Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৯ সোমবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১৫ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

মনোহরদীতে আনসার কমান্ডার নিয়োগে বেপরোয়া ঘুষ আদায়ের অভিযোগ

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৭ এপ্রিল ২০১৯, ১০:৪০ PM
আপডেট: ২৭ এপ্রিল ২০১৯, ১০:৪০ PM

bdmorning Image Preview


নরসিংদীর মনোহরদী উপজেলা আনসার ও ভিডিপি কর্মকর্তা বিভূতি ভূষন প্রামাণিক ও প্রশিক্ষক নাজমুল ইসলামের বিরুদ্ধে আবারো বেপোরোয়া ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। এর আগে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটকেন্দ্রে আনসার সদস্য নিয়োগে প্রায় সাত লাখ টাকা ঘুষ আদায়ের বিষয়ে প্রথম সারির জাতীয় দৈনিকগুলোতে এই চিত্র উঠেছিল।

তাদের ঘুষ আদায়ের বিষয়টি সংবাদমাধ্যমে ব্যাপকভাবে প্রকাশ হলেও বিভাগীয় কোন ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় এখন কার্যালয়ে বসেই প্রকাশ্যে এসব উৎকোচ গ্রহণ করা হয়। গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনেও প্রায় বারো’শ আনসার সদস্যের কাছ থেকে আট লাখ টাকা ঘুষ আদায়ের অভিযোগ রয়েছে এই দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।

সম্প্রতি সারাদেশে প্রত্যেক উপজেলায় একজন কোম্পানী কমান্ডার, একজন সহকারী কোম্পানী কমান্ডার, একজন পুরুষ কোম্পানী কমান্ডার ও একজন নারী কোম্পানী কমান্ডার এবং প্রত্যেক ইউনিয়নে একজন আনসার কমান্ডার ও একজন সহকারী কমান্ডার পদে স্থায়ী নিয়োগ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। সে হিসেবে মনোহরদী উপজেলার ১২টি ইউনিয়নে ২৪ জনসহ মোট ২৮ জন আনসার কমান্ডার নিয়োগ করা হবে।

যদিও আগে থেকেই এই পদগুলোতে যেসব আনসাররা কাজ করতো তাদেরকে কোন প্রকার নিয়োগপত্র ও সম্মানী দেয়া হতো না। এখন থেকে সরকার এসব পদে স্থায়ী নিয়োগসহ প্রতিমাসে সম্মানী দেয়া সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এসব পদের প্রার্থী নির্বাচন করে তাদের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠাতে উপজেলা আনসার ও ভিডিপি কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেয়া হয়।

এই দায়িত্ব পালনের সুযোগে উপজেলা আনসার ও ভিডিপি কর্মকর্তা বিভূতি ভূষন প্রামাণিক ও উপজেলা প্রশিক্ষক নাজমুল ইসলামের পোয়া বারো। তারা আনসার কমান্ডার পদের জন্য ২৫-৩০ হাজার টাকা এবং সহকারী কমান্ডার পদের জন্য ১৭-২০ হাজার টাকা করে প্রত্যেকের কাছ থেকে প্রায় ছয় লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।

কর্মকর্তাদের চাহিদা অনুযায়ী টাকা না দেওয়ায় দীর্ঘদিন ধরে বিনা পয়সায় দায়িত্ব পালন করা যোগ্য ব্যক্তিদের বাদ দিয়ে টাকার বিনিময়ে এই পদে নতুন ও অনভিজ্ঞ লোকদের নিয়োগ দেয়ার অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে।

বিভিন্ন ইউনিয়নের ভুক্তভোগী আনসার সদস্যরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, উপজেলা আনসার ও ভিডিপি কর্মকর্তা বিভূতি ভূষণ প্রামাণিক ও প্রশিক্ষক নাজমুল ইসলাম মনোহরদী উপজেলায় যোগদান করার পর থেকে এ অফিসে ঘুষ লেনদেন যেন নিয়মে পরিণত হয়েছে। আনসার সদস্যদের সরকারীভাবে বিনামূল্যের বিভিন্ন প্রশিক্ষণে পাঠানো, দূর্গাপুজা ও নির্বাচনী দায়িত্ব দেয়ার নামে নিরীহ আনসার সদস্যদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের ঘুষ আদায় করে থাকেন এই দুই কর্মকর্তা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন আনসার সদস্য বলেন, আমি দীর্ঘদিন ধরে বিনা পয়সায় ইউনিয়ন আনসার কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছি। এখন স্থায়ী নিয়োগ কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর আমার পদ স্থায়ী করতে উপজেলা প্রশিক্ষক নাজমুল ইসলাম আমার কাছে ২৫ হাজার টাকা দাবি করেন। সে অনুযায়ী কয়েকদিন আগে ১৫ হাজার টাকা দিয়েছি। কাজ সম্পন্ন হলে বাকী ১০ হাজার টাকা দিব।

অন্য আরেকজন আনসার সদস্য আক্ষেপ করে বলেন, এই বাহিনীকে ভালোবাসি বলে নিজের শ্রম, অর্থ-সম্পদ বিনামূল্যে ব্যয় করেছি। অথচ সকল যোগ্যতা থাকা সত্বেও নিজের সন্তানের নিয়োগের জন্য কর্মকর্তাদের ২৫ হাজার টাকা দিতে হয়েছে।

বিষয়টি নিয়ে উপজেলা আনসার ও ভিডিপি কর্মকর্তা বিভূতি ভূষণ প্রামাণিকের সাথে মুঠোফোন যোগাযোগ করলে তিনি প্রাতিবেদককে তার অফিসে যেতে বলেন।

মনোহরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাফিয়া আক্তার শিমু বলেন, আনসার ও ভিডিপি অফিসের অনিয়মের বিষয়টি আমি মৌখিকভাবে জানতে পেরেছি। তবে লিখিত অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Bootstrap Image Preview