ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’র আঘাতে ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট, কৃষি, বাঁধ ও মৎস্য খাতে মোট ৫৩৬ কোটি ৬১ লাখ ২০ হাজার টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. শাহ্ কামাল।
ঘূর্ণিঝড় ফণীতে ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণে আজ বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে ‘আন্তঃমন্ত্রণালয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সমন্বয় কমিটি’র সভা শেষে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. শাহ্ কামাল এই তথ্য জানান।
শাহ কামাল জানান, ‘ফণীর কারণে ৭৮কোটি ১৪ লাখ ২০ হাজার টাকার ঘরবাড়ি, ২৫১কোটি টাকার বাঁধ, মাছে ২কোটি ৮৪ লাখ টাকা, ৫কোটি টাকার আমের বাগান এবং কৃষিতে ৩৮কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।’
এছাড়া স্থানীয় সরকার বিভাগের ২৪১ কিলোমিটার রাস্তা মেরামতের খরচ হিসেব করে ১৬১কোটি ৬৩ লাখ টাকার ক্ষতি ধরা হয়েছে বলে জানান তিনি।
সভাশেষে উপস্থিত সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডাঃ এনামুর রহমান জানান, ঘূর্ণিঝড় ফনীর আগাম সতর্কতা হিসেবে সরকার পূর্ব প্রস্তুতি গ্রহণ করায় জানমালের ক্ষয়ক্ষতি অনেক কম হয়েছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, স্বেচ্ছাসেবক, প্রশাসন ও অন্যান্য সরকারি-বেসরকারি সংস্থার সমন্বয়ে ৩ মে ২০১৯ তারিখে সকাল ১০ টা থেকে উপকূলীয় এলাকার জনসাধারণকে নিকটবর্তী আশ্রয়কেন্দ্রে স্থানান্তর কার্যক্রম শুরু করা হয় এবং সর্বমোট ১৬ লক্ষ ৪০ হাজার ৪১৭ জনকে আশ্রয়কেন্দ্রে স্থানান্তর সম্ভব হয়।
তিনি জানান, ৬ মে পর্যন্ত বিভিন্ন জেলায় ১৪ হাজার ৫০ মে. টন চাল, ৩ কোটি ৬৩ লক্ষ টাকা, ৪১ হাজার প্যকেট শুকনা খাবার, ৪ হাজার বান্ডিল ঢেউটিন এবং ১ কোটি ২০ লক্ষ টাকার গৃহনির্মাণ মঞ্জুরী প্রদান করা হয়।
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাবে ভোলায় ১ জন, নোয়াখালীতে ১ জন, লক্ষ্মীপুরে ১ জন এবং বরগুনায় ২ জন – মোট ৫ জন নিহত হয় এবং ৬৩ জন আহত হয়। পটুয়াখালীতে ১৬৫ টি গবাদি পশু নিখোঁজ যার অনেকগুলো পরবর্তীতে খোঁজ পাওয়া যায়। ২৩৬৩ টি ঘরবাড়ি সম্পূর্ণ এবং ১৮৬৭০ টি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ঘূর্ণিঝড় ফণীতে আক্রান্ত ফসলী জমির পরিমাণ ৬৩০৬৩ হেক্টর এবং মোট ক্ষতিগ্রস্ত ফসলী জমির পরিমান ১৮০৪ হেক্টর।
প্রতিমন্ত্রী আরও জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধের পরিমান ২১.৯৫ কি.মি. এবং প্লাবিত গ্রামের সংখ্যা ৩৬টি।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডাঃ মোঃ এনামুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় কৃষিমন্ত্রী ড. মোঃ আব্দুর রাজ্জাক, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি এবিএম তাজুল ইসলাম, পানিসম্পদ উপমন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীম, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোঃ শাহ্ কামাল, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মোঃ আসাদুল ইসলাম, খাদ্য সচিব শাহাবুদ্দিন আহমদ, পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক সচিব আব্দুল্লাহ আল মোহসিন চৌধুরী, পানিসম্পদ সচিব কবির বিন আনোয়ারসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিগণ অংশগ্রহণ করেন।