ভারতের পশ্চিমবঙ্গের এনআরএস হাসপাতালে জুনিয়র ডাক্তারদের উপর হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে অচলাবস্থা ছড়িয়ে পড়ছে আশেপাশের রাজ্যের হাসপাতালগুলোতেও। এর ফলে গত ৪৮ ঘণ্টায় ৪ নবজাতকসহ অন্তত ২৮ জনের মৃত্যু হয়েছে।
এনআরএস কাণ্ডের জের ধরে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতাল ও উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালসহ আরো বেশ কয়েকটি হাসপাতালের অবস্থাও ক্রমশ জটিল আকার ধারণ করছে। অচলাবস্থা বিরাজ করছে তাদের জরুরি বিভাগসহ অন্যান্য বিভাগেও।
বিশেষ করে জরুরি বিভাগ অচল থাকায় দূরদূরান্ত থেকে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা হচ্ছেন ভোগান্তির স্বীকার। এছাড়াও ঘটছে একের পর এক রোগী মৃত্যুর ঘটনা। ফলে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ছে হাসপাতাল চত্বরে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, হাসপাতালে রোগীমৃত্যুর ঘটনা স্বাভাবিক ঘটনায় পরিণত হয়েছে। অচলাবস্থার কারণে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ১২ থেকে ১৫ জন রোগীর মৃত্যু হচ্ছে।
তবে জরুরি বিভাগের পরিষেবা বন্ধ থাকায় এখানে গত ২৪ ঘণ্টায় প্রায় ২৫ জনেরও বেশি রোগীর মৃত্যু হয়েছে।
রোগী মৃত্যুর বিষয়ে হাসপাতাল সুপার জানিয়েছেন, মঙ্গলবার ১৫ এবং বুধবার আরও ১৩ জন রোগীর মৃত্যু হয়েছে। যাদের মধ্যে ৪ জন নবজাতক রয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) আরও অন্তত সাতজনের মৃত্যু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকালে অনেকে দূরদূরান্ত থেকে চিকিৎসা নিতে হাসপাতালে এসে দেখেন বহির্বিভাগ বন্ধ। টিকিট কাউন্টারেরও দরজা খোলেনি।
তারপর কাউন্টার এবং বহির্বিভাগ খোলার দাবিতে রাস্তা অবরোধ শুরু হয়। এর কিছুক্ষণ পরেই খুলে দেয়া হয় বহির্বিভাগের মূল ফটক। তবে চিকিৎসকরা বহির্বিভাগের বাইরে গিয়ে কাজ শুরু করেন। কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যেই বন্ধ হয়ে যায় সেই পরিষেবাও।
এছাড়াও বর্ধমান, বাঁকুড়া ও মুর্শিদাবাদ মেডিকেল কলেজেও ঘটেছে একই ধরণের ঘটনা। বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে বহির্বিভাগ খুলে পরিষেবা শুরু হয়। কিন্তু কিছুক্ষণ পর জুনিয়র চিকিৎসকরা এসে বহির্বিভাগ থেকে অন্যান্য চিকিৎসকদের বের করে নিয়ে যায়। তারপর থেকে সেখানেও চিকিৎসা সেবা প্রদান বন্ধ রয়েছে।
অপরদিকে, মুর্শিদাবাদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের টিকিট কাউন্টার থেকে জেনারেল ফিজিশিয়ান বিভাগের টিকিট দেয়া সত্ত্বেও রোগীদের চিকিৎসা সেবা দেয়া হয়নি। টিকিট কেটে রোগীরা ঘণ্টার পর ঘণ্টা এসে লাইনে দাঁড়িয়েও কোনো সাড়া পাননি। এখানেও জুনিয়র চিকিৎসকরা বহির্বিভাগের চিকিৎসা সেবা প্রদান কার্যক্রম বন্ধ রেখেছেন।