বগুড়ার ধুনট উপজেলায় যৌতুকের টাকা না পেয়ে রেবেকা খাতুন (২২) নামের এক গৃহবধুর শরীরে জলন্ত সিগারেটের ছ্যাঁকায় ঝলসে দিয়েছে তার স্বামী। রেবেকা খাতুন বগুড়া সদরের সুজাবাদ দহপাড়ার রায়হান আলীর স্ত্রী।
শুক্রবার (২১ জুন) দিবাগত রাত ১২টার দিকে স্বামীর বাড়িতে এই নির্যাতনের ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার পাঁচথুপি গ্রামের হতদরিদ্র রয়িচ উদ্দিনের মেয়ে রেবেকা খাতুনের সাথে বগুড়া সদরের সুজাবাদ দহপাড়ার আব্দুল মান্নানের ছেলে রায়হান আলীর প্রেমেরে সম্পর্ক গড়ে উঠে। সেই সুবাদে উভয় পরিবারের সম্মতিতে প্রায় ৪ বছর আগে ৩ লাখ টাকার কাবিনে রায়হানের সাথে রেবেকার বিয়ে হয়।
বিয়ের সময় যৌতুক দেওয়ার কথা না থাকলেও পরবর্তীতে স্ত্রীর নিকট ৩ লাখ টাকা যৌতুক দাবী করে রায়হান আলী।
কিন্ত রেবেকার হতদরিদ্র বিধবা মায়ের পক্ষে যৌতুকের টাকা পরিশোধ করা সম্ভব হয়নি। যৌতুকের টাকা না পেয়ে রায়হান ক্ষুদ্ধ হয়ে স্ত্রীকে প্রায়ই নির্যাতন করে।
নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে এক বছর আগে এনজিও থেকে ৫০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে স্বামীর হাতে তুলে দেয় রেবেকা।কিন্ত আরো আড়াই লাখ টাকার জন্য রেবেকার উপর নির্যাতন চালাতে থাকে।
এ অবস্থায় শুক্রবার রাতে মারধরের এক পর্যায়ে রেবেকার শরীরের বিভিন্ন স্থানে জলন্ত সিগারেটের ছ্যাকা দেয় রায়হান আলী। এছাড়া শনিবার সকালের দিকে রেবেকাকে মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে।
এ বিষয়ে রেবেকা খাতুন জানান, বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের টাকার জন্য তাকে নানা ভাবে নির্যাতন করে আসছে। এ বিষয় নিয়ে উভয় পরিবারে মধ্যে কয়েক দফা বৈঠক হয়েছে।
কিন্ত তাতে কোন কাজ হয়নি। শুক্রবার রাতে মারধরের সময় শরীরের বিভিন্ন স্থানে জলন্ত সিগারেটের ছ্যাকা দিয়ে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে। কিন্ত টাকার অভাবে আইনের আশ্রয় নিতে পারছে না বলে জানান তিনি।
এদিকে রায়হান আলীর সাথে যোগাযোগ করে তার মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় এ বিষয়ে কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
ধুনট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক মাহমুদুল হাসান বলেন, রেবেকার শরীরের বিভিন্ন স্থানে ফোসকার ন্যায় ক্ষত চিহ্ন রয়েছে। তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
ধুনট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ইসমাইল হোসেন বলেন, সংবাদ পেয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগের চিকিৎসকের নিকট ঘটনার কথা শুনেছি। এ বিষয়ে অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।