কারো বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ নিতে হলে এবং জমি কেনা-বেচা করলে আল আমিনকে (৩২) নজরানা (চাঁদা) দিতে হয়। স্থানীয় শালিস মীমাংসা তাকে ছাড়া কিছুতেই সম্ভব নয়। এসব করেন প্রকাশ্যে। নিজের চায়ের দোকানে বসেন, আর গোপনে বেঁচেন ইয়াবা। সন্ধ্যা হলেই অনুগতদের নিয়ে ইয়াবা সেবনে থাকেন মগ্ন। স্থানীয় কিছু প্রভাবশালীর আদলে থেকেই দিন দিন তার অত্যাচারে যে এলাকাবাসি অতিষ্ঠ, সেই এলাকার লোকজনই তার গ্রেফতারের খবর শুনে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন।
রবিবার (২৮ এপ্রিল) এক দোকানের মালিকের কাছে চাঁদার টাকা না পেয়ে কর্মচারি জয়দল নামের একজনকে বেধরক পিটিয়ে আহত করলে তার বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ হয়। পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে সোমবার (২৯ এপ্রিল) জেলহাজতে প্রেরণ করেন।
অভিযোক্ত আল আমিন কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর উপজেলার কামারচর গ্রামের মৃত আনছর আলীর ছেলে।
থানায় অভিযোগকারী একই গ্রামের সাদ্দাম হোসেন বলেন, আলামিন আওয়ামী লীগের নাম ভাঙিয়ে এলাকায় অনৈতিকভাবে প্রভাব খাটিয়ে চলে। এলাকার কেউ জমি কিনলে বা বাড়ি বানালে তাকে চাঁদা দিতে হয়। গত কয়েক মাস আগে আমার একটি জমিসংক্রান্ত বিষয়ে ৫০ হাজার টাকা চাইলে আমি তাতে অপারগতা প্রকাশ করি। টাকা না পেয়ে সে আমার পিছে লাগে।
সাদ্দাম হোসেন বলেন, নানানভাবে হুমকি দিয়ে আমাকে ঘায়েল করতে ব্যর্থ হয়ে গত রবিবার আমার দোকানের কর্মচারী জয়দলকে একা পেয়ে মারাত্মকভাবে পেটায় আল আমিন। একপর্যায়ে সে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। পরে নিরুপায় হয়ে থানায় অভিযোগ করলে পুলিশ ঘটনার সত্যতা পেয়ে তাকে আটক করে।
স্থানীয় লোকজনের সাথে কথা হলে তারা জানায়, আলামিন নামেমাত্র চা বিক্রি করেন। কিন্তু তার আসল কাজ হচ্ছে প্রভাব খাটিয়ে মানুষের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করা ও গোপনে ইয়াবা বিক্রি করা। সন্ধ্যার পরে দলবলে এলাকার যুবকদের নিয়ে ইয়াবা সেবনে মগ্ন থাকে সে।
তিনি বলেন, সাম্প্রতিক খন্দকার বাড়ি থেকে ৬ হাজার ও একই গ্রামের ছাত্তার মিয়া জমি বিক্রি করলে তার কাছ থেকে দেড় লক্ষ টাকা চাঁদা আদায়ের ঘটনা এলাকার লোকজনের মুখে মুখে।
মুরাদনগর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মামলার তদন্তকর্তা মোহাম্মদ বাদল মিয়া বলেন, আলামিন দুষ্ট লোক। এলাকাবাসি তার জ্বালায় অতিষ্ঠ। তার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়ায় তাকে গতকাল সোমবার আটক করে জেল হাজতে প্রেরণ করেছি।