পেশায় ভুট্টা বিক্রেতা মহম্মদ ফায়াজ। ভু্ট্টা বিক্রির পাশাপাশি নাইটগার্ডের কাজও করেন। আর তা করেই নিজেই বানিয়ে ফেলেছেন ছোট বিমান।
অভাবের তাড়নায় পড়াশোনা ছাড়তে বাধ্য হন মহম্মদ ফায়াজ। ছোটবেলা থেকেই বিমানচালক হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন তিনি। ফায়াজ বলেন, ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক চ্যানেলের এয়ার ক্র্যাশ ইনভেস্টিগেশন সিরিজটি দেখে বিমান নির্মাণের অনুপ্রেরণা পান তিনি। অনুষ্ঠানটি দেখে তার আকাঙ্ক্ষা জাগায় তিনি নিজের হাতে বিমান তৈরির পরিকল্পনা করেন।
ফায়াজ তার উপার্জন থেকে অর্থ বাঁচান এবং প্লেন নির্মাণের খরচ যোগাতে একটি ক্ষেত বিক্রি করেন। এরপরও তার প্রয়োজনীয় অর্থ সংগৃহীত হয়নি। সবশেষে জমি বিক্রির পরও বিমান তৈরির পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য ব্যাংক থেকে ঋণ নেন।
এক বছর আগে তিনি নিজের বিমান তৈরির কাজ শুরু করেন। অন্যের থেকে কোনও রকম প্রযুক্তিগত সহায়তা ছাড়াই তিনি তৈরি করে ফেলেন একটি আস্ত বিমান।
গত সোমবার ফায়াজ তার তৈরি বিমান পরীক্ষা করার জন্য প্রস্তুতি নেন। তিনি বিমানটি একটি দীর্ঘ রাস্তায় নিয়ে গেলেন যেখানে তার উড়ানের পথে কোনো বাধা ছিল না। অবশেষে বিমানটি রাস্তার ওপর থেকে উড়ে গেল।
প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, তার সাফল্য দেখতে ৫ শ’র ও বেশি মানুষ সেখানে ছিল। মোহাম্মদ ফাইয়াজ অনেকবার মাঠের আকাশে চক্কর দেন এবং পুলিশ এসে তাকে গ্রেফতারের আগে সফলভাবে সমতলে অবতরণ করেন।
ফায়াজ বলেন, ‘আমি কঠোর পরিশ্রম করে বিমান তৈরি করেছি। আমার বিমান ১ হাজার ফুট পর্যন্ত উড়ে যেতে পারে’।
তিনি তার কৃতিত্বের জন্য গর্বিত ছিলেন, কিন্তু তার গর্ব তাকে মুক্তি দেয়ার জন্য পুলিশকে সন্তুষ্ট করার জন্য যথেষ্ট ছিল না।
ফায়াজের বিরুদ্ধে অভিযোগে অনুমতি ছাড়া বিমান নির্মাণ ও ওড়ানো অন্তর্ভুক্ত। পুলিশ জানায়, বিমানটি ওড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিতে তিনি ব্যর্থ হন।
বিমান বানিয়ে ফায়াজ দেশের অসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানান। কিন্তু অনুমতি দেওয়ার পরিবর্তে পুলিশ গত ৩১ মার্চ তাঁর বানানো বিমানটি বাজেয়াপ্ত করে। কিন্তু বিষয়টি জানাজানি হওয়ায় গত ৪ এপ্রিল তাঁর বানানো বিমানটি ফিরিয়ে দেয় পুলিশ। পাকিস্তানের অসামরিক বিমান চলাচল ফায়াজের তৈরি বিমানের ভূয়সী প্রশংসা করেছে। তাঁদের কাছ থেকে উড়ানের ছাড়পত্র পাওয়ার আশায় এখনও দিন গুনছেন ফায়াজ।
ওয়েবসাইট অনুযায়ী বিমানটির ওজন দাঁড়ায় ২২ কেজি এবং এতে খরচ হয় ৭২৫ ডলার (বাংলাদেশি প্রায় ৬১ হাজার টাকা)।