বগুড়ার ধুনট উপজেলায় যমুনা নদী থেকে বালু উত্তোলনের প্রভাবে শত কোটি টাকা ব্যায়ে ডান তীর সংরক্ষণ প্রকল্পে ফাটল ধরেছে। এছাড়া ভাঙনের ঝুঁকিতে পড়েছে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ, স্থাপনা, বসতবাড়ি ও আবাদি জমি।
অবাধে বালু উত্তোলনের বিরুপ প্রভাবে যমুনা পাড়ের মানুষের মাঝে ভাঙন আতংক বিরাজ করছে। ফলে এ ঘটনার প্রতিকার চেয়ে এলাকাবাসির পক্ষে স্থানীয় ভুতবাড়ি গ্রামের গোলাম সরোয়ার নামে এক ব্যক্তি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউইএনও) নিকট লিখিত অভিযোগ দিয়েছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ভান্ডারবাড়ি ইউনিয়নে যমুনাপাড়ের বানিয়াজান গ্রামের প্রভাবশালী বালু ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলাম। তিনি ২দিন ধরে যমুনা নদীর ভান্ডারবাড়ি গ্রামের সামনে নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে। সরকারি অনুমতি ছাড়াই যমুনা নদী থেকে খনন যন্ত্র দিয়ে প্রতিদিন প্রায় ৫ হাজার ঘনফুট বালু উত্তোলন করেন। এরপর ভলকেট যন্ত্রের মাধ্যমে নদীর কুল থেকে ভান্ডারবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে মজুদ করছে সেই বালু।
এদিকে, কয়েক বছর আগে ভান্ডারবাড়ি এলাকায় যমুনা নদীর ভাঙনরোধে শত কোটি টাকা ব্যয়ে ডান তীর সংরক্ষণ প্রকল্পের কাজ করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। ওই প্রকল্প এলাকা থেকে বালু উত্তোলন করায় সিসি ব্লকের মাঝে ফাটল দেখা দিয়েছে। অনেক স্থানে আবার ডেবে গেছে সিসি ব্লক। এছাড়া আবাদি জমি, বসতভিটা ও বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ ভাঙনের ঝুঁকিতে পড়েছে।
এ বিষয়ে শহিদুল ইসলাম বলেন, যমুনা নদী থেকে বালু উত্তোলনে প্রশাসনের কোন অনুমতি নেই। ভান্ডারবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠ থেকে ব্যবসায়ীরা দোকানঘর উচ্ছেদের নোটিশ পেয়েছে। তাই বাঁধের পাশে ভরাট করে সেখানে দোকানঘর নির্মানের জন্য ব্যবসায়ীদের সাথে ৫ লাখ টাকা চুক্তিতে বালু তুলে দেওয়া হচ্ছে। তবে যমুনা থেকে বালু উত্তোলনে তীর সংরক্ষণ প্রকল্পের কোনো ক্ষতি হবে না বলে তিনি দাবি করেন।
বগুড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) সহাকারী প্রকৌশলী আসাদুল হক বলেন, বালু উত্তোলনের বিষয়টি বিভিন্ন মাধ্যমে জেনেছি। বালু উত্তোলনের ফলে প্রকল্প এলাকার ক্ষতি হলে বালু ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ধুনট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাজিয়া সুলতানা বলেন, যমুনা নদী থেকে বালু উত্তোলন করতে কাউকে অনুমতি দেওয়া হয়নি। এ বিষয়ে এলাকাবাসির লিখিত অভিযোগটি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।