ইস্টার সানডেতে সিরিজ বোমা হামলার ঘটনায় একের পর এক ভুল করে যাচ্ছে শ্রীলংকার পুলিশ। প্রথমে হামলায় নিহতদের সংখ্যা বলা হয়েছিল ৩৫৯ জন। কিন্তু পরে পুণর্বিবেচনা করলে ১০০ কমে গেছে।
বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) এক মার্কিন মুসলিম মানবাধিকার কর্মীর ছবি সন্দেহভাজন হিসেবে প্রচার করা হয়েছে। পরে সেই ভুল স্বীকার করে নিয়েছে দেশটির পুলিশ।
নিহতের সংখ্যা বেঠিক হওয়ার পেছনে আক্রান্ত শরীরের বিভিন্ন অংশ শনাক্ত নিয়ে জটিলতাকে দায়ী করা হয়েছে। দেশটির উপপ্রতিরক্ষামন্ত্রী রাবন বিজয়াবধন বলেন, এতে নিহতের নতুন সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৫৩ জন। আগে যেটি ধরা হয়েছিল ৩৫৯।
আরও শত শত মানুষ আহত হওয়ার কথাও জানিয়েছিলেন কর্মকর্তারা। হামলায় নিহতদের বেশিরভাগই শ্রীলংকান। তবে হতাহতদের মধ্যে অনেক বিদেশিও আছেন বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
শ্রীলংকার স্বাস্থ্য বিভাগের মহাপরিচালক অনিল জাশিং বলেন, নিহতের সংখ্যা ২৫০ থেকে ২৬০ হতে পারে। সেখানে নিহতদের শরীরের অংশগুলো ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ছিল, তা যথাযথভাবে শনাক্ত করতে জটিলতায় পড়তে হয়েছে।
বার্তা সংস্থা এএফপির খবরে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার ছয় সন্দেহভাজনের ছবিসংবলিত একটি প্রচারপত্র বিলি করা হয়েছে। যাতে তিনজন পুরুষ ও তিনজন নারী রয়েছেন। রবিবারের হামলায় যোগসাজশের অভিযোগে তাদের হন্যে হয়ে খোঁজা হচ্ছে বলে এতে বলা হয়।
এই ছয়জনের ভেতর একটি নাম হচ্ছে আবদুল কাদের ফাতিমা খাদিজা। এ হামলার ঘটনায় জেরা করতে তার খোঁজ চাওয়া হয়েছে প্রচারপত্রে।
কিন্তু বিপত্তি বেধেছে ছবিতে গিয়ে। কারণ সেখানে শ্রীলংকান বংশোদ্ভূত মার্কিন মুসলিম নারী আমারা মজিদের ছবি দেয়া হয়েছে।
মুসলমানদের বিরুদ্ধে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অবিরাম ক্ষোভ ও বিদ্বেষের প্রতিবাদ জানাতে ২০১৫ সালে তাকে খোলা চিঠি দিয়েছিলেন এই আমারা মজিদ।
নিজের ফেসবুক পেজে আমারা মজিদ লিখেছেন, হ্যালো, সবাইকে বলছি- শ্রীলংকার ইস্টার সানডে হামলায় একজন সন্দেহভাজন হিসেবে আমাকে ভুলভাবে তুলে ধরা হয়েছে।
তিনি বলেন, এটা পুরোপুরি ও পরিষ্কারভাবে মিথ্যা। আমি খোলাখুলিভাবে বলছি- মুসলমান সম্প্রদায় এই ইস্যুতে ব্যাপকভাবে নজরদারির শিকার হচ্ছেন।
বৃহস্পতিবার শ্রীলংকান পুলিশ জানায়, আবদুল কাদের ফাতিমা খাদিজার নামের পাশে যে ছবিটি ছাপা হয়েছে, তিনি ঘটনার সঙ্গে জড়িত কেউ নন, তাকে জেরার জন্য খোঁজা হচ্ছে না।
পুলিশ জানায়, কেবল আবদুল কাদের ফাতিমা খাদিজাকে জেরার জন্য খোঁজা হচ্ছে।