দিনাজপুরের পার্বতীপুরে স্বামী-শাশুড়ির অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে নিজের শরীরে কেরোসিন ঢেলে অগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টাকারী গৃহবধূ কেয়া রানীর (২৮) মৃত্যু হয়েছে। ৬ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর ঢাকা মেডিকেলে মৃত্যু হয় তার।
জানা যায়, নিহত কেয়া রানী গাইবান্ধা জেলার সাদুল্যাপুর উপজেলার উত্তরপাড়া গো-হাটি হরিজন পল্লীর রাজু চৌধুরীর মেয়ে। ৬ বছর আগে পার্বতীপুর উপজেলার ইব্রাহীম নগর সুইপার কলোনীর শীতারাম বাশফোঁড়ের ছেলে বৈশাখ বাশফোঁড়ের সাথে তার বিয়ে হয়। এই দম্পতির বর্ষা নামে ৫ বছর বয়সী এক কন্যা সন্তানও রয়েছে।
কেয়া রানীর বাবা রাজু চৌধুরী ও স্বজনরা অভিযোগ করে বলেন, কেয়ার স্বামী ও শ্বাশুড়ি টাকার জন্য সময়ে অসময়ে তার ওপর পাশবিক নির্যাতন চালাতো। সংসারের খরচপত্র ঠিকভাবে দিতো না। এমনকি মা বাবার সাথে মোবাইলে কথাও বলতে দিতো না নিহত কেয়ার পাষণ্ড স্বামী বৈশাখ।
এর আগে অত্যাচার ও নির্যাতনের শিকার হয়ে গত ৮ মে সন্ধ্যে ৭টার দিকে কেয়া রানী তার স্বামীর বাড়িতে শ্বাশুরীসহ সবার সামনে আত্মহত্যার উদ্যেশ্যে নিজের শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন। পরে অগ্নিদগ্ধ কেয়া রানীকে পার্বতীপুরের ল্যাম্ব হাসপাতালে ভর্তির জন্য নিয়ে যাওয়া হয়।
পরবর্তীতে ৯ মে সকালে তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানও অবস্থার অবনতি হতে থাকলে উন্নত চিকিৎসার জন্য ১২ মে ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের বার্ণ ইউনিটে স্থানান্তর করা হয়।
সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার (১৩ মে) সন্ধ্যা ৭টার দিকে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। মঙ্গলবার (১৪ মে) সকালে মরদেহটি সৎকারের জন্য ঢাকা থেকে পার্বতীপুরে নেয়া হয়।
উল্লেখ্য, কেয়া রানী মৃত্যুর আগে তার স্বজনদের জানিয়েছিলেন, আগুন লাগার পরে শ্বাশুড়িসহ বাড়ির লোকজন তার অবস্থা দেখা সত্বেও কেউই তাকে বাঁচাতে এগিয়ে আসেনি। এ ঘটনায় শাহাবাগ থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে (মামলা নং- ৭৫১, তারিখ ১৩ মে/১৯)।