Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৭ শনিবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

ছাত্রীদের ওড়না সরাতে বাধ্য করতেন শিক্ষক

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৫ মে ২০১৯, ০৪:৫১ PM
আপডেট: ০৫ মে ২০১৯, ০৪:৫১ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত


‘আমরা বান্ধবীরা মিলে যখন গ্রুপ ছবি তুলতাম, তখন স্যার আমাদের সঙ্গে ছবি তুলতে আগ্রহী হতো এবং আমাদেরকে ওড়না সরাতে বাধ্য করত। নানা অজুহাতে আমাদের গায়ে ও স্পর্শকাতর স্থানে হাত দিতেন স্যার। এমনকি বিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বড় ছাত্রীদের ওড়না ছাড়া নৃত্য পরিবেশনে বাধ্য করতেন স্যার’।

এভাবেই শিক্ষকের নোংরা কাজের বর্ণনা দিচ্ছিলেন গাজীপুরের কালীগঞ্জ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রীরা।

অভিযুক্ত শিক্ষক মো. আব্দুল আহেদ গাজীপুরের কালীগঞ্জ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক।

জানা যায়, বিদ্যালয়ের ছাত্রীরা ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। রোববার অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ইউএনও মো. শিবলী সাদিক।

জানা গেছে, ২০১৮ সালের ১৪ জুন বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক রাশিদা বেগমের বদলি হয়। পরে ওই বছরই সেপ্টেম্বরে সহকারী প্রধান শিক্ষক হিসেবে মো. আব্দুল আহেদ যোগদান করেন। নিয়মানুযায়ী তাকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেয়া হয়। আর দায়িত্ব পাওয়ার পরপরই বিদ্যালয়ে চলতে থাকে নানা অনিয়ম ও অব্যস্থাপনা।

এর ধারাবাহিকতায় ওই বিদ্যালয়ের ৯ম ও ১০ম শ্রেণির ছাত্রীদেরকে নানাভাবে যৌন নিপীড়ন করে আসছিলেন তিনি। কিন্তু নিপীড়নের কথা প্রকাশ করলে টেস্ট পরীক্ষায় ফেল করানোর হুমকি দিতেন আব্দুল আহেদ। সেই ভয়ে শুরু থেকে কেউ কিছু না বললেও নিপীড়ন বেড়ে যাওয়ায় ৯ম ও ১০ম শ্রেণির ছাত্রীরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে।

এছাড়াও ভারপ্রাপ্ত ওই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে সরকারি নিয়ম অবমাননা, নিজের ইচ্ছামতো ভর্তি বাণিজ্য ও অতিথি শিক্ষক নিয়োগ, সহকর্মীদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ, অতিরিক্ত ভর্তি ফি, অনিয়মিত উপস্থিতি, ভিন্ন অজুহাতে বেতনের সঙ্গে অতিরিক্ত ফি আদায়সহ নানা অনিয়ম আর অব্যস্থাপনার অভিযোগও রয়েছে।

এদিকে লিখিত অভিযোগের পর থেকে আব্দুল আহেদ বিদ্যালয়ে আসা বন্ধ করে দিয়েছেন। বর্তমানে তিনি পলাতক রয়েছেন। এ ব্যাপারে তার মুঠোফোনে একাধিকবার কল ও ক্ষুদে বার্তা পাঠিয়েও কথা বলা সম্ভব হয়নি।

অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শিবলী সাদিক বলেন, ছাত্রীদের কাছে আগেই মৌখিক অভিযোগ পেয়েছিলাম এবং বিদ্যালয় পরিদর্শন করে ঘটনার সত্যতা পেয়েছি। কিন্তু যেহেতু একটি সরকারি প্রতিষ্ঠান তাই নিয়মের মধ্যে থেকে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। তাই ছাত্রীদেরকে লিখিত অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে। তারা লিখিত অভিযোগ দিয়েছে এবং সেই প্রেক্ষিতে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ জুবের আলমকে প্রধান করে ৩ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন উপজেলা মৎস্য অফিসার মো. লতিফুর রহমান, মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার নূর-ই-জান্নাত। কমিটিকে আগামী ৭ কর্ম দিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের কথা বলা হয়েছে।

Bootstrap Image Preview