Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৮ শনিবার, মে ২০২৪ | ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

পানি আনতে প্রতিদিন কুয়ার অতলে নামেন তারা!

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৯ এপ্রিল ২০১৯, ০১:৩৪ PM
আপডেট: ২৯ এপ্রিল ২০১৯, ০১:৫৫ PM

bdmorning Image Preview


ভারতের নাশিক থেকে তিরিশ কিলোমিটার দূরের বরডে-চি-ওয়াড়ি গ্রামের নারীদের কাছে এ হল বেঁচে থাকার লড়াই। প্রয়োজনীয় পানিটুকু জোগার করতে এই আদিবাসী গ্রামের নারীরা দড়ি বেয়ে প্রতিদিন নেমে যান কুয়োর অতলে। এরপরে পানি নিয়ে আবার উঠে আসেন। 

এমনটাই গত দেড়-দুই দশক ধরে চলে আসছে ত্র্যম্বকেশ্বর মন্দিরের অদূরে আদিবাসী-অধ্যুষিত এই এলাকাগুলিতে। ভোটের মুখে নেতারাও আরো একবার পানির কষ্ট দূর করার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। শুধু বরডে-চি-ওয়াড়ি নয়, নাশিক তালুকের অন্তত ১১০টি গ্রাম পানির সমস্যায় ভুগে থাকে। অথচ নাশিকের কাছেই ইগতপুরীতে রয়েছে বৈতরণা জলাধার। এলাকার বাড়তি বৃষ্টিপাতের পানি ধরে রেখে মুম্বাইয়ে জোগান দেয় এই জলাধার।

কিন্তু প্রদীপের নীচের অন্ধকারের মতো ওই জলাধারেরই ১০ কিলোমিটারের মধ্যে থাকা গ্রামগুলি তীব্র পানির সঙ্কটে ভোগে। একাধিকবার ওই জলাধার থেকে পাইপে করে গ্রামগুলিতে পানি পৌঁছনোর পরিকল্পনা করা হলেও সেই প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়নি। এর ফলে এখনও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন জমি থেকে তিন-চারতলা বাড়ির সমান নীচে নামতে হয় ওই গ্রামগুলির নারীদের। 

জানা গেছে, ওই গ্রামগুলির বিশাল হাঁ-করা কুয়োয় একেবারে নীচে পানি পাওয়া যায়। বালতি ঝুলিয়েও নাগাল পাওয়া মুশকিল। তাই কুয়োর ভেতরের দেওয়ালের গা-বেয়ে নামানো আছে দড়ি। সেই দড়িকে দুই হাতে আর পায়ের দুই আঙুলের ফাঁকে চেপে ধরে নেমে যান নারীরা। শাড়ি পরেও দিব্যি ভারসাম্য রেখে ট্রাপিজ খেলোয়াড়দের মতো ওঠা-নামা করেন, কোনো সমস্যা হয় না তাদের। এক-এক বারে ৪-৫ লিটার পানি তুলে নিয়ে আসতে পারলেই দিনের মতো নিশ্চিন্ত। নীচে পাওয়া পানি বালতিতে ভরে দড়িতে হাল্কা টান দেন কুসুম। আর উপরে দাঁড়িয়ে থাকা মেয়ে নীতা তখন সেই বালতি টেনে নেন। এভাবেই প্রতিদিন কুয়ো থেকে পানি তুলতে দেখা যায় মেয়েদের। অথচ এ কাজটি করতে ভয় পান গ্রামের পুরুষরা।

এদিকে এই সমস্যা মেটাতে ছোট ছোট জলাধার বানানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন সিপিএম প্রার্থী জে পি গাভিট। বিশেষজ্ঞদের মতে, ওই এলাকায় চাষের জন্য মাটির তলা থেকে পরিকল্পনাহীনভাবে পানি তুলে নেওয়া চলছে দীর্ঘদিন ধরেই। এর ফলে পানির স্তর ক্রমশ নেমে গিয়েছে। দ্রুত ওই পানির স্তর ‘রিচার্জ’ না-করলে এর পরে পানি পাওয়াটাই দুষ্কর হয়ে পড়বে।

Bootstrap Image Preview