ঝিনাইদেহের শৈলকুপায় আবারো যৌতুকের টাকার দাবিতে এক গৃহবধূকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। ঝিনাইদহ শহরের পুরাতন হাটখোলা পাড়ার বাবুল মোল্লার মেয়ে ও এক সন্তানের জননী রুমকি খাতুনকে (২৪) যৌতুকের টাকার দাবিতে নির্যাতন করে ওড়নায় ফাঁস দিয়ে হত্যা করে স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন।
শনিবার (৪ মে) শৈলকুপা থানার ভাটই বাজার সংলগ্ন ভগবান নগর গ্রামে ঘটনাটি ঘটে। ঘটনার পর থেকেই আসামিরা সবাই পলাতক রয়েছে।
এ বিষয়ে শৈলকুপা থানায় একটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সংশধোন ২০০৩) এর ১১(ক)/৩০ রুজু করা হয়েছে। যার মামলা নং ০৪, তারিখ ০৪/০৫/২০১৯ ইং। কিন্তু দুই দিন হয়ে গেলেও আসামি গ্রেফতার না হওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েছে নিহতের পরিবার।
মামলার আসামিরা হলেন- শৈলকুপা থানার ভগবাননগর গ্রামের জাকির হোসেন মোল্লা (৩৫), হারুন মোল্লা (৫৫), মোছাঃ ডালিম বেগম (৫০), মোঃ ফজলুর রহমান মোল্লাসহ (৫০) অজ্ঞতনামা আরও ২/৩ জন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, আসামি জাকির হোসেন মোল্লার সাথে প্রায় ৭ বছর পূর্বে বাবুল মোল্লার মেয়ে রুমকি খাতুন (২৪) এর বিবাহ হয়। সাংসারিক জীবনে তাদের একটি ৩ বছরের ছেলে সন্তান আছে, যার নাম জিহাদ মোল্লা। বিয়ের সময় রুমকি খাতুনের সাংসারের কথা চিন্তা-ভাবনা করে বাবুল মোল্লা ২টি সোনার চেন (২ ভরি), নগদ ৫০,০০০ টাকা, একটি সোনার আংটি, ১ জোড়া কানের দুলসহ সর্বমোট ২,০৪০০০ টাকার মালামাল প্রদান করা হয়।
বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই পুনরায় রুমকি খাতুনের নিকট ৪০,০০০ টাকা দাবি করতে থাকে স্বামিসহ শ্বশুরবাড়ির পরিবারের সদস্যরা। দাবিকৃত যৌতুকের টাকা দিতে অস্বিকার করলে রুমকিকে শারীরিক নির্যাতন করতে থাকে এবং তাকে খুন করে ফেলবে বলে হুমকি প্রদান করে।
৪ মে সকাল অনুমান ৯টার সময় আসামিরা রুমকি খাতুনের কাছে আবারও যৌতুকের টাকা দাবি করলে সে যৌতুকের টাকা দিতে অস্বিকার করে। এতেই রুমকিকে ব্যাপকভাবে মারপিট করিয়া ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়।
ওইদিন সকালে আসামিরা প্রতিবেশীদের দিয়ে মেয়ের বাবা বাবুল মোল্লাকে জানায় যে, রুমকি খাতুন মারা গেছে। সংবাদ পেয়ে বাবুল মোল্লা সবাইকে নিয়ে আসামিদের বাড়িতে গিয়ে দেখতে পায়- মেয়ে রুমকি খাতুন বসতঘরের পাশের রুমের আড়ার সাথে ঝুলন্ত অবস্থায় এবং রুমকির বাম পায়ের হাটুর নিচে ও ডান হাতে ব্যাপক আঘাতের চিহ্ন।
এ বিষয়ে সিনিয়র এসপি (শৈলকুপা সার্কেল) তারেক আল্ মেহেদী সাংবাদিকদের জানান, এ ঘটনায় শৈলকুপা থানায় একটি মামলা হয়েছে। ভিকটিমের শরীরে নির্যাতনের চিহ্ন আছে, তারপরেও ময়নাতদন্ত রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত আসামিদের গ্রেফতার করা হবে না।
উল্লেখ্য, গত এপ্রিল মাসে শৈলকুপা উপজেলার গোয়াল খালি গ্রামে স্বামী-শ্বাশুড়ীর বিরুদ্ধে গৃহবধূকে হত্যার অভিযোগে লাশ নিয়ে সড়ক অবরোধ করে। ঝিনাইদহ সদর উপজেলার বাসীদেবপুর গ্রামে গৃহবধূ শাপলার লাশ নিয়ে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করে নিহতের পরিবার ও স্বজনরা।