ভারতের উড়িষ্যায় তাণ্ডব শুরু করেছে ঘূর্ণিঝড় ফণী। এখন পর্যন্ত সেখানে একজন নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। গাছ উপড়ে পরায় তার মৃত্যু হয়েছে বলে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি তাদের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানায়।
শুক্রবার (০৩ মে) স্থানীয় সময় সকাল পৌনে ৯টার সময় সেখানে আঘাত হানার সময় ফণীর গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ২০০ থেকে ২১০ কিলোমিটার।
ইতিমধ্যে রাজ্যের বেশিরভাগ এলাকা বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে। স্থানীয় ঘরবাড়ি ধ্বংসের খবরও পাওয়া যাচ্ছে। ঝড় চলতে থাকায় ক্ষয়ক্ষতি সম্পর্কে ধারণা করা যাচ্ছে না। অন্ধ্র প্রদেশের উপকূলীয় এলাকায় বেশ কয়েকটি বসতবাড়ি ধ্বংস হয়েছে বলে জানিয়েছেন সেখানকার সরকারি কর্মকর্তারা।
এদিকে ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানার পর পুরীর বেশিরভাগ এলাকা কিছুক্ষণ পানিতে ডুবে ছিল বলে জানিয়েছে এনডিটিভি। সেখানে গতরাত থেকে প্রচন্ড বৃষ্টি হচ্ছে।
ভারতীয় আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, দুপুর পর্যন্ত উড়িষ্যায় তাণ্ডব চালাবে ফণী। তারপর তা এগোতে থাকবে পশ্চিমবঙ্গের দিকে।
সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, আরও কয়েক ঘণ্টা উড়িষ্যাতেই থাকবে ঘূর্ণিঝড়। এমনিতেই উড়িষ্যার গোপালপুর, পুরী, পারাদ্বীপের মতো জায়গায় ভারী বৃষ্টি শুরু হয়েছে। পুরী থেকে শুরু করে আরও কয়েকটি জায়গায় অতিভারী বৃষ্টিপাতের খবর মিলেছে। এদিকে জরুরি ভিত্তিতে বৈঠক সেরেছেন উড়িষ্যার মুখ্যসচিব।
১৯৯৯ সালের উড়িষ্যার পারাদ্বীপে সুপার সাইক্লোনের পর এই ফণীই সব থেকে বেশি শক্তিশালী ও মারাত্মক। উড়িষ্যায় ওই সাইক্লোনে প্রাণ গিয়েছিল প্রায় ১০ হাজার মানুষের। গত ৪৩ বছরে ভারতের সামুদ্রিক অঞ্চলের দিকে এত বড় ঝড় আর ধেয়ে আসেনি।
এর আগে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় উড়িষ্যার ১১টি জেলা থেকে মানুষকে সরানো কাজ শুরু হয়। পুরী, জগৎসিংহপুর, কেন্দ্রাপাড়া, ভদ্রক, বালাসোর, ময়ূরভঞ্জ, গজপতি, গঞ্জাম, খুরদা, কটক এবং জাজপুর।
বাংলাদেশের আবহাওয়াবিদরা বলছেন, ভারতের উড়িষ্যা উপকূল দিয়ে স্থলভাগে প্রবেশ করে দেশটির পূর্বাঞ্চল দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করবে ঘূর্ণিঝড়টি।
সাগর থেকে ধেয়ে আসা ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাবে দেশের উপকূলীয় নিচু এলাকায়গুলোয় স্বাভাবিকের চেয়ে ৪ থেকে ৫ ফুট বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা রয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের বুলেটিনে বলা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড় এবং অমাবস্যার প্রভাবে উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, বরগুনা, ভোলা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরে নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৪-৫ ফুট অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।