Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৮ রবিবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১৫ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

বেনাপোল বন্দরে চুরির মালামাল নিয়ে হাতাহাতি 

শহিদুল ইসলাম, বেনাপোল (যশোর) প্রতিনিধিঃ
প্রকাশিত: ০৬ মে ২০১৯, ১০:৫৭ AM
আপডেট: ০৬ মে ২০১৯, ১০:৫৭ AM

bdmorning Image Preview


বেনাপোল স্থলবন্দরের বিভিন্ন পণ্যাগার থেকে মালামাল চুরির ঘটনা নতুন নয়। বন্দরের এক শ্রেণীর অসৎ কর্মকর্তা কর্মচারী বিভিন্ন পণ্যাগার থেকে মালামাল চুরির পাশাপাশি শুল্ক চুরি চক্রের কাজেও সহযোগিতা করে যাচ্ছে। কখনো কখনো এরকম ঘটনার কথা কম বেশি উদঘাটিত হলেও তার কোন শাস্তিমূলক প্রতিকার হয়না।

এরকম একটি ঘটনা আবার ঘটেছে গত ১৭ এপ্রিল বন্দরের ৩৭ নং শেড বা পণ্যাগারে। ওই শেডের ইনচার্জ সবুজ চন্দ্র রায় ওই দিন রাত্রে একটি পণ্য চালানের কিছু মাল চুরি করে সরিয়ে রাখে। এই ঘটনা শেডের পণ্য কর্মচারীরা টের পেলে বিরোধ সৃষ্টি হয়। যার পরিণতিতে চরম হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। এর পরই ওই শেডের অনেক তথ্য বেরিয়ে আসে।  

জানা গেছে, ৩৭ নং শেড এর ইনচার্জদ্বয় জাভেদ-ই বিল্লাহ ও গোলাম মোস্তফা অন্যত্র বদলি হওয়ার পর এই শেড এর দায়িত্ব প্রাপ্ত হন সবুজ চন্দ্র রায়। দায়িত্ব পাওয়ার পর বেনাপোল বন্দর এর একটি চিহিৃত শুল্ক চোর চক্রের ইন্ধনে এই লোকটি পরিচালিত হতে থাকেন। ঘোষণা বহির্ভুত মালামাল শেড অভ্যান্তরে নামানো, কম দামি মালের বদলে বেশি দামের পণ্য চালান সরবরাহ দেওয়া, মেনিফেস্ট ছাড়া মাল উঠা নামানোই সহযোগিতা করাসহ নানান অপকর্মে এই লোকটি জড়িয়ে পড়ে বলে একাধিক অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে।

এই শেড থেকে এই ব্যাক্তির ছেড়ে দেওয়া একটি পণ্য চালান কাস্টমস এর গোয়েন্দা শাখার হাতে সম্প্রতি ধরা পড়ার পর ওই পন্য চালানে অতিরিক্ত ৩০ লাখ টাকা শুল্ক আদায় করা হয়েছে। কাগজপত্র ছাড়া কাস্টমস কার্গো শাখার এন্ট্রি ছাড়াই ঢুকে পড়া হরেক রকমের শুল্ক চুরির পন্ণ্যাদি উঠা নামানোর কাজে এই শেডটি অনেকদিন যাবৎ ব্যবহৃত হয়ে আসছে বলে বন্দর এর বেশ কয়জন কর্মচারি অভিযোগ উঠিয়েছেন। 

এব্যাপারে সবুজ চন্দ্র রায়ের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে যে সব অভিযোগের কথা বলা হচ্ছে তা বানোয়াট। বরং আমি একটি পন্য চালানের খালাসকারী সিএন্ডএফ প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীর কাছ থেকে ৪টি ইনার প্যাকেজ (কসমেটিক্স, ইমিটেশন) পণ্য চেয়ে নেয়। অথচ আমাকে অহেতুক এই ঘটনার রেশ ধরে শেড ইনচার্জ হাফিজুর রহমান কিল, ঘুষি, লাথি মেরে চরমভাবে অপদস্থ করে। 

এব্যাপারে ট্রাফিক ইন্সপেক্টর হাফিজ বলেন, আসল ঘটনা ভিন্ন। প্রকৃতপক্ষে সবুজ চন্দ্র রায় এই শেড এর দায়িত্বে আসার পর থেকেই ঘোষণা বহির্ভুত পণ্য নামানো, ম্যানিফেষ্ট ছাড়া পণ্য নামানো উঠানোর কাজে সহযোগিতা করা, কমদামি পণ্য ছাড় করার অনুমতি পত্র নিয়ে পাশে থাকা দামি পণ্য সরবরাহ করার কাজে সহযোগিতা করা ইত্যকার সব অপকর্ম চালিয়ে আসছে।

বিশেষ করে শুল্ক চুরির ঘোষনা বহির্ভুত মালামাল এই লোকটির সহযোগিতায় পন্যাগারটির বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাখা হয়, যাতে চুরির প্রকৃত ঘটনা ধরা না পড়ে। আমি এসব অপকর্মের প্রতিবাদ করায় তিনি মিথ্যা মারধরের অভিযোগ করছেন। আমি এ ব্যাপারে বন্দরের ট্রাফিক পরিচালক প্রদোষ কান্তি দাসের নিকট একটি অভিযোগপত্র দাখিল করেছি।

এব্যাপারে বন্দর পরিচালককে ফোন করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। তবে উপ-পরিচালক মামুন কবির তালুকদার টেলিফেনে বলেন, এটা আমাদের একটি ইন্টারনাল ব্যাপার। আমি ঢাকায় রয়েছি, বেনাপোলে এসে এসব বিষয় কথা বলব।

এদিকে সবুজ চন্দ্র রায় এসব ঘটনার কথা যাতে সংবাদ মাধ্যমে না আসে সে ব্যাপারে বন্দর এর অপর একজন ট্রাফিক ইন্সপেক্টর খোদাবক্স লিটনকে দিয়ে মোবাইল ফোনে অনুরোধ করেন। 
 

Bootstrap Image Preview