Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০৩ শুক্রবার, মে ২০২৪ | ২০ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

দেবহাটার সখিপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে পাঠদান, নতুন ভবনের দাবি

মীর খায়রুল আলম, দেবহাটা প্রতিনিধিঃ
প্রকাশিত: ১১ এপ্রিল ২০১৯, ১০:৩১ AM
আপডেট: ১১ এপ্রিল ২০১৯, ১০:৩১ AM

bdmorning Image Preview


সাতক্ষীরার দেবহাটার সখিপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শ্রেণিকক্ষ সংকট থাকায় ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে চলছে পাঠদান। আর তাই বিদ্যালয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে চলছে লেখাপড়া। এতে শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা। বর্তমানে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। বিদ্যালয়ের পুরাতন ভবনের ছাদের অধিকাংশ জায়গায় দেখা দিয়েছে ফাটল।  

মাঝে মাঝে জরাজীর্ণ ছাদের অংশ খসে পড়ছে। যার কারণে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের মনে আতঙ্ক বাসা বাঁধে। আতঙ্ক বিরাজ করায় লেখাপড়ায় মনযোগ হারাচ্ছে বলে মনে করেন বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। নতুন ভবন নির্মাণ করা না হলে যেকোনো সময় ভবন ধসে বড় ধরণের হতাহতের ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। 

বিদ্যালয়ের অফিস সূত্রে জানা যায়, ১৯৭১ সালে সখিপুর, কামটা, কাজিমহল্যা, ঈদগাহ, তিলকুড়াসহ কয়েটি গ্রামের সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের সুশিক্ষিত করতে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করা হয়। প্রতিষ্ঠার পর থেকে বিদ্যালয়েল লেখাপড়ার মান খুব সন্তোষজনক। কয়েক যুগের স্কুলে বর্তমানে প্রায় ৫'শ ছাত্রছাত্রী অধ্যয়নরত আছে। একইসাথে শিক্ষক-শিক্ষিকা রয়েছে ১৯ জন শিক্ষক ও ৪জন শিক্ষিকা রয়েছেন।

এখানে মাধ্যমিক শিক্ষার পাশাপাশি কারিগরিক (ভোকাশেনাল) বিভাগ ও চালু রয়েছে। ১৯৯৩-৯৪ সালে ফ্যাসলিটিজ ডিপাডমেন্ট কর্তৃক একটি নতুন ভবন তৈরি হয়। এরপর সরকারি ভাবে কোন ভবন নির্মাণ করা হয় বিদ্যালয়টিতে। 

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ভবনটির অধিকাংশ স্থানে ফাটল। কোথাও কোথাও ছাদের অংশ ভেঙ্গে পড়ছে। প্রধান শিক্ষককের জন্য নেই আলাদা রুম। রুম সংকটের জন্য নেই ছাত্রছাত্রীদের জন্য কমনরুম। যে সব রুমগুলো প্রশস্ত না হওয়ায় গ্রুপ ক্লাস করতে যেয়ে ঠিকমত জায়গা হয় না শিক্ষার্থীদের। ডিজিটাল মাল্টিমিডিয়ায় ক্লাস নেওযার ব্যবস্থা থাকলেও নেই পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধা। রয়েছে বিদ্যালয়ের চত্বরে ফুল ও ফলের বাগান। ম্যানেজিং কমিটির দক্ষ মনিটরিং ব্যবস্থা। 

বিদ্যালয়ের ৯ম ও ১০ম শ্রেণীর ছাত্রছাত্রীরা জানিয়েছেন, আমরা ক্লাস করি জীবনের ঝুঁকি নিয়ে। মনে হয় কখন যেন বিল্ডিং ধসে পড়ছে। সরকারের কাছে দাবি আমাদের বিদ্যালয়ে নতুন ভবন তৈরি করে দেন তাহলে আমরা নিরাপদে লেখাপড়া করতে পারব।  

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শেখ তহিরুজ্জামান জানিয়েছেন, বর্তমানে পুরাতন ভবনে একেবারে ক্লাস নেওয়ার অনুপযোগী হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু তার পরেও রুম সংকট থাকায় বাধ্য হয়ে সেখানে ক্লাস করাতে হচ্ছে।

তবে দুঃখের বিষয় হল যে, ১৯৭১ সালে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। এরপর ফ্যাসলিটিজ বিভাগের ছাড়া আর কোন বিভাগ থেকে ভবন না পাওয়ায় পুরাতন ভবনে খুব ঝুঁকিতে ক্লাস করাতে হচ্ছে। জরাজীর্ণ ওই ভবনের ছাদের প্লাস্টার বিভিন্ন সময়ে খসে পড়ছে। ইতোপূর্বে উপজেলা শিক্ষা অধিদফতরের কর্মকর্তারও পরিদর্শন করেছেন ঝুঁকিপূর্ণ ভবনটি। সংশ্লিষ্ট বিভাগ আমাদের যদি একটি নতুন ভবন বরাদ্ধ প্রদান করেন তাহলে আমরা শিক্ষার্থীদের নিরাপদে পাঠদান করতে পারব।  

বিদ্যালয়েল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও সখিপুর ইউপি চেয়ারম্যান শেখ ফারুক হোসেন রতন বলেন, সখিপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে নতুন ভবনের খুবই প্রয়োজন। এখানে ঝুকিঁপুর্ণ ভবনে ছেলেমেয়েরা ক্লাস করছে। আমি নিজেই কিছু বরাদ্ধ দিয়ে ফাটলের কিছু অংশের প্লাস্টার করে দিয়েছি, কিন্তু সেটিও নিরাপদ নয়। তাই এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ নজর দেয়ার দাবি জানাই। 

এবিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল হাই বলেন, আমরা বিষয়টি দেখছি। তাছাড়া প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি। 

এদিকে, দুর্ঘটনা এড়াতে দ্রুত ভবনটি ভেঙ্গে নতুন ভবন করা প্রয়োজন বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। তাছাড়া ব্যবস্থা নিতে শিক্ষামন্ত্রী বিষয়টি নজর দিলে বড় ধরণের দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা হতে পারে বলে ধারণা সকলের।  
 

Bootstrap Image Preview