি মহুয়া দাস।