Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৯ সোমবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১৫ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

ওয়াসার পানি দিয়ে শরবত বানিয়ে সেই এমডিকে খাওয়ানোর উদ্যোগ!

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২২ এপ্রিল ২০১৯, ০৫:২০ PM
আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০১৯, ০৬:৩৬ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত ছবি


ওয়াসার পানি শতভাগ সুপেয় দাবি করা ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তাকসিম এ খানকে ওয়াসার পানি দিয়ে শরবত বানিয়ে খাওয়ানোর উদ্যোগ নিচ্ছেন জুরাইনের এক যুবক।

এ বিষয়ে তিনি তার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে একটি স্ট্যাটাস দেন। শনিবার (২০ এপ্রিল) রাতে তার ওই স্ট্যাটাসে বলেন, ‘ওয়াসার এমডির জন্য জুরাইনের ওয়াসার পানি দিয়ে লেবুর শরবত বানাইয়া ওনার অফিসে যাওয়ার প্রস্তাব রাখছি জুরাইনবাসীর কাছে....

স্ট্যাটাসের ক্যাপশনে তিনি লিখেছেন, ‘ওয়াসার পানি শতভাগ সুপেয়’ -এমডি, ঢাকা ওয়াসা। এই কথার ন্যূনতম প্রতিক্রিয়া স্বরূপ ঢাকার প্রতিটা পাড়া মহল্লায় আওয়াজ উঠুক।

মিজানুর রহমানের ফেসবুক স্ট্যাটাস

তার ওই ফেসবুক স্ট্যাটাসটি সহমত জানিয়ে অনেকেই নিজের টাইমলাইনে পোস্টটি লিখেছেন।

এ বিষয়ে মিজানুর রহমানের সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, সত্যি সত্যি তিনি আগামীকাল (২৩ এপ্রিল) ওয়াসার পানি নিয়ে সকাল ১১টায় কারওয়ান বাজারে ওয়াসা ভবনে যাবেন।

এজন্য মঙ্গলবার সকাল ৯টায় জুরাইন রেলগেটে অংশগ্রহণে আগ্রহীদের জমায়েত হতে বলেছেন। ওয়াসার এমডির এমন বক্তব্যে ক্ষুব্ধ হন রাজধানীর জুরাইনবাসী।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, জুরাইনে ওয়াসার পানি এতোটাই অপরিচ্ছন্ন ও দুর্গন্ধযুক্ত যে এলাকাবাসীর অনেকেই ঢাকা ওয়াসার পানি খাওয়ার কাজে ব্যবহার করেন না।

এজন্য এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে ওয়াসার এমডিকে নিজ বাসা থেকে ওয়াসার পানি নিয়ে শরবত খাওয়ানোর উদ্যোগ নিয়েছেন মিজানুর রহমান নামের এক বাসিন্দা।

তার সঙ্গে আর কেউ যাবেন কিনা প্রশ্নে তিনি বলেন, কতজন যাবেন যে সংখ্যাটা এখন বলা যাচ্ছে না। তবে অনেকের সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছে। এদের মধ্যে ১০/১২ জন আমার সঙ্গে যাবেন বলে কথা দিয়েছেন। তারা সবাই জুরাইনের বাসিন্দা।

ওয়াসার পানি সুপেয় বলে এমডির এমন দাবির পরেই কি এই উদ্যোগ নিলেন? এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, জ্বী। কারণ ওয়াসার পানি সুপেয় হলে জুরাইনে যে পানি আসে সেটা কেন পানের অযোগ্য!

এ পানি তার পরিবার ও আশপাশের প্রতিবেশিরা ফুটিয়েও খান না বলে জানান তিনি।

তিনি বলেন, আমরা জুরাইনবাসীরা ওয়াসার পানি শুধুমাত্র গোসল ও ধৌত কাজে ব্যবহার করি। পানের জন্য এলাকার মসজিদে স্থাপিত গভীর নলকুপের পানি ব্যবহার করি।

তিনি হতাশার সুরে অভিযোগ করেন, জুরাইন কি ঢাকা ওয়াসার অর্ন্তগত নয়? কারওয়ান বাজারে গিয়ে ওয়াসার এমডিকে এই প্রশ্নটাই করব। আর যদি তাই হয় তাহলে এই এলাকার পানি সুপেয় তো দূরের কথা পানের অযোগ্য কেন?

কিছুটা ক্ষুব্ধ হয়েই তিনি জানান, এমডি যদি আমাদের পানি দেখে পানের অযোগ্য বলে স্বীকার করেন তবে আমরা চাইব যত বছর ধরে আমাদেরকে এমন নোংরা ও দূষিত পানি সরবরাহ করা হচ্ছে ততদিনের ওয়াসা বিল টাকা আমাদের ফেরত দিক।

মিজানুর রহমানের এমন বক্তব্যে তাকে জিজ্ঞেস করা হয় যে, এ বিষয়ে ঢাকা ওয়াসায় এলাকাবাসী কোনো অভিযোগ করেছে কিনা।

জবাবে তিনি বলেন, এ বিষয়ে ঢাকা ওয়ায় আগে পরে এলাকার অনেক মানুষ লিখিত ও মৌখিক অভিযোগ করেছে। ২০১২ সালে এ বিষয়ে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে একটি দরখাস্ত করা হয়। ওই দরখাস্তে প্রায় সাড়ে ৩ হাজার স্থানীয়ের গণস্বাক্ষরসহ মডজোন-৭ এবং এমডি তাকসিম খানের সঙ্গে দেখা করে এলাকাবাসী। এ সময় তারা তাদের দুর্দশার কথা জানায়। সেই অভিযোগের পর ৭ বছর পেরিয়ে গেলেও অবস্থার উন্নতি হয়নি।

তার ওই ফেসবুক স্ট্যাটাসটি সহমত জানিয়ে অনেকেই নিজের টাইমলাইনে পোস্টটি লিখেছেন।

এ সময় মিজানুর রহমান জানান, শনিবারে ওই স্ট্যাটাসের পর তিনি জানতে পারেন রাজধানী আরও কয়েকটি এলাকায়ও এমন পরিস্থিতি চলছে।

ফেসবুকে তাকে অনেকেই জানিয়েছেন তারাও ভুক্তোভোগী। এজন্য মঙ্গলবার তার এই উদ্যোগে সামিল হতে সেসব ভুক্তোভোগীকে যোগদানের আহ্বান জানান তিনি।

Bootstrap Image Preview