Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০২ বৃহস্পতিবার, মে ২০২৪ | ১৮ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

ডিজিটাল মিডিয়ার সংকট ও সম্ভাবনা নিয়ে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে আইএমসির সেমিনার

কূটনৈতিক প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৪ মে ২০১৯, ০৩:৪৫ PM
আপডেট: ০৪ মে ২০১৯, ০৩:৪৫ PM

bdmorning Image Preview


গণমাধ্যমকর্মীদের বুদ্ধিবৃত্তিক ও পেশাগত উৎকর্ষের লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠিত লন্ডনভিত্তিক প্ল্যাটফর্ম ইনডেপেনডেন্ট মিডিয়া ক্লাবের আয়োজনে বুধবার ব্রিটিশ পার্লামেন্টে অনুষ্ঠিত হয় গণমাধ্যম বিষয়ক এক আন্তর্জাতিক সেমিনার।

'ওয়ার্ল্ড প্রেস ফ্রিডম ডে' উদযাপনের অংশ হিসেবে আয়োজিত এই সেমিনারের প্রতিপাদ্য ছিল 'ডিজিটাল মিডিয়া: সংকট ও সম্ভাবনা'। ব্রিটিশ পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষের কমিটি রুমে অনুষ্ঠিত এই আয়োজনের হোস্ট ছিলেন হাউজ অফ লর্ডসের ক্রস বেঞ্চ সদস্য লর্ড রবার্ট ইমস।

ইনডেপেনডেন্ট মিডিয়া ক্লাবের সভাপতি ও বিবিসি বাংলার ঊর্ধ্বতন প্রযোজক মাসুদ হাসান খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত প্যানেল আলোচনায় অংশ নেন বিবিসি বাংলার সম্পাদক সাবির মুস্তাফা, চ্যানেল ফোর নিউজের ফ্রিল্যান্স প্রযোজক বে কি হর্সব্রো, তুরস্কের টিআরটি ওয়ার্ল্ডের সাংবাদিক শামীম আরা চৌধুরী, বিবিসি নিউজের সাংবাদিক মাহফুজ সাদিক, সাপ্তাহিক জনমতের প্রধান সম্পাদক সৈয়দ নাহাস পাশা, চ্যানেল-আই বাংলাদেশের সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার মসরুর এলাহী, সম্প্রচার সাংবাদিক ও গবেষক বুলবুল হাসান এবং লন্ডনে চ্যানেল এস-এর কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স এডিটর ও একাত্তর টিভির যুক্তরাজ্য প্রতিনিধি তানভীর আহমেদ। নির্ধারিত প্যানেল সদস্যদের বাইরেও ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলংকা, ইউরোপ এবং যুক্তরাষ্ট্রের বেশ ক'জন সাংবাদিক, গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব ও সংবাদ মাধ্যমের সাথে জড়িত পেশাদার ব্যক্তিবর্গ এই আলোচনা অনুষ্ঠানে অংশ নেন। এছাড়াও প্যানেল আলোচনা শেষে গণমাধ্যম ও মানবাধিকার বিষয়ে বক্তব্য রাখেন কমনওয়েলথ ও জাতিসংঘ বিষয়ক মন্ত্রী লর্ড আহমেদ।   

অনুষ্ঠানের হোস্ট লর্ড ইমস বলেন, ‘স্বাধীন গণ মাধ্যম আজ গণতন্ত্রের প্রতীক। এই উপলক্ষে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে বিশ্বের নানা দেশ থেকে আসা সাংবাদিকদের আমি স্বাগত জানাই। তিনি বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে নানা দেশে জবাবদিহিতা নেই এমন প্রতিষ্ঠানগুলো বাক স্বাধীনতা ও সত্য প্রকাশে বাধা দান করে সাংবাদিকদের পেশাগত দায়িত্ব পালনে বিঘ্ন সৃষ্টি করছে। আমার নিজের দেশেই সম্প্রতি ২৯-বছর বয়সী এক রিপোর্টারের মৃত্যু সাংবাদিকদের ঝুঁকির কথা আবার স্মরণ করিয়ে দেয়। কিন্তু তারপরও সত্য প্রকাশ করে যে সংবাদ তা তরবারির চেয়েও ধারালো। বাদবাকি সব ব্যর্থ হলেও শুধু সেটাই কার্যকর থাকে।’

বিবিসি বাংলার সম্পাদক সাবির মুস্তাফা বলেন, গণমাধ্যমের মালিকানা, শাসন ব্যবস্থা এবং একটি সমাজ কতটুকু পরিনত আচরণ করছে সেটির উপর নির্ভর করে গণমাধ্যম ঐ ভূখণ্ডে কতটা স্বাধীন। কেবলমাত্র বহিরাঙ্গনের ভয়-ভীতি কিংবা প্রতিকূলতা নয়, বরং সেল্ফ সেন্সরশীপ গণমাধ্যমের বিকাশের পথে এক বিরাট বাধা।

ইন্ডিপেন্ডেন্ট মিডিয়া ক্লাব-এর সভাপতি মাসুদ হাসান খান বলেন, সাংবাদিকতা এখন এক বিপদজনক পেশায় পরিণত হয়েছে। সারা বিশ্বে সাংবাদিকরা এমন কিছু ঝুঁকির মুখোমুখি হচ্ছেন যা আশঙ্কাজনক। ভুয়া খবর, সাইবার হামলা, সেন্সরশিপ এবং সহিংসতা এখন সমাজে ব্যাধির রূপ নিয়েছে। সাংবাদিক হিসেবে আমাদের পেশাদারী সততা এবং গণমাধ্যমের স্বাধীনতা আমরা কিভাবে সমুন্নত রাখতে পারি তানিয়ে ঐক্যবদ্ধ হওয়া ও আলোচনা শুরু করার এটাই উপযুক্ত সময়।

তুরস্কভিত্তিক গণমাধ্যম টিআরটি'র সাংবাদিক শামীম চৌধুরী বলেন, নাগরিক সাংবাদিকতা প্রথাগত সাংবাদিকতার উপযোগিতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলেছে। ফেইসবুক কিংবা টুইটারের কল্যাণে প্রচলিত ধারার গণমাধ্যমের আগেই অনেক বড় স্টোরি ব্রেকিং নিউজ হিসেবে আমরা পেয়ে যাচ্ছি।

ইন্ডিপেন্ডেন্ট মিডিয়া ক্লাব আয়োজিত এই সেমিনারে দ্রুত-বর্ধনশীল ডিজিটাল মিডিয়ার সম্ভাবনা ও সংকট ছাড়াও কর্মক্ষেত্রে ঝুঁকি, রাজনৈতিক প্রভাব, নাগরিক সাংবাদিকতা, গণমাধ্যমের মালিকানা ও সাংবাদিকতায় নারী-পুরুষ বৈষম্যের বিষয়গুলো উঠে আসে।

অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক ও অক্সফোর্ড রাইটার্স হাউজের প্রতিষ্ঠাতা ড. এপ্রিল এলিসাবেথ পির্স, আর্জেন্টাইন বংশোদ্ভূত বৃটিশ কবি গ্যাবি স্যাম্বুচেটি, নিউজ ওয়ান ওয়ান নাইনের সম্পাদক জোবায়ের বাবু, লেখক ও সাবেক মিস আয়ারল্যান্ড মাকসুদা আক্তার প্রিয়তী, ভারতীয় সাংবাদিক ও টিভি হোস্ট রুবি ধিনগারা, পাকিস্তানী সাংবাদিক রাউফ ইউসুফজাই, শ্রীলংকা থেকে প্রকাশিত গ্রাউন্ড নিউজের সম্পাদক রাইসা উইকরিমাতুংগে এবং অক্সফোর্ড স্টুডেন্টস ইউনিয়নের সভাপতি আনিশা ফারুক।

Bootstrap Image Preview