Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০৫ রবিবার, মে ২০২৪ | ২২ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

ভারতে লিচু খেয়ে ১০৩ শিশুর মৃত্যু

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৯ জুন ২০১৯, ১১:২০ AM
আপডেট: ১৯ জুন ২০১৯, ১১:২০ AM

bdmorning Image Preview


ভারতের বিহার প্রদেশে রহস্যজনক মস্তিষ্কজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে শতাধিক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এনিয়ে সেখানে বিক্ষোভ দেখা দিয়েছে। মস্তিষ্কজনিত এ রোগের সঙ্গে গ্রীষ্মকালীন ফল লিচুর সম্পর্ক রয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

খবরে বলা হয়েছে, চলতি বছর পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ বিহারের মোজাফফরপুরে ১০ এবং তার চেয়ে কম বয়সী ১০৩ শিশু একিউট এনসেফালিটিস সিনড্রোম (এইস)-এ আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছে। মৃতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সেখানের বিভিন্ন হাসপাতালে আরো অনেক শিশুই চিকিৎসাধীন রয়েছে।

দেশটিতে ১৯৯৫ সাল থেকে প্রতি বছর গ্রীস্মকালে এবং সাধারণভাবে লিচুর সময়ে সব সময় এ রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। ২০১৪ সালে এই রোগে সেখানে শিশু মৃত্যুর রেকর্ড সংখ্যা ১৫০ জন। অন্যান্য বছরে মৃত্যুর সংখ্যা সেই তুলনায় কম।

বেশ কয়েক বছর আগে যুক্তরাষ্ট্রের গবেষকগণ জানিয়েছেন, গ্রীস্মকালিন লিচুর ভেতরের এক ধরণের বিষাক্ততা এ মস্তিস্ক রোগের সঙ্গে সম্পর্কিত।

গবেষকগণ বলেন, এ অসুস্থতার কারণ নির্ণয়ে আরো বেশি গবেষণা চালিয়ে যেতে হবে বলে মতামত দেন। স্থানীয়ভাবে ‘চামকি বুখার’ নামে পরিচিত এ রোগ তৃতীয় ধরণের মারাত্মক।

মঙ্গলবার ওই রাজ্যের বেশ কিছু সংখ্যক লোককে কর্তৃপক্ষের স্থবিরতা ও অযত্নের অভিযোগ নিয়ে মোজাফ্ফরপুরের প্রধান হাসপাতালের বাইরে ভীড় করতে দেখা গেছে।

গত রবিবার এ বিষয়ে এক সংবাদ সম্মেলণ চলাকালে ভারত-পাকিস্তানের ক্রিকেট প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের কাছে জানতে চাওয়ায় এ বিষয়টি নিয়ে সমালোচিত হয়েছেন প্রাদেশিক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ।

বিরোধী দলীয় কংগ্রেস নেতা রণদীপ সূর্যবালা টুইটারে মন্তব্য করেছেন, ‘বিহারের স্বাস্থ্যমন্ত্রী শিশু মৃত্যুর চেয়ে ক্রিকেট স্কোর নিয়ে অধিক উদ্বিগ্ন।’

অপর বিরোধী দলীয় ব্যক্তিত্ব রাবরি দেবী শিশু মৃত্যুকে, ‘ঠান্ডা মাথার খুন’’বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি টুইট করেছেন, ‘ ওষুধ ও চিকিৎসার অভাবে শিশুরা মারা যাচ্ছে।’

বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমার মঙ্গলবার বিহারের সরকারি হাসপাতাল শ্রীকৃষ্ণ মেডিকেল কলেজ পরিদর্শন করেন, যেখানে বেশিরভাগ শিশুই মারা গেছে।

গণমাধ্যমকে ভেতরে প্রবেশের ও অসুস্থ শিশুদের পরিবারের সদস্যদের বহিরাঙ্গণে গোলোযোগ সৃষ্টির ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।

জাতীয় মানবাধিকার কমিশন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সরকার ও প্রাদেশিক কর্তৃপক্ষকে এ রোগ মোকাবিলায় ভ্যাকসিন ও সচেতনতা কর্মসূচির আহ্বান জানিয়েছে।

মঙ্গলবার হিন্দু পত্রিকায় এক সম্পাদকীয় বলা হয়েছে, কিছু দূরদর্শীতা ও প্রারম্ভিক যত্নে অতি সহজেই মৃত্যু কমিয়ে আনতে পারে।

এতে তুলে ধরা হয়, ২০১৪ সালে ভারত-যুক্তরাষ্ট্রের একটি বিশেষজ্ঞ দলের হস্তক্ষেপে শতকরা ৭৪ ভাগ শিশুর জীবন রক্ষা করতে সক্ষম হয়েছিল।

এতে আরো বলা হয়, চলতি বছর সরকার এ ব্যাপারে সচেতনতা সৃষ্টিতে ব্যর্থ হয়েছে।

প্রায় ১০ কোটি লোক অধ্যুষিত বিহার ভারতের দরিদ্রতম প্রদেশগুলোর অন্যতম। সম্প্রতি সেখানে ৪৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রার বয়ে গেছে।

সেখানে দরিদ্র পরিবারের শিশুরা যারা এমন কি পেটপুরে খেতে পায় না তারা খালি পেটে লিচু খেয়ে মস্তিস্ক রোগের শিকার হয়।

Bootstrap Image Preview