তিন মাস ধরে চাকরি নেই। সন্তানের ক্ষুধার যন্ত্রণা মেটাতে বাধ্য হয়েই সুপার শপ 'স্বপ্ন' থেকে দুধ চুরি করেছিলেন বাবা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তা ভাইরাল হবার পর ঘটনা নজরে আসে স্বপ্নের নির্বাহী পরিচালক সাব্বির হাসান নাসিরের। পরে তার নির্দেশেই সেই বাবা ও সন্তানের দায়িত্ব নেবার জন্য পদক্ষেপ নিয়েছে স্বপ্ন কর্তৃপক্ষ।
শনিবার (১১ মে) এই তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন স্বপ্নের হেড অফ মার্কেটিং তানিম করিম।
তানিম করিম জানান, এমন হৃদয়বিদারক একটি ঘটনার কথা জানতে পেরে আমাদের কোম্পানি সেই বাবাকে চাকরি দেয়ার নীতিগত সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে। তবে এমন ঘটনা আমরা প্রায়ই মুখোমুখি হই, তাই ঘটনার সত্যতা না যাচাই করে আমরা এখনি নিশ্চয়তা দিচ্ছি না।
তিনি জানান, এই মাস চলার জন্য যা যা বাজার প্রয়োজন তা আমরা ওই বাবাকে এখনি তুলে দিবো। এটা ঠিক আমরা একটি কোম্পানি আমাদের নিয়োগের কিছু প্রক্রিয়া আছে, তাই যদি ঘটনা সত্যি হয়ে থাকে তাহলে আমাদের প্রশাসন যাবতীয় নিয়ম মেনে তাকে চাকরি দেয়ার জন্য সব পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। তার উপযোগী যে চাকরি আমাদের কোম্পানিতে রয়েছে সেখানেই আমরা তাকে পদায়ন করবো।
তবে এখন পর্যন্ত স্বপ্ন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করেননি সেই বাবা। তাছাড়া তার ব্যক্তিগত মোবাইলটিও বন্ধ পাওয়া গেছে।
শনিবার রাতে তার খিলগাঁও জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনারের কার্যালয়ে আসার কথা থাকলেও আসেননি তিনি। এরপর প্রযুক্তির ব্যবহার করে তার পূর্ণাঙ্গ পরিচয়, বন্ধুর নম্বর সংগ্রহ করে তার সঙ্গে কথা বলেছে পুলিশ।
নাম-পরিচয় গোপন রাখার আশ্বাস দিয়ে রোববার তাকে আবারো পুলিশের সঙ্গে দেখা করতে বলা হয়েছে। সেই বাবা আজ খিলগাঁও পুলিশ কার্যালয়ে আসবেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
সেই বাবাকে নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট দেয়া খিলগাঁও জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) জাহিদুল ইসলাম রোববার বলেন, তিনি মোবাইল বন্ধ করে রেখেছন। আমরা প্রযুক্তির সাহায্যে তাকে ট্রেস করে তার সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তিনি এক বাবার এক ছেলে, সম্ভ্রান্ত পরিবারের ছেলে। আত্মসম্মানবোধের কারণে তিনি আমাদের সঙ্গে দেখা করতে আসেননি। আমি তাকে নিশ্চিত করেছি যে তার নাম-পরিচয় সব গোপন রাখা হবে। তিনি কথা দিয়েছেন, আজ আসবেন।
স্বপ্নের হেড অব মার্কেটিং তানিম করিম বলেন, আমরা তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে ব্যর্থ হয়েছি। তবে তার জন্য স্বপ্নের দ্বার এখনও খোলা রয়েছে। তিনি আসলে আমরা তার দায়িত্ব নেব এবং তার নাম-পরিচয় গোপন রাখব।
উল্লেখ্য, গত ১০ মে রাজধানীর বাকি সড়কে কর্তব্যরত থাকা অবস্থায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) সহকারী কমিশনার জাহিদুল ইসলাম বাচ্চার জন্য বাবার দুধ চুরির মত হৃদয়বিদারক ঘটনার মুখোমুখি হন। এরপর তিনি তার ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে তা সবার কাছে তুলে ধরলে মুহূর্তেই ভাইরাল হয়ে পরে।