Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৯ সোমবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১৫ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

কলা পাকাতে ভয়ানক কেমিক্যাল, ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে কিডনি-লিভার

বানিয়াচং প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ১৪ মে ২০১৯, ০৭:১৩ PM
আপডেট: ১৪ মে ২০১৯, ০৭:১৩ PM

bdmorning Image Preview
ফাইল ছবি


হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলার সবকটি হাট-বাজারে কলা পাকাতে এককথায় প্রকাশ্যেই মেশানো হচ্ছে কার্বাইড জাতীয় রাসায়নিক পদার্থ। ফলে কলার বাহ্যিক রং ১২ ঘণ্টার মধ্যেই হলুদ ও আকর্ষণীয় আকার ও রং ধারণ করছে। বিষাক্ত যে কেমিক্যাল মিশানো হচ্ছে তা মানবদেহের জন্য মারাত্নক ঝুঁকিপূর্ণ। কেমিক্যাল মিশ্রিত কলা খেয়ে জীবনহানির সম্ভাবনাও বেশি।

মাহে রমজানে মাসে কলার প্রচুর চাহিদার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে এবং প্রশাসনের নজরদারির অভাবে অসাধু কলা ব্যবসায়ীরা এসব অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছেন।

অনুসন্ধানে দেখা গেছে, এই উপজেলার হাটবাজারে প্রতিদিন ৫/৬ ট্রাক কলা ঢাকা ও টাঙ্গাইলসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসে। উপজেলার সদরের হাটবাজারগুলো ছাড়াও প্রত্যন্ত অঞ্চলের বাজারগুলোতে কলার দোকান রয়েছে ২০-২৫টি। এসব কলার দোকানে প্রতিদিন কলা পাকানো এবং কলার রং আকর্ষণীয় করার জন্য কার্বাইড বা কেমিক্যাল জাতীয় পদার্থ মেশানো হচ্ছে।

এসব হাটবাজারে যেসব কলা বিক্রি করা হচ্ছে তার শতভাগ কলাই বিষাক্ত কেমিক্যাল দিয়ে পাকানো। খুব তাড়াতাড়ি যাতে এসব কলা পেকে যায় তাই ব্যবসায়ীরা এই কেমিক্যাল মিশিয়ে থাকেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কলা ব্যবসায়ী জানান, কলায় এসব পদার্থ মেশালে কলা দ্রুত পাকে এবং কলা দেখতে খুব সুন্দর দেখায়, তাই কাস্টমাররা এসব কলা কিনে নিয়ে যায়। এতে আমাদেরও লাভ হয় বেশি। কৃত্রিমভাবে পাকানো কলা খুব দ্রুত পচেও যায়।

এসব পদার্থ মেশানো কলা খেলে যে মানুষের স্বাস্থ্যের ক্ষতি হচ্ছে এমন প্রশ্নের জবাবে এই কলা ব্যবসায়ী বলেন, সবাই মেশায় তাই আমিও মেশাই।

কেমিক্যাল মেশানোর প্রক্রিয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে ব্যবসায়ী সাকির আলী জানান, কলা আমরা অনেক দূর থেকে নিয়ে আসি। আসতে আসতে তিনদিন লেগে যায়। আনার পর একটি বদ্ধ ঘরে রেখে রাসায়নিক ছিটানো হয়। ছিটানোর ফলে এই কলা জলদি পেকে যায়। আমাদের বিক্রি করতেও সুবিধা হয়। তাই তারা একসঙ্গে কলা পাকাতে রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহার করেন।

বানিয়াচং নতুন বাজারে বাজার করতে আসে আরিফুল ইসলাম বলেন, যারা খাদ্যদ্রব্যে এসব কেমিক্যাল মিশায় তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসন কোনো ধরণের ব্যবস্থা নিচ্ছে না, যার ফলে দিনদিন এসব বেড়েই চলেছে। পবিত্র রমজান মাসেও থেমে নেই এদের কর্মকাণ্ড। এসব কেমিক্যাল মিশ্রিত খাবার খেয়ে মানুষ বিভিন্ন রোগে আক্রান্তও হচ্ছে।

এ বিষয়টি নিয়ে কথা হয় বানিয়াচং উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: শাহপরাণের সাথে। তিনি বলেন, বিষাক্ত এসব দাহ্য পদার্থ মিশানো কলা খাওয়া স্বাস্থ্যে জন্য ক্ষতিকর এবং সাথে সাথে বমিভাব ও ডায়রিয়া হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। কেমিক্যাল মিশ্রিত কোন খাদ্য গ্রহণ করলে তার প্রভাব পড়ে লিভার ও কিডনীর উপর।

তিনি বলেন, ওইসব খাদ্য গ্রহণের পরে তা দাহ্যে পরিণত হওয়ার পর নিঃসারণ ঘটে লিভার এবং কিডনির মাধ্যমে। ফলে কেমিক্যাল মেশানো খাদ্য শরীরের এই দুটি অংশের উপর প্রভাব ফেললেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কিডনিকেই বেশি ক্ষতিগ্রস্থ করে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মামুন খন্দকার জানান, কলার মধ্যে যদি রাসায়নিক কেমিক্যাল মিশিয়ে কলা পাকানো হয় তাহলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। পাশাপাশি এইসব অসাধু ব্যবসায়ীদের মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।

Bootstrap Image Preview