সামনে বর্ষা মৌসুম। তাই পানিতে ভাসানোর আগে ইঞ্জিন চালিত পুরোনো নৌকা মেরামত করছেন মিস্ত্রিরা।
নরসিংদী জেলার তিন দিক দিয়েই মেঘনা, হাড়িধোয়া, ব্রহ্মপুত্র আড়িয়াল খাঁ নদী অবস্থিত। তাই চরাঞ্চলের মানুষগুলি প্রতিনিয়ত ইঞ্জিন চালিত নৌকা যাতায়াত করে তাদের গন্তব্য স্থানে।
আসছে বর্ষা মৌসুম। চারদিকে বাড়বে বর্ষার পানি। গ্রামের মেঠো পথ, খাল-বিলগুলো বর্ষার পানিতে কানায় কানায় পূর্ণ হবে। আর নরসিংদী চরাঞ্চলের মানুষের বর্ষা কালের চলাফেরার প্রধান যানবাহন ইঞ্চিন চালিত নৌকা। নৌকার চাহিদা মেটাতে নৌকা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কারিগররা।
এ দিকে নরসিংদী সদর উপজেলার করিমপুর, শ্রীনগর, নজরপুর, চরদীঘলদী মানুষের যাতায়াতের একমাত্র যানবাহন হলো এই ইঞ্জিন চালিত নৌকা।
এই চারটি ইউনিয়নে প্রায় এক হাজারের অধিক ইঞ্জিন চালিত নৌকা রয়েছে। চালক ও হেলপারসহ এ পেশায় কর্মরত রয়েছে প্রায় ১২০০ মতো লোক।
করিমপুর এলাকার নৌকা মেরামতকারী মিস্ত্রি আবেদ উল হক বলেন, একটি পুরাতন নৌকা মেরামত করতে আমাদের সময় লাগে ১০-১৫ দিন। আমাদের কাছে প্রায় ২০টির মত পুরাতন নৌকা মেরামতের অর্ডার রয়েছে।
অপরদিকে রায়পুরা উপজেলার ৬ টি ইউনিয়নের মানুষ প্রতিনিয়ত চলাচল করছে এই ইঞ্জিত চালিত নৌকা দিয়ে। এই প্রান্তশালা ঘাটে ৫০০ ইঞ্জিন চালিত নৌকা রয়েছে ও মাঝি রয়েছে প্রায় ১৫০০ এর মতো। পুরাতন ১৩০ টি নৌকা মেরামত কাজে দেওয়া হয়েছে কারিগরের কাছে।
এদিকে প্রান্তশালা ঘাটে এক ইঞ্জিন চালিত নৌকার চালক কাশেম মিয়া বলেন, দীর্ঘ এক বৎসর আগে ১ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা দিয়ে নৌকাটি আমি কিনি। দীর্ঘ এক বৎসর চালানোর পর কিছু ত্রুটি দেখা দেওয়ায় বর্ষা আসার আগেই মেরামত কাজে হাত দিয়েছি।
বর্ষাকালে নৌকা ছাড়া কোন কাজ হয় না। প্রতিটি কাজে নৌকা লাগে। আর নৌকা তৈরীর কারিগররা জানালেন, বর্ষা মৌসুমে কাজ থাকে না তাই এখন আমরা নৌকা মেরামতে ও তৈরীতে ব্যস্ত সময় পার করছি।
নৌকা তৈরির কারিগররা জানালেন, বর্ষা মৌসুমে রেন্ডি, কড়াই, উড়িআম, চাম্বুল কাঠ দিয়ে নৌকা তৈরী করতে খরচ হয় এক থেকে দেড় লক্ষ টাকা। আর পানি যত বেশি হবে ততই পুরাতন নৌকা মেরামত ও নতুন নৌকা তৈরীর চাহিদাও বেশি হবে। আর আমাদের আয়ও ভাল হবে।
আষাঢ়-শ্রাবণ বর্ষাকাল হলেও বাংলাদেশে বর্ষার পানি থাকে পাঁচ মাস পর্যন্ত। এই পাঁচ মাস গ্রাম অঞ্চলের মানুষেরা স্বাচ্ছন্দে এই ইঞ্জিন চালিত নৌকা দিয়ে দৈনন্দিন কাজ করে থাকেন।