Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০২ বৃহস্পতিবার, মে ২০২৪ | ১৯ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

অ্যালার্ট থ্রি জারি, বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর যুদ্ধবিমান ও হেলিকপ্টার স্থানান্তর

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৩ মে ২০১৯, ০৫:৫০ PM
আপডেট: ০৩ মে ২০১৯, ০৫:৫০ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত


ফণীর প্রভাবে ৬নং বিপদ সংকেত ঘোষণার পর চট্টগ্রাম বন্দরে নিজস্ব অ্যালার্ট থ্রি জারির মাধ্যমে সব ধরণের অপারেশনাল কার্যক্রম বন্ধ করা হয়েছে শুক্রবার সকালে। এছাড়াও বিমানবন্দর সংলগ্ন সার্জেন্ট জহুরুল হক ঘাটি থেকে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর যুদ্ধবিমান ও হেলিকপ্টারগুলো ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়েছে।

এরমধ্যে নির্বিঘ্নে চালু রাখা হয়েছে চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে সবধরণের বিমান ওঠানামা।

বিমান বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছেন, মহাবিপদ সংকেত ঘোষণা অথবা ফণীর আঘাত শুরু না হওয়া পর্যন্ত এ কার্যক্রম চলবে। এ জন্য ব্যাপক প্রস্তুতি রয়েছে তাদের। প্রস্তুতির মধ্যে বিমানবন্দরের বেতে (টার্মিনাল) থাকা সকল যন্ত্রপাতি নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নেয়া হয়েছে। স্পর্শকাতর স্থাপনাগুলো মজবুত প্রতিরোধ ব্যবস্থায় নিয়ে আসার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

শুক্রবার দুপুরে এমন তথ্য দিয়েছেন চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের ব্যবস্থাপক উইং কমান্ডার সারওয়ার-ই-জামান। ফণীর প্রভাবে চট্টগ্রামে জলোচ্ছ্বাসের শঙ্কা থেকে এমন প্রস্তুতি নেয়ার কারণ বলে জানান তিনি।

তিনি বলেন, সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে বে (উড়োহাজাহাজ পার্কিং) এলাকায় থাকা লেডার, ট্রলি, বিমানে ওঠানামার সিড়ি, বাগি কারসগ বিভিন্ন যন্ত্রপাতি ও যানবাহন নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে রাখা হয়েছে। এ ছাড়া টার্মিনাল ভবনের নিচতলার জরুরি সরজ্ঞামগুলো উপর তলায় স্থান্তান্তর করা হয়েছে।

শুক্রবার দুপুরের মধ্যে রাডার, এনটেনা, রানওয়ে বাতিসহ স্পর্শকাতর স্থাপনাগুলোকে মজবুত প্রতিরোধ ব্যবস্থায় মধ্যে নিয়ে আসা হয়েছে। এছাড়া ফায়ার সার্ভিস, নিরাপত্তা বিভাগসহ বিমানবন্দর সংশ্লিষ্ট সকল সংস্থাকে সর্তক ও প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

সারওয়ার-ই-জামান বলেন, আবহাওয়া অধিদপ্তরের সর্বশেষ ৬ নম্বর সতর্ক সংকেত অনুযায়ী বিমানবন্দরে এই সব সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সতর্ক সংকেতের ওপর নির্ভর করে বিমানবন্দরের অপারেশন ধাপে ধাপে বন্ধ করা হয়। মহাবিপদ সংকেত ঘোষণার আগ পর্যন্ত বিমান ওঠানামা সচল রাখা হবে। মহাবিপদ সংকেত ঘোষণার পরপরই রাডার স্টেশন বন্ধ এবং আভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক রুটের বিমান ওঠানামা পুরোপুরি স্থগিত হবে।

ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে প্রস্তুতি হিসেবে বিমানবন্দর সংলগ্ন সার্জেন্ট জহুরুল হক ঘাঁটি থেকে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর যুদ্ধবিমান ও হেলিকপ্টারগুলো ঢাকার তেজগাঁওয়ে বঙ্গবন্ধু ঘাটিতে স্থানান্তর করা হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, ক্যাটাগরি ফাইভ ঘূর্ণিঝড় শুক্রবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে আছড়ে পড়ার আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন আবহাওয়া অধিদপ্তর। বলা হচ্ছে, গত ৪০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় হতে চলেছে ফণী। নদীগুলোতে জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে অন্তত ৫ ফুট উপর দিয়ে বইছে।

এর মধ্যেই আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে আরেক আতঙ্কের কথা। ঘূর্ণিঝড় ফণী উপকূল অতিক্রম করার সময় বাংলাদেশের উপকূলীয় নিচু এলাকাগুলো স্বাভাবিকের চেয়ে ৪ থেকে ৫ ফুট বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্যানুসারে, বাংলাদেশে সবচেয়ে বড় উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস দেখা গিয়েছিল ১৯৭০ সালের প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড়ের সময়। ওই বছরের ১২ নভেম্বর ঘূর্ণিঝড়ের সময় ১০ থেকে ৩৩ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হয়েছিল চট্টগ্রামের নিচু এলাকা। ঝড় উপকূল পার হওয়ার সময় বাতাসের সর্বোচ্চ গতি ছিল ঘণ্টায় ২২৪ কিলোমিটার। ১৯৯১ সালের ঘূর্ণিঝড়ের সময়ও চট্টগ্রামে ১২ থেকে ২২ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস দেখা গিয়েছিল। ওই ঝড়ের সময় বাতাসের সর্বোচ্চ গতি ছিল ২২৫ কিলোমিটার।

আবহাওয়ার এক বিশেষ বুলেটিনে বলা হয়েছে, সামনে অমাবস্যা থাকায় উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, বরগুনা, ভোলা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরাঞ্চলে এই জলোচ্ছ্বাস দেখা যেতে পারে।

বুলেটিনে বলা হয়, ঘূর্ণিঝড় বাংলাদেশের স্থলভাগ পার হওয়ার সময় চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, ভোলা, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা জেলায় ভারি থেকে অতি ভারি বর্ষণ এবং সেই সঙ্গে ঘণ্টায় ৯০ থেকে ১১০ কিলোমিটার বেগে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।

Bootstrap Image Preview