Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৮ রবিবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১৫ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

তানিয়ার মৃত্যুর ঘটনায় প্রেমিকসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা, আটক ২

রাজীবুল হাসান, ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ২৮ এপ্রিল ২০১৯, ০৫:৩৪ PM
আপডেট: ২৮ এপ্রিল ২০১৯, ০৫:৩৬ PM

bdmorning Image Preview
তানিয়া


কিশোরগঞ্জের ভৈরবে শির্ক্ষাথী তানিয়া বেগমের আত্মহত্যার ঘটনায় প্রেমিক মিজানুর রহমান বাবুসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে। মামলায় অজ্ঞাত আসামি করা হয় আরও ৪/৫ জনকে। বিয়েতে প্রেমিকের অসম্মতি ও প্রতিবেশীদের মানসিক নির্যাতনে প্রেমিকা আত্মহত্যা করেছে বলে মামলার এজাহারে অভিযোগ করা হয়।

শনিবার (২৭ এপ্রিল) রাতে তানিয়ার বাবা মিলন মীর বাদী হয়ে এই মামলাটি দায়ের করেন।

মামলার আসামিরা হলো— শ্রীনগর গ্রামের প্রেমিক মিজানুর রহমান বাবু (২৮), তার মা হেলেনা বেগম (৫০), বোন রুপালী বেগম (৩০), মধ্যেরচর গ্রামের তানিয়ার বাড়ির প্রতিবেশী শাহ আলম (৪০), প্রতিবেশী নূর আলম সরকার (৪৫), প্রতিবেশী  ফিরোজ মিয়া (৩৫), প্রতিবেশী চায়না বেগম (৪৫) ও প্রতিবেশী ফরিদা বেগম (৪০)।

এ দিকে রবিবার (২৮ এপ্রিল) দুপুরে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ২ জনকে মধ্যেরচর এলাকা থেকে আটক করেছে পুলিশ। আটককৃতরা হলো প্রতিবেশী জিহাদ ও সানোয়ার হোসেন।

আজ রবিবার তানিয়ার মরদেহ কিশোরগঞ্জে ময়নাতদন্তের পর ভৈরব নিয়ে আসা হয় এবং বিকেলে পুলিশের উপস্থিতিতে স্থানীয় ঈদগাহ মাঠে তার নামাজে জানাজা শেষে মধ্যেরচর কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।

ভৈরব উপজেলার মধ্যেরচর গ্রামের মিলন মীরের কন্যা তানিয়া বেগমের সাথে (২৩) শ্রীনগর গ্রামের আবুল কালামের ছেলে মিজানুর রহমান বাবুর দীর্ঘদিন প্রেম ছিল। তারা দু'জন ভৈরবের সাজেদা আলাল নামের একটি হাসপাতালে চাকরি করত। তানিয়া হাসপাতালে নার্সের চাকরি করলেও মিজান হাসপাতালের ফার্মিসির কর্মচারী ছিল। এ সুবাদে তাদের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে।

গত বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে মিজান তার প্রমিক তানিয়ার বাড়িতে গেলে পরিবারের লোকজন তাকে আটক করে। এসময় তানিয়ার পরিবারের লোকজন মিজানের অভিভাবকদেরকে বাড়িতে ডেকে এনে বিয়ের জন্য চাপ দেয়। এ সময় মিজান ও তার অভিভাবকরা 'আইডি কার্ড নেই' অজুহাতে বিয়েতে অসম্মতি জানায়। পরে শুক্রবার সকালে মিজানকে হাসপাতালে হস্তান্তর করা হয়।

এ ঘটনার পর শনিবার প্রতিবেশী লোকজন তানিয়ার বাড়িঘর ভাংচুর করে এবং তার মাকে গালমন্দ ও তানিয়াকে ধিক্কার ও অশ্রাব্য কথা বলে লজ্জা দিতে থাকে। এ লজ্জা ও ধিক্কার সইতে না পেরে প্রেমিকা তানিয়া বেগম গলায় ওড়না পেচিয়ে নিজের বসতঘরে আত্মহত্যা করে।

তানিয়া নার্সের চাকরির পাশাপাশি স্থানীয় জিল্লুর রহমান কলেজের অনার্সের ছাত্রী ছিলেন। তার শেষ বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষা চলছিল। ইতিমধ্যই ৫টি পরীক্ষা দেয়া হলেও আরও ৪ টি পরীক্ষা দেয়ার বাকী ছিল তার। কিন্ত পরীক্ষা শেষ হওয়ার আগেই সে দুনিয়া থেকে আত্মহত্যা করে চিরবিদায় নিল। ঘটনাটি এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।

ভৈরব থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ মোখলেছুর রহমান জানান, প্রেমিকের বিয়েতে অসম্মতি ও প্রতিবেশীদের মানসিক নির্যাতনে সে আত্মহত্যা করেছে, যা প্রাথমিক তদন্তে আমরা প্রমাণ পেয়েছি। এ ঘটনায় তার বাবা থানায় ৮ জনকে আসামি করে থানায় একটি মামলা করে। পুলিশ আসামিদেরকে গ্রেফতার করতে অভিযান চালাচ্ছে। শীঘ্রই আসামিদেরকে গ্রেফতার করে আইনগতভাবে ব্যবস্থা নিবে বলে জানান তিনি।

Bootstrap Image Preview