আঠেরো মাস বয়সী শিশুপুত্রের পেটে পাওয়া গেছে আরো একটি ভ্রুণ। ভারতের বর্ধমান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের চিকিৎসক নরেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে ১০ জনের চিকিৎসক দল জটিল অস্ত্রপচারে মাধ্যমে শিশুপুত্রের পেট থেকে সেই শিশু ভ্রুণ বের করতে সক্ষম হন।
চিকিৎসকদের দাবি- সুস্থ রয়েছে শিশুটি। তাকে আপাতত পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। শিশুপুত্রের অস্ত্রপচার সফল হওয়ায় খুশি শিশুটির বাবা-মা।
দেশটির হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ১ বছর ৮ মাস বয়সী শিশু পুত্রের নাম দেবনাথ মাঝি। শিশুর পরিবারের বসবাস বীরভূমের নানুরে।
শিশুপুত্রের মা লক্ষী মাঝি বলেছেন, তার ছেলে দেবনাথের পেটে শক্ত বলের মত কিছু একটা রয়েছে বলে তার মনে হচ্ছিল। গত ছয় মাসে ওই শক্ত বলের মত অংশ আরও বড় হতে থাকে। এই ঘটনায় চিন্তিত হয়ে পড়েন লক্ষীদেবী ও তার স্বামী বলরাম মাঝি।
চিকিৎসার জন্য শিশু পুত্র দেবনাথকে সঙ্গে নিয়ে তারা গত ২৩ মার্চ বর্ধমান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে আসেন। হাসপাতালের চিকিৎসক নরেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় এর কাছে শিশুপুত্রকে দেখান তার বাবা-মা।
শিশুটির পেটে হাড়জাতীয় কিছু রয়েছে বলে প্রাথমিক চিকিৎসকার সময় মনে হয় চিকিৎসকরের। এরপর চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে শিশুটিকে হাসপাতালে ভর্তি করেন পরিবার। সিটিস্ক্যান সহ অন্যান পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর চিকিৎসকরা নিশ্চিত হন শিশুপুত্রের পেটে রয়েছে আর এক শিশুর ভ্রুণ।
বৃহস্পতিবার চিকিৎসক নরেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে ১০ জন চিকিৎসক ও ১০ জন অ্যানাস্থেসিয়া স্পেশালিষ্ট অস্ত্রোপচার শুরু হয়। দু-ঘন্টার সফল অস্ত্রোপচার শেষে শিশুপুত্র দেবনাথ মাঝির পেট থেকে ওই ভ্রুণ বের করে আনতে সমর্থ হন চিকিৎসকরা।
চিকিৎসক নরেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, শিশুর পেটে যে ভ্রুণটি ছিল সেটিকে চিকিৎসা পরিভাষায় বলাহয় ‘ ফিটাস ইন ফিটু’। চিকিৎসক নরেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়ের দাবি, এটি একটি অতি বিরল ঘটনা।
তিনি বলেন, তথ্য ঘেটে জানা গেছে সাধারণত পাঁচ লক্ষ মানুষের মধ্যে একজনের এমন ধরনের ঘটনা ঘটে। চিকিৎসক জানালেন, যমজ ভ্রুণের দ্বিতীয় ভ্রুনটি অন্য ভ্রুণের পেটে চলে যাওয়াতেই এমন ঘটনা ঘটে থাকে।
তবে এ বিষয়ে চিকিৎসকদের অন্য মতও রয়েছে। চিকিৎসক নরেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘ফিটাস ইন ফিটু’ আসলে কী, তা নিয়ে এখনও বিশ্বজুড়ে গবেষণা অব্যাহত রয়েছে।