শ্রীলঙ্কার ইস্টার্ন প্রদেশের বাত্তিকালোয়া শহরের বাসিন্দা রমেশ রাজু (৪০)। ইস্টার সানডের দিন সকালে স্ত্রী ক্রিশানথিনি ও দুই সন্তান রুকশিখা (১৪) ও নিরুবানকে (১২) নিয়ে শহরের জিয়ন গির্জায় যান প্রার্থনায় অংশগ্রহণ করতে। এ সময় গির্জায় এক হামলাকারীকে ঢুকতে বাধা দেন তিনি। যার ফলে ৪৫০ জন মানুষের প্রাণ বাঁচান রমেশ। তবে হামলায় নিহত হন তিনি।
বুধবার প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে এসব কথা জানায় যুক্তরাজ্যের গণমাধ্যম বিবিসি।
এতে বলা হয়, গির্জা প্রাঙ্গণে একটি বড় ব্যাকপ্যাক বহনকারী এক অপরিচিত ব্যক্তির সঙ্গে কথা হয় রমেশের। এই ব্যক্তি তাকে জানান, তার ব্যাকপ্যাকে একটি ভিডিও ক্যামেরা আছে। তিনি ভেতরে গিয়ে প্রার্থনাকারীদের দৃশ্যধারণ করতে চান।
এই বিষয়ে ক্রিশানথিনি বলেন, এই অপরিচিত ব্যক্তির কথায় আমার স্বামীর মনে খটকা লাগে। তিনি এই ব্যক্তিকে বলেন যে ভেতরে যেতে হলে প্রথমে তাকে অনুমতি নিতে হবে। কথোপকথনের একপর্যায়ে আমার স্বামী তাকে সেখান থেকে চলে যেতে বাধ্য করেন।
এরপর ক্রিশানথিনি গির্জার দিকে এগিয়ে যান। ইস্টার সানডে উপলক্ষে সেখানে ৪৫০ জনের মতো মানুষ জড়ো হয়। হঠাৎ তিনি একটি বিকট শব্দ শুনতে পান। আশেপাশের কিছু ভবনে আগুন ধরে যাওয়ায় প্রাণ বাঁচাতে ছোটাছুটি শুরু করে দেয় সবাই।
ক্রিশানথিনি এবং তার পরিবার গির্জা প্রাঙ্গণ থেকে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে তারা রমেশের খোঁজে ছুটে যায় আশেপাশের হাসপাতালগুলোতে। কয়েক ঘণ্টা খোঁজাখুঁজির পর তারা তার মরদেহ খুঁজে পায়। ঠিকাদার রমেশ ঘটনাস্থলেই মারা যান।
সোমবার রমেশকে কবর দেয়া হয়। এসময় স্থানীয় পুলিশ সদস্যরা তার প্রতি সম্মান প্রদর্শন করতে উপস্থিত হন। রমেশ নিজে বাঁচতে না পারলেও অনেক মানুষের জীবন বাঁচাতে পেরেছেন।
গত ২১ এপ্রিল ইস্টার সানডে উদযাপনের সময় শ্রীলঙ্কার তিনটি গির্জা, চারটি হোটেল ও একটি চিড়িয়াখানায় বোমা হামলায় এ পর্যন্ত ২৫৩ জন নিহত হয়েছেন।