ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাবে বগুড়ার ধুনট উপজেলায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। ঝড়ের কবলে বিভিন্নস্থানে গাছের ডালপালা ভেঙে পড়েছে। এছাড়া বড় ধরনের তেমন কোনো ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি। তবে ফণীর প্রভাবে অবিরাম বৃষ্টিপাতের সঙ্গে দমকা ও ঝড়ো হাওয়া বইছে। একই সাথে শুক্রবার (৩ মে) গভীর রাত থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে।
শুক্রবার সকাল থেকে থেমে থেমে বৃষ্টি হলেও শনিবার (৪ মে) সকাল থেকে অবিরাম বর্ষণ ও দমকা হওয়া বইছে। আকাশে ঘন মেঘ। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘরের বের হয়নি। বিভিন্ন বাজার এলাকায় দোকান পাট বন্ধ ছিল। এমনকি শনিবার ধুনট সদরে হাট বারেও বেচাকেনা বন্ধ রয়েছে।
দীর্ঘ সময় ধরে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকায় বাসাবাড়িসহ বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে দুর্ভোগ নেমে এসেছে। বাসাবাড়িগুলোতে পানি সংকট দেখা দিয়েছে। দমকা হাওয়ার কারণে উপজেলার প্রায় ১০ হেক্টর জমির পাকা বোরো ধান মাটিতে হেলে পড়েছে। এতে কৃষকেরা ক্ষয়ক্ষতির আশংকা করছে।
উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আব্দুস সোবাহান বলেন, ফণীর প্রভাবে ক্ষেতের পাকা ধানের অনেক ক্ষতি হবে। এছাড়া অন্যান্য ফসলসহ প্রায় ১৩ শতাংশ জমির বোরো ধানের ক্ষতির আশংকা রয়েছে।
ধুনট পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের সহকারী জেনারেল ম্যানেজার বিজয় চন্দ্র কুন্ডু বলেন, ফণীর প্রভাবে উপজেলার ৫৭ হাজার গ্রাহক বিদ্যুৎ সুবিধা থেকে বঞ্চিত রয়েছে। শুক্রবার রাত থেকে এ উপজেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করতে প্রায় ১২ ঘন্টা সময় লাগবে।
বগুড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী আসাদুল হক বলেন, ফণীর প্রভাবে যমুনা নদীর পানি বাড়তে শুরু করেছে। তবে এতে ভয়ের কোন কারণ নেই। যমুনার চর এলাকায় পানি বৃদ্ধির ফলে কোন বিরুপ প্রভাব পড়বে না।
ধুনট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাজিয়া সুলতানা বলেন, ঘূর্নিঝড় ফণী মোকাবেলায় সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। উপজেলা পর্যায়ে কন্ট্রোল রুম থেকে প্রতিটি ইউনিয়ন পর্যায়ে সার্বক্ষণিক খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। যমুনা নদীর চর এলাকার বাসিন্দাদের জন্য বিশেষ নজদারি রাখা রয়েছে। ওই এলাকার প্রায় ৪০০ মানুষের জন্য শুকনো খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা রাখা হয়েছে।