Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০৩ শুক্রবার, মে ২০২৪ | ২০ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

পিরোজপুরে প্রসূতির শরীরে ভাঙ্গা সুই রেখে সেলাই!

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৩ এপ্রিল ২০১৯, ১২:৩৪ PM
আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০১৯, ১২:৩৪ PM

bdmorning Image Preview


পিরোজপুরের স্বরূপকাঠিতে নার্সের অবহেলায় প্রসূতির প্রসবস্থানে ভাঙা সুই রেখে সেলাইয়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নার্স গৌরি সাহার বিরুদ্ধে।

ভুক্তভোগী ওই রোগী সোমবার নার্স গৌরি ও সুমিত্রাকে দায়ী করে বিচার চেয়ে অত্র হাসপাতালের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। প্রসূতি সোনিয়া বেগম নেসারাবাদ উপজেলার পূর্ব জগন্নাথকাঠি গ্রামের রিকশাচালক মনির হোসেনের স্ত্রী।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তা ডা. তানভীর আহম্মেদ সিকদার জানান, এ ব্যাপারে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে তাদের প্রতিবেদন দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

গত ৫ মার্চ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সন্তান জন্ম দেয়ার সময় তার প্রসবস্থানে ক্ষত সৃষ্টি হলে স্টাফ নার্স গৌরি রানী হালদার ও সুমিত্রা হালদার সেখানে সেলাই করে ব্যান্ডেজ করে দেন।

এ ঘটনার এক মাসেরও বেশি সময় অতিক্রম হওয়ার পর গত ১৭ এপ্রিল উপজেলার একটি বেসরকারি প্রাইভেট ক্লিনিকের নার্সের অস্ত্রোপচারে ঘটনাটি ধরা পড়ে। বেসরকারি ক্লিনিকটির একজন নার্স দরিদ্র প্রসূতির সেলাই করা স্থানে অস্ত্রোপচার করে ভাঙা সুচটি বের করেছেন। সরকারি হাসপাতালে গৌরির অবহেলাজনিত চিকিৎসায় বর্তমানে রোগী সোনিয়া বেগমের (২৬) জীবনমৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। তবে অভিযোগ অনেকটা অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত নার্স গৌরি সাহা।

দরিদ্র প্রসূতি সোনিয়া বেগমের অভিযোগ, গত ৪ মার্চ সন্তান প্রসবের জন্য সোনিয়া উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হন। পর দিন ৫ মার্চ হাসপাতালের নার্স গৌরি ও সুমিত্রার তত্ত্বাবাধনে সোনিয়ার নরমাল ডেলিভারিতে একটি মেয়েসন্তান জন্ম দেন তিনি। তখন নার্সরা ডেলিভারিতে কাটাছেঁড়া করেন।

সন্তান প্রসবের পর কাটাস্থানে সেলাই করার সময় সুই ভেঙে ভেতরে রয়ে যায়। পরে সোনিয়া হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফেরার পর থেকেই তার সেলাইয়ের জায়গায় ক্রমেই ব্যথা অনুভব করতে থাকেন এবং ক্রমেই অসুস্থ হয়ে পড়েন।

সোনিয়া এ নিয়ে অত্র হাসপাতালের চিকিৎসক আসাদুজ্জামানের কাছে একাধিকবার এসে চিকিৎসা করিয়ে তার দেয়া ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী ওষুধ সেবন করলেও তিনি কোনোভাবেই সুস্থ হচ্ছিলেন না।

পরে নিরুপায় হয়ে স্থানীয় একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে গিয়ে সমস্যার কথা বলেন। সেখানকার ক্লিনিকের চিকিৎসক রোগীর সেলাইয়ের জায়গায় একটি ক্ষুদ্র অস্ত্রোপচার করে ভাঙা সুচটি বের করেন।

অভিযুক্ত নার্স গৌরি সাংবাদিকদের জানান, ওই দিন হাসপাতালে সোনিয়ার ডেলিভারি তিনি করেছেন, তবে অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে তার সেলাইয়ের স্থানে সুই ভেঙে থেকে যেতে পারে এবং ঘটনা যদি তাই ঘটে থাকে, তা হলে গৃহবধূ সোনিয়া কেন তার সঙ্গে যোগাযোগ করেননি। এ জন্য বিষয়টি তিনি ষড়যন্ত্রমূলক বলে দাবি করছেন।

তবে অভিযোগকারী সোনিয়া বলেন, নার্স গৌরি ভালোভাবে তার ডেলিভারি করার পরিবর্তে কোনো রকমে চিকিৎসা দিয়ে তার কাছ থেকে ১৪০০ টাকা বকশিশ রেখেছেন। ডেলিভারির পর সোনিয়া শরীরের অসুস্থতার কথা নার্স গৌরিকে জানানোর জন্য বারবার হাসপাতালে এলেও তাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি।

হাসপাতালের ডা. আসাদুজ্জামান জানান, শুনেছি তার ডেলিভারিটি হাসপাতালের নার্স গৌরি ও সুমিত্রা করেছিলেন। বিষয়টি সমাধানের জন্য একবার আলোচনায় বসা হয়েছিল, উভয়পক্ষকে ডেকে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা চলছে।

Bootstrap Image Preview