নোয়াখালির বেগমগঞ্জ উপজেলায় প্রবাসীর মেয়ে সাথীর হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবিতে প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধন করেছে নোয়াখালীর সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন নিরাপদ নোয়াখালী চাই ও এলাকাবাসী।
আজ মঙ্গলবার বিকেল ০৪ চারটার সময় ”নিরাপদ নোয়াখালী চাই” এর একলাশপুর ইউনিয়ন শাখার সভাপতি রফিকুল মাওলা রাশেদের সভাপতিত্বে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, প্রবাসী আবুল হোসেনের কন্যা তানজিনা আক্তার সাথী (২১) দীর্ঘ দিন থেকে পাষণ্ড স্বামী সাজুর অত্যাচার সয়ে আসছে, এই পাষণ্ড স্বামী সাথীকে বারবার যৌতুকের জন্য নির্যাতন করেছে, সাথী সব মুখ বুজে সহ্য করেছে, একবার সে বাবার কাছ থেকে তিন লক্ষ টাকা নিয়ে স্বামীকে দেয়, তার কিছুদিন পরেই আবার যৌতুকের জন্য সাথীকে মারধর করে, অবশেষে গতকাল (২৯ এপ্রিল) সোমবার সকাল ১০ টার দিকে আবারো সে সাথীকে যৌতুকের জন্য চাপ দেয়, কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে সাজু বেধড়কভাবে সাথীকে পিটায় এবং মূমুর্ষ অবস্থায় সাথীর মুখে বিষ ঢেলে দেয় যাতে করে সাধারন মানুষ বোঝে যে সাথী বিষ খেয়ে মারা গেছে।
ঘটনার পর গৃহবধূ সাথীকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপালে নিয়ে গেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সে মারা যায়। স্ত্রীর মৃতদেহ রেখে ঘাতক স্বামী সাজ্জাদুর রহমান সাজু হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যায়।
এই ঘটনার পর এলাকাবাসী অনতিবিলম্বে খুনি সাজুকে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির মাধ্যমে ফাঁসি কার্যকরের জন্য সরকারের কাছে জোর দাবি জানায়।
এদিকে নিহত গৃহবধূ সাথীর স্বজনরা জানান, বেগমগঞ্জ উপজেলার একলাশপুর ইউনিয়নের জয়কৃষ্ণপুর গ্রামের আবুল হোসেনের কন্যা তানজিনা আক্তার সাথী (২১) সাথে একই গ্রামের জসিম উদ্দিন রতনের ছেলে সাজ্জাদুর রহমান সাজুর ২০১৬ সালে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে মারধর করতো সাজু।
সাথীর চাচা মিন্টু মিয়া জানান, বিয়ের সময় সাথীর বাবা মেয়েকে ৬ ভরি স্বর্ণ দেয়। বিয়ের কিছুদিন পর থেকে সাজু যৌতুক দাবি করে আসছিল। মেয়ে সুখ শান্তির কথা চিন্তা করে বাবা ৩ লক্ষ টাকা দেয় সাজুকে। এতে কিছুদিন চুপ থাকার পর সম্প্রতি ফের আবার ১০ লক্ষ টাকা যৌতুক দাবি করে। নিহতের পিতা একজন প্রবাসী। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে থানায় মামলা হয়েছে-মামলার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে টিএসআই আশিকুর রহমানকে।
এদিকে “নিরাপদ নোয়াখালী চাই” এর প্রধান সমন্বয়ক এম.সাইফুর রহমান রাসেল বলেন, এভাবে আর কত বোন অকালে জীবন হারাবে, নুসরাত জাহান রাফি হত্যার রেশ না কাটতেই আবার যৌতুকের জন্য প্রাণ দিতে হল বোন সাথীকে, সরকারের কাছে আমার আকুল আবেদন অন্তত একটা হত্যার বিচার আপনি জনসস্মুখে করেন, অপরাধীদের জনসস্মুখে ফাঁসিতে ঝুলান, দেখবেন সারা বাংলায় আর কোন অপরাধী সাহস পাবেনা অপরাধ করার, ধর্ষণ করার, খুন করার।
এ বিষয়ে বেগমগঞ্জ মডেল থানার ওসি ফিরোজ হোসাইন মোল্লা বলেন, থানায় মামলা হয়েছে, ইতোমধ্যে আমি অফিসার কে পাঠিয়েছি যেকোন মুল্যে আসামী-কে যেন গ্রেফতার করা হয়,সে যদি সত্যি অপরাধী সাব্যস্ত হয় তাহলে প্রশাসন তাকে এতটুকু ছাড় দিবেনা, অপরাধের বিচার তাকে পেতেই হবে।