ঝিনাইদহের ৬টি উপজেলায় কোটি কোটি টাকার ইটের রাস্তা মাটিভর্তি অবৈধ লাটাহাম্বার ও ট্রাক্টর দিয়ে নষ্ট করছে প্রভাবশালী মাটি ব্যবসায়ীরা।
জেলা জুড়ে সড়কে অতিরিক্ত মাটি নিয়ে অবৈধ ট্রাক্টর চলাচল করায় ক্রমাগত গর্তের সৃষ্টি হচ্ছে। এসব মাটি বহনকারী অবৈধ ট্রাক্টর ও লাটাহাম্বার স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর কর্তৃক নির্মিত সড়ক কাঁপিয়ে চলাচল করে।
মাটিভর্তি অবৈধ লাটাহাম্বার ও ট্রাক্টর সড়কগুলোতে চলাচলের ফলে প্রতিনিয়ত রাস্তা ভেঙ্গে গর্তের সৃষ্টি হচ্ছে। ফলে সড়কে কোটি কোটি টাকার ইটের রাস্তা প্রভাবশালী মাটি ব্যবসায়ীদের মাটিভর্তি অবৈধ লাটাহাম্বার ও ট্রাক্টর চলাচলে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। এসব পিচঢালা রাস্তা ভেঙ্গে গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় একটু বৃষ্টিতে কাদা মাটির রাস্তা গলে সর্বনাশা প্যাচপ্যাচে কাদায় পরিণত হয়।
মাটিভর্তি অবৈধ লাটাহাম্বার ও ট্রাক্টর চলাচলে বৃষ্টিতে সড়কের উপরের জমে থাকা এঁটেল মাটি কাদাতে সয়লাব হয়ে যায়। সে কারণে এলাকাজুড়ে জনসাধারণ ভাঙ্গা রাস্তায় ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। এসব ভাঙ্গা সড়কগুলোতে অনেক সাইকেল চালককে সাইকেল কাঁধে তুলে নিয়ে কষ্টে সড়কে চলতে দেখা গেছে। এছাড়া অনেক মোটরসাইকেল চালক মোটরসাইকেল থেকে নেমে ধীরে ধীরে সতর্কতার সাথে কাদাময় ভাঙ্গা সড়কে মোটরসাইকেল ঠেলে নিয়ে যেতে দেখা যায়। ফলে সড়কে যাতায়াতকারীরা চরমতম দুর্ভোগ পোহায়।
স্থানীয় গ্রামবাসীরা জানায়, এমন পরিস্থিতিতে সড়ক দুর্ঘটনার আশংকা অনেকাংশে বৃদ্ধি পায়। এবার বর্ষায় অতিরিক্ত কাদায় জনসাধারণের চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়বে।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, জেলা সদরের শাগান্না ও সাধুহাটি ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রাম, ডাকবাংলা এলাকার বাদপুকুরিয়া গ্রাম ও শৈলকুপার গাবলা গ্রামের পিচের রাস্তা অবৈধ লাটাহাম্বার ও ট্রাক্টর সড়কগুলোতে চলাচলের ফলে প্রতিনিয়ত রাস্তা ভেঙ্গে যাচ্ছে।
এদিকে সদরের মধুহাটি ইউনিয়নের মামুনশিয়া গ্রামের অর্ধেক লোকজন বাজার গোপালপুরের সাথে যোগযোগের জন্য ঈদগাঁহ হতে ভায়াখালের রাস্তাটি ব্যবহার করেন। কিন্তু বর্ষা মৌসুমে জনগনের চরম দুর্ভোগে পড়তে হয়। কয়েক সপ্তাহ ধরে মামুনশিয়া গ্রামের জনৈক প্রভাবশালী ব্যাক্তি পুকুর খনন করেছেন। আর এই পুকুরের মাটি অত্র এলাকা ও পার্শ্ববর্তী জেলার কয়েকটি ইটভাটাতে নেয়ার জন্য ট্রাক্টর ও লাটাহাম্বার ব্যবহার করা হচ্ছে। অতিরিক্ত বোঝাই এবং বেপরোয়া গড়িতে চলাচলের কারণে সলিং বন্ডের ইটগুলো ভেঙে গেছে।
ইটের সলিং নষ্ট হয়ে যাবার পর সড়কের পাশে নির্মিত ফলোকটি নষ্ট করে ট্রাক্টার ও লাটাহাম্বার ব্যবহার করে রাস্তা নষ্টের ব্যাপারটি ঢাকতে অপচেষ্টা করা হয়েছে। রাস্তাটি নষ্ট হবার ফলে গ্রামবাসীর এই পথটি ব্যবহারকারীদেরকে আবারও দুর্ভোগে পড়তে হবে। বিষয়টির দিকে কর্তৃপক্ষের বিশেষ নজর আশা করছেন ভুক্তভোগী জেলার গ্রামবাসীরা। এর সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতও চলছে।