সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার ডিগ্রি তেকানী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবনটি অবশেষে যমুনা নদীতে ধসে পড়ল। গত শনিবার সন্ধ্যা থেকে গতকাল রবিবার সকাল পর্যন্ত সময়ের মধ্যে ভবনটি ধসে পড়ে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দাবি, নিলাম প্রক্রিয়া শেষ না হওয়ায় ভবনটি আগে ভেঙে ফেলা সম্ভব হয়নি।
স্থানীয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাহিদ হাসান সিদ্দিকী জানান, ভবনের যেটুকু ধসে পড়ার বাকি আছে, আজ সোমবার নিলাম ডেকে সেটুকু ভাঙার কাজ শুরু হবে। তিনি আরও জানান, সাময়িকভাবে বিদ্যালয়টি বন্ধ হয়েছে। পরবর্তী সময়ে অস্থায়ীভাবে শিক্ষার্থীদের পাঠদানের ব্যবস্থা করা হবে।
কাজিপুর উপজেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, ১৯৩৫ সালে স্থাপিত বিদ্যালয়ে ২০০৭-০৮ অর্থবছরে প্রায় ২৩ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয় ভবনটি। প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচি পিইডিপি ২-এর আওতায় এলজিইডি কাজিপুর অফিসের তত্ত্বাবধানে একতলা ভবন নির্মাণ করা হয়। পরে ২০১৫ সালে প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচি পিইডিপি ৩-এর আওতায় প্রায় ৩৩ লাখ টাকায় এর ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণ কাজ সম্পন্ন হয়।
কাজিপুর উপজেলা প্রকৌশলী বাবলু মিয়া জানান, যমুনার ভাঙনের মুখে থাকা ভবনটি নিলামের প্রস্তুতি শেষ পর্যায়ে ছিল। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আমজাদ হোসেন জানান, এত দ্রুত বিদ্যালয় ভবনটি ধসে যাবে, সেটা জানা ছিল না।
সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শফিকুল ইসলাম জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ড কাজ করে নদীর তীরবর্তী এলাকায়, চর এলাকায় নয়। কিন্তু সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের একান্ত চেষ্টায় এবং বিশেষ বরাদ্দের মাধ্যমে ওই এলাকায় জিও ব্যাগ ডাম্পিং করে স্কুলটি শেষ রক্ষার চেষ্টা করা হয়। এতে জরুরিভিত্তিতে ব্যয় হয় ২০ লাখ টাকা। কিন্তু তাতেও শেষ রক্ষা হয়নি।
তিনি বিদ্যালয় ভবন নির্মাণ ও স্থাপনা দপ্তরগুলোকে পরামর্শ দিয়ে বলেন, বন্যাপ্রবণ ও ভাঙন এবং নদীর তীরবর্তী এলাকায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্থাপনের ব্যাপারে আরও সচেতন হতে হবে। একই সঙ্গে ভবনে স্টিল স্ট্রাকচার ব্যবহার করা দরকার। এতে বন্যা বা ভাঙন হলে ফাউন্ডেশনের ১০ শতাংশ ক্ষতি হবে। বাকি স্থাপনা খুলে অন্যত্র সরিয়ে বিদ্যালয় পরিচালনা স্বাভাবিক রাখা সম্ভব হবে।