Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০৪ শনিবার, মে ২০২৪ | ২০ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

চার কারণে লোকসানের মুখে পোল্ট্রি খামারিরা

রফিকুল আলম, ধুনট (বগুড়া) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ১৩ মে ২০১৯, ০৬:১২ PM
আপডেট: ১৩ মে ২০১৯, ০৬:১২ PM

bdmorning Image Preview
ফাইল ছবি


চার কারণে ব্রয়লার ও লেয়ার মুরগির খামারিরা পুঁজি হারিয়ে আর্থিক সঙ্কটে দিশেহারা হয়ে পড়েছে। প্রচণ্ড গরমে মুরগির মৃত্যু, বেশী দামে বাচ্চা ক্রয়, গরমে মুরগির ওজন বৃদ্ধি না হওয়া ও বাজারে দাম পড়ে যাওয়ায় খামারিদের লোকসান গুনতে হচ্ছে।

বগুড়ার ধুনট উপজেলায় ২১৫টি পোল্ট্রি খামার রয়েছে। এসব খামারের আয় থেকেই অধিকাংশ পরিবারের জীবিকা নির্বাহ হয়। বর্তমানে সব খামারেই বিক্রয় উপযোগী ব্রয়লার ও লেয়ার মুরগি রয়েছে। কিন্তু বাজারে দাম কমে যাওয়ায় অনেক খামারি মুরগি বিক্রি করতে পারছেন না। আর যারা প্রচণ্ড গরমের কারণে মৃত্যুর হাত থেকে মুরগি রক্ষা করতে পারছেন না, তারা লোকসানে বিক্রি করছেন।

কালেরপাড়া গ্রামের খামারি আশেক মাহমুদ জানান, তিনি ৬৫ টাকা দরে একেকটি ব্রয়লার মুরগির বাচ্চা কিনেছেন। একেকটি বাচ্চা বড় করতে সময় লেগেছে প্রায় ৩০ দিন। বাচ্চাটি বড় করতে খাদ্য, ওষুধ, বিদ্যুৎ ও লোকবল খরচসহ ব্যয় হয়েছে ২১৫ টাকা। অথচ বাজারে গিয়ে একটি মুরগির দাম পাওয়া যাচ্ছে ১৬০ টাকা। এতে প্রতিটি মুরগি বেচে কমপক্ষে ৫৫ টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে। খামারে তিন হাজার বিক্রয়যোগ্য মুরগি থাকলেও দাম কমে যাওয়ায় বিক্রি করতে পারছে না।

মাটিকোড়া গ্রামের সিহাব উদ্দিন নামে এক খামারি বলেন, অনেক খামারিই বাজারে গিয়ে মুরগি বিক্রি করতে পারেন না। এক্ষেত্রে খামারের মুরগি দুই থেকে তিন হাত বদল হয়। ফলে লাভের একটি অংশ মধ্যস্বত্বভোগীদের পকেটে যায়। বাজারে দাম পড়ে যাওয়ায় বর্তমানে খামারিরা ফড়িয়াদের কাছে পাইকারি ৯০-৯৫ টাকা কেজি দরে মুরগি বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন।

চরপাড়া গ্রামের মোক্তার হোসেন নামে এক খামারি বলেন, প্রচণ্ড গরমের কারণে খামারের মুরগিগুলো ছটফট করছে। প্রচণ্ড তাপ সহ্য করতে না পেরে ৭ দিনে তার খামারের ২৫০টি মুরগি মারা গেছে। এ ছাড়া গরমের কারনে মুরগির ওজন বৃদ্ধি হচ্ছে না। এতে লোকসানের মুখে পড়েছেন।

রাঙ্গামাটি  গ্রামের মুরগির খামারের মালিক আতাউর রহমান পলাশ জানান, খামারে পর্যাপ্ত বৈদ্যুতিক পাখা লাগিয়ে, পানি ছিটিয়ে ও ওষুধ প্রয়োগ করেও কাজ হচ্ছে না। মুরগিগুলো প্রথমে প্রচণ্ড গরমে দুর্বল হয়ে যায়। চোখ কালো হয়ে ছটফট করতে করতে মুরগি মারা যায়। গত এক সপ্তাহে তার খামারে ১৫০টি মুরগি মারা গেছে। তার খামার ছাড়াও নলডাঙ্গা গ্রামের আলতাবের ১০০টি, রাঙ্গামাটি গ্রামের ইউসুব আলীর ২০০টি ও মাটিকোড়া গ্রামের সিহাব উদ্দিনের ২৫০ মুরগি মারা গেছে।

ধুনট উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ নুরে আলম সিদ্দিকী জানান, প্রচণ্ড গরমে মুরগি মারা যাওয়ার খবর পেয়েছেন। এ অবস্থা থেকে কিছুটা রক্ষা পেতে খামারিদের মুরগির যত্ন নিতে হবে। খামারের ভেতরে ও ঘরের চালে ঠাণ্ডা পানি ছিটানোর পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। তবে প্রচণ্ড গরমের কারনেই খামারিরা লোকসানের মুখে পড়েছে।

Bootstrap Image Preview