কাঁচা ও অপুষ্ট কলাকে কৃত্রিম তাপ দিয়ে পাকানো হচ্ছে। কলার কাঁদির নিচে ধোয়াযুক্ত কেরোসিনের স্টোভ জ্বালিয়ে অক্সিজেন বন্ধ করে ও তাপ দিয়ে পাকানো হচ্ছে এসব কলা। দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রতিদিন ৪ থেকে ৫ ভ্যান কাঁচা ও অপরিপক্ব কলা আসছে কলা পাকানো হিটরুম আড়তগুলোতে।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, এ পদ্ধতিতে ব্যবহার করছে কলা ব্যবসায়ীর সবাই। তবে উপজেলার সব আড়তেই দেখা মিলছে এভাবে কলা পাকার দৃশ্য।
রাণীরবন্দরের ফল ব্যবসায়ী রমজান আলী জানান, কাঁচা ও অপুষ্ট যেকোন ফলই তাপ দিয়ে পাকানো সম্ভব। এ তাপ পদ্ধতিতে আম পাকাতে তিন দিন সময় লাগে। পেঁপে দুদিন, কলা এক থেকে দু'দিন। এভাবে কলা পাকনোর পর এখান থেকে পাইকারি দরে বিক্রি করা হয়। পরে আড়ত থেকে খুচরা ক্রেতাদের মাধ্যমে চলে যায় উপজেলা বিভিন্ন হাট-বাজারসহ প্রত্যন্ত গ্রামঞ্চলে।
এ বিষয়ে রাণীরবন্দর বাজার এলাকার আড়ত মালিক আব্দুল ওহাব বলেন, তাপ দিয়ে কলা পাকানো হলেও কোন রাসানিকের ব্যবহার নেই। এ ক্ষেত্রে কলাটি নিরাপদ। যদিও চিকিৎসকরা বলছেন, তাপ দিয়ে পাকানো কলায় স্বাস্থ্য ঝুঁকি রয়েছে।
উপজেলার রাণীরবন্দর বাজারের নুর ইসলাম (৩৭) নামে একজন ভোক্তা বলেন, হিট দিয়ে কলা পাকানোর কারণে ফলের স্বাদ আগের মত পাওয়া যায় না। আগে একটি পেঁপে যেমন মিষ্টি লাগতো, এখন সেটা আর মনে হয় না। তবে এতে প্রশাসনের নজরদারি থাকলে হয়তো এভাবে ফল পাকাতে পারতেন না ফল ব্যবসায়ীরা।
এ বিষয়ে চিরিরবন্দর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার মূর্তজা আল মামুন বলেন, কৃত্রিম তাপে পাকানো ফল খেলে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে থাকে। একই সঙ্গে ফলের ন্যসারেল পরিপূর্ণ কোন গুনগত থাকে না। কেরোসিনের গ্যাসে ফলটি গন্ধযুক্ত হয়ে থাকে। এসব ফল খেলে এলার্জিসহ নানা ধরনের চর্মরোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভবনা থাকে। সাধারণ ভোক্তাদের এ বিষয়ে সর্তক হওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো: গোলাম রব্বানী বলেন, উপজেলায় কৃত্রিম উপায়ে কলা বা অন্য ফল পাকানো হলে তথ্য দেওয়ার জন্য সবাইকে অনুরোধ করা হল। তাদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।