যশোরের শার্শা উপজেলার শ্যামলাগাছি গ্রামের সুমন বিশ্বাস ও আরিফা সুলতানা ইতি দম্পতির প্রথম সন্তান হয় স্বাভাবিকভাবেই। চলতি বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারি খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে একটি ছেলে সন্তান প্রসব করেন ইতি। এরপর তিনি বাড়িতে চলে আসেন। প্রথম সন্তান জন্মের ২৬ দিন পর যশোরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে আরও দুটি সন্তানের জন্ম হয়। এদের মধ্যে একজন ছেলে অপরজন মেয়ে শিশু।
এ ঘটনায় এলাকাজুড়ে আলোড়ন তৈরি হয়েছে। প্রতিদিন কেউ না কেউ এই তিন বাচ্চাকে দেখতে বাড়িতে ভিড় করছেন।
শিশুদের বাবা সুমন বলেন, আল্লাহর নেয়ামত একসঙ্গে তিন সন্তান পেয়ে আমরা খুশি হয়েছি। অনেক মানুষ বাড়িতে আসে প্রতিদিন তাদের দেখতে। স্ত্রীর বুকের দুধে হচ্ছে না বাচ্চাদের। আয়-রোজগার সীমিত বলে তাকেও (স্ত্রী) পুষ্টিকর খাবার দিতে পারছি না। এছাড়া বাচ্চাদের জন্যে পাউডার দুধ কিনতে হচ্ছে। এক কৌটা দুধ ৫৩০ টাকা লাগে, যায় ১৫ দিন। শিশুরা ছোট সেকারণে এখনও তেমন খেতে পারে না। আস্তে আস্তে বড় হচ্ছে, দুধের যোগানও বেশি দিতে হবে। আল্লাহ জানে কীভাবে তাদের মুখে খাবার তুলে দেব।
শ্যামলাগাছি গ্রামে একটি টিনশেড বাড়িতে ভাড়া থাকেন এ দম্পতি। এ অবস্থায় সীমিত আয়ে সংসার ঠিকমতো চালানো বেশ কষ্টসাধ্য হয়ে যাচ্ছে বলে তিনি জানান।
শিশুদের মা আরিফা সুলতানা ইতি বলেন, তিন সন্তান নিয়ে আমরা খুশি। কিন্তু বাচ্চারা দুধের কষ্ট পাচ্ছে। বুকের দুধে তাদের পেট ভরছে না। সন্তানদের বাবাও স্বল্পআয়ের মানুষ। কী যে হবে, বুঝতে পারছি না।
সুমন বলেন, প্রত্যেক বাবা-মা চান তার সন্তান যেন সুস্থভাবে বেঁচে থাকে। তাদের যেন ঠিকমত লেখাপড়া করানো যায়। এখন আমার যে আয়, তাতে এই শিশু ও তাদের মায়ের প্রয়োজনীয় খাবার সরবরাহ দুরূহ হয়ে পড়েছে। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান-মেম্বারদের কাছে বিষয়টি জানিয়েছি।
শার্শা উপজেলার শ্যামলাগাছি গ্রামের মন্টু বিশ্বাসের ছেলে সুমনের সঙ্গে একই উপজেলার পানবুড়ে গ্রামের শহিদ ইসলামের মেয়ে ইতির ২০১৪ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর বিয়ে হয়। ২০১৭ সালে তাদের প্রথম সন্তান ভূমিষ্ট হওয়ার পরপরই মারা যায়। সর্বশেষ ইতির দুটি জরায়ুতে ২৬ দিনের ব্যবধানে তিনটি সন্তান জন্ম নিয়েছে। যশোরের আদ-দ্বীন হাসপাতালের গাইনি বিভাগের ডাক্তার শীলা পোদ্দার জানান, এমন ঘটনা তিনি এ প্রথম দেখলেন। আগে কখনও শোনেননিও।